বাংলা

বিদেশে চীনের বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও প্রসঙ্গকথা

CMGPublished: 2023-09-22 16:08:05
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

সেপ্টেম্বর ২২: গত ২১ সেপ্টেম্বর চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয় যে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত, চীনের বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৮.৮ শতাংশ। ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, চীনে বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত এন্টারপ্রাইজগুলোকে চীনের উন্নয়নের সুফল পেতে সাহায্য করার নীতি অব্যাহত রাখা হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হ্য ইয়া তুং ব্রিফিংয়ে বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত চীনের বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং সম্পূর্ণ বিদেশী প্রকল্পের টার্নওভারে টেকসই বৃদ্ধির ধারা বজায় ছিল।

"বিদেশে চীনের অ-আর্থিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ ছিল ৫৮৫.৬১ বিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮.৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে, 'বেল্ট অ্যান্ড রোড' উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে চীনের অ-আর্থিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ ছিল ১৪০.৩৭ বিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২.৫ শতাংশ বেশি। বিদেশী চুক্তিকৃত প্রকল্পের টার্নওভার ছিল ৬৪৮.৬২ বিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের চেয়ে ৬.১ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে, 'বেল্ট অ্যান্ড রোড' উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে চীনা উদ্যোগের টার্নওভার জাতীয় চুক্তির প্রকল্পের পরিমাণ ছিল ৫২৯.৫২ বিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের তুলনায় ৪.৮ শতাংশ বেশি।"

হ্য ইয়াং তুং জানান, চলতি বছরের শুরু থেকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সক্রিয়ভাবে "চীনে নিয়ে আসা” এবং "চীনের বাইরে যাওয়া"—এই দুটি ধারণার সংমিশ্রণের মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রচার কার্যক্রমের একটি সিরিজ সংগঠিত ও পরিচালনা করেছে। প্রতিক্রিয়ার বিচার করলে, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এর প্রতি গভীর মনোযোগ দিচ্ছে এবং অংশগ্রহণের জন্য তাদের উত্সাহ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের জন্য এতে কিছু "অনুকূল" ও কিছু "আশাবাদী" উপাদান রয়েছে।

“অনুকূলের দিক হল, এই ইভেন্টটি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য একটি দরকারী প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে; ব্যাপকভাবে চীনের সম্পদ, শিল্পের ভিত্তি ও ব্যবসায়িক পরিবেশ প্রদর্শন করে; এবং সারা বিশ্ব থেকে বিনিয়োগকারীদের চীনে প্রবেশ করতে, চীনকে বুঝতে এবং এখানে বিনিয়োগ করার জন্য মসৃণ চ্যানেল সরবরাহ করে। “আশাবাদী” দিক হল, চীনের অতি-বড় মাপের বাজার এবং উন্মুক্তকরণের নতুন সুযোগ, চীনের সম্পূর্ণ শিল্পচেইন ও সরবরাহ-চেইন, এন্টারপ্রাইজগুলোর জন্য একটি ভালো উত্পাদন ভিত্তি প্রদান করে। তাই তাঁরা চীনে শিকড় গাড়তে এবং বিনিয়োগ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক।"

হ্য ইয়া তুং বলেন, পরবর্তী পদক্ষেপে "চীন বিনিয়োগ" ব্র্যান্ড তৈরি করা এবং "চীন বিনিয়োগ বর্ষ"-এর আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রম সংগঠিত করা হবে।

"উদাহরণস্বরূপ, ষষ্ঠ চীনের আমদানি মেলা আয়োজনকালে "চীন বিনিয়োগ বর্ষ" শীর্ষসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, বিদেশী বিনিয়োগ প্রচার কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজন করা হয়, বিদেশী অর্থায়নের উদ্যোগগুলোকে চীনের বাজার গভীরভাবে অন্বেষণ করতে এবং এর লভ্যাংশ পেতে সহায়তা করা হয়।"

চলতি বছরের পয়লা আগস্ট থেকে চীন গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়ামের ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। হ্য ইয়া তুং বলেন:

"বর্তমানে, আইন ও প্রবিধান অনুসারে পর্যালোচনা করার পরে, আমরা প্রবিধান মেনে চলা বেশ কয়েকটি রপ্তানি আবেদন অনুমোদন করেছি এবং সংশ্লিষ্ট উদ্যোগগুলো দ্বৈত-ব্যবহারের আইটেমগুলোর জন্য রপ্তানি লাইসেন্স পেয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী অন্যান্য লাইসেন্সের আবেদনগুলোও পর্যালোচনার কাজ চালিয়ে যাবে এবং লাইসেন্সিং সিদ্ধান্ত নেবে।"

একই দিনের প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র হ্য ইয়াং তুং আরও বলেন, চলতি বছর থেকে চীন ও অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় তাদের বাণিজ্য-বিরোধ সঠিকভাবে সমাধানের জন্য সব স্তরে গভীরভাবে আলোচনা করেছে। অস্ট্রেলিয়া বার্লি ও ওয়াইনে অ্যান্টি-ডাম্পিং এবং কাউন্টারভেইলিং ব্যবস্থা নিয়ে ডব্লিউটিও-র বিরোধ মামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উইন্ড টাওয়ার, রেলওয়ের চাকা এবং স্টেইনলেস স্টিল সিঙ্কের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্টি-ডাম্পিং ও কাউন্টারভেইলিং ব্যবস্থার পাশাপাশি চীনের বিরুদ্ধে তার বাণিজ্য প্রতিকার তদন্তে অস্ট্রেলিয়ার অনুপযুক্ত অনুশীলন সম্পর্কে চীন তার গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উভয় পক্ষ এর আগে বহুবার আলোচনা করেছে এবং সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে দ্রুত অন্যান্য বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সক্রিয়ভাবে সম্মত হয়েছে। হ্য ইয়া তুং বলেন:

"চীনের ওয়াইন শিল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এবং এই তদন্ত এক হাজারটিরও বেশি চীনা ওয়াইন কোম্পানির সাথে জড়িত। আমরা অস্ট্রেলিয়ান পক্ষের সাথে বার্লি মামলার বিরোধ নিষ্পত্তির ভিত্তিতে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতা আরও বাড়াতে, পরস্পরের স্বার্থ রক্ষা করতে, এবং ওয়াইন মামলার সমাধান ও তিনটি পণ্যে অ্যান্টি-ডাম্পিং ও কাউন্টারভেইলিং ব্যবস্থার একটি 'প্যাকেজ নিষ্পত্তি’ করতে ইচ্ছুক। একই সময়ে, চীন ও অস্ট্রেলিয়া উভয়ই ডাব্লিউটিও-এর সদস্য, এবং উভয়ই নিয়ম-ভিত্তিক বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করে। চীন বহুপাক্ষিক চ্যানেলের মাধ্যমে উপরে উল্লিখিত সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য উন্মুক্ত মনোভাব পোষণ করে যাবে।"

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn