মার্কিন কর্মকর্তাদের সৌদি আরব সফর ও রিয়াদ-তেহরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গ
আস্থা একদিনে নষ্ট হয় না। মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নতুন করে চিন্তা করা। তাকে বুঝতে হবে যে, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির উন্নতি রাতারাতি ঘটেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে বাইরের শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান একচেটিয়া। আধিপত্যবাদ রক্ষার জন্য দীর্ঘসময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি ও সহিসংতা জিইয়ে রেখেছে দেশটি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ‘তেলের বিনিময়ে নিরাপত্তা’ শীর্ষক সম্পর্ক শিথিল থেকে শিথিলতর হয়েছে। মার্কিন সুদের হার বৃদ্ধির ফলে মিসর ও লেবাননসহ বিভিন্ন দেশের ক্ষতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মদদে চলমান রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষ মিসরসহ বিভিন্ন দেশের খাদ্যশস্য আমদানিতে সমস্যা সৃষ্টি করছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো উপলদ্ধি করছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল থাকা নিরাপদ নয়; নিজেদের ভাগ্য নিজেদের হাতেই গড়তে হবে।
২০২২ সালে ‘আরবনীতি ও গবেষণাকেন্দ্র’ ১৪টি আরব দেশের ওপর একটি জরিপ চালায়। এতে ৭৮ শতাংশ উত্তরদাতারা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য সর্বোচ্চ হুমকি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং এতদঞ্চলের অস্থিতিশীলতার উত্সও যুক্তরাষ্ট্র।
মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে অজনপ্রিয় চরিত্রে পরিণত হবার পর, মার্কিন সরকার একের পর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সৌদি আরবে পাঠাচ্ছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ঠেকানো এবং সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল করার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে নিজের অবস্থান দৃঢ় করা। এই প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র কতোটা সফল হবে বলা মুশকিল।