বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন: আঞ্চলিক যোগাযোগ ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন মাইলফলক
গত বছর ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা যুক্ত হয় নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল তথা গোটা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মিত দেশের বৃহত্তম সেতুটি। ১০ অক্টোবর চালু হওয়া পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ বাংলাদেশে চীনের ‘এক পথ এক অঞ্চল উদ্যোগ’-বিআরআইয়ের একটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প।
বাংলাদেশে চীনের বিআরআইয়ের আরেকটি মাইল ফলক প্রকল্প সদ্য চালু হওয়া বঙ্গবন্ধু টানেল। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সড়ক টানেলটি শনিবার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার সকাল থেকেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মিত টানেলটি।
পদ্মা সেতু যেমন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে তেমনি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জন্য অমিত সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
৩.৩১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু টানেলটি নির্মাণ বাংলাদেশ ও চীন উভয় সরকারের কাছেই পূর্বাপর গুরুত্ব পেয়েছে। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং তার ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যৌথভাবে টানেলটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। টানেল নির্মাণ করেছে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি মূল প্রকল্প ব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকার বেশিরভাগ অর্থায়ন করেছে চীন।
২৮ অক্টোবর টানেলটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্যও চীনের প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো অভিনন্দন বার্তায় সে কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন প্রেসিডেন্ট সি। টানেল চালু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান চীনের প্রেসিডেন্ট। তার সেই অভিনন্দন বার্তা অনুষ্ঠানে পড়ে শোনান এবং শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। আর টানেল নির্মাণে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য চীনের প্রেসিডেন্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।