বাংলা

বিশ্ব বিনিয়োগ, বাণিজ্য উন্নয়ন শীর্ষসম্মেলন বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত

CMGPublished: 2023-05-25 14:41:11
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মে ২৫: গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ব বিনিয়োগ, বাণিজ্য উন্নয়ন শীর্ষসম্মেলন-২০২৩। এবারের শীর্ষসম্মেলনের থিম হলো ‘আস্থা দৃঢ় করে সহযোগিতার মাধ্যমে পারস্পরিক কল্যাণ বাস্তবায়ন এবং সম্মিলিতভাবে উন্মুক্ত বৈশ্বিক বিশ্ব নির্মাণ করা’। বেশ কয়েকজন বিদেশি নেতা, গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, বাণিজ্য উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাসহ বিশ্বের রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও বিদগ্ধ সমাজের ব্যক্তিবর্গ এবং বিশ্বের ৫০০টি শক্তিশালী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলগণ এতে অংশ নিয়ে সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।

বর্তমানে শতাব্দীর অদেখা বিশ্বের বড় পরিবর্তনগুলো দ্রুত গতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতি কেবল মহামারী পরবর্তী পুনরুদ্ধারের জরুরি চাহিদার মুখোমুখি নয়, বরং একাধিক চ্যালেঞ্জ এবং সংকটের সংমিশ্রণের মুখোমুখি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়েছে এবং কিছু দেশ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস শোয়াব শীর্ষসম্মেলনে এক ভিডিও বক্তৃতায় সহযোগিতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।

‘চলতি বছরের শীর্ষসম্মেলনের থিমকে কেন্দ্র করে আমি বলতে চাই, সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এবং পারস্পরিক কল্যাণ বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে। আমাদের স্বার্থ ভিন্ন হলেও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আরও প্রয়োজন। এবং সংকটকে সুযোগে রূপান্তরিত করা এবং পারস্পরিক কল্যাণ ও সকলের উপকারিতা বাস্তবায়ন করা উচিৎ।’

নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের গভর্নর এবং ব্রাজিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডিলমা রুসেফ মনে করেন, কিছু দেশ একতরফাবাদ এবং সুরক্ষাবাদ অনুসরণ করে এবং তথাকথিত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার নীতির মাধ্যমে চীনকে দমন করার চেষ্টা করে। তাদের আচরণ বর্তমান বিশ্বায়নের জন্য প্রধান হুমকি।

তিনি বলেন,

‘একতরফাভাবে শুল্ক বাড়ানো এবং চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্প চেইনকে ব্যাহত করার জন্য চিপ অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট পাস করা কেবলমাত্র বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনকে ব্যাহত করবে এবং বিশ্বায়নের বিভক্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার নীতি নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে এবং তাতে উন্নত দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেকেই চীনকে দমনের এহেন জিরো-সাম মনোভাবের সফলতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ এবং একতরফা নীতির মুখোমুখি হয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলো এবং উদীয়মান অর্থনৈতিক সত্তাগুলো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার এবং লং আর্ম জুরিশডিকশন কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে না। এসব কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়নে আরও বেশি সমস্যা এবং অসমতা সৃষ্টি করবে।’

চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে চীনের জিডিপি গত বছরের অনুরূপ সময়ের তুলনায় ৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এপ্রিল মাসের পর ভোগ, বিনিয়োগ, এবং আমদানি ও রপ্তানিসহ প্রধান অর্থনৈতিক সূচক অব্যাহতভাবে ইতিবাচক গতি বজায় রেখেছে। উদীয়মান চালিকাশক্তি বেড়েই চলছে এবং অতি বড় মাপের বাজারের সুবিধা অবিরামভাবে জোরদার হচ্ছে।

শীর্ষসম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের (সিসিপিআইটি) চেয়ারম্যান রেন হোংবিন বলেন, চীন সরকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বেগবানে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক আর্থ-বাণিজ্যের বিনিময় বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে সক্রিয় অবদান রেখেছে সিসিপিআইটি।

এবারের শীর্ষসম্মেলনে বেইজিং প্রস্তাব প্রকাশিত হয়েছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে পুনরুদ্ধার, সৃজনশীলতার মাধ্যমে উন্নয়ন বেগবান, সবুজ টেকসই উন্নয়ন এবং শিল্প ও বাণিজ্য মহলের অনন্য ভূমিকা পালনসহ মোট ৫টি প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

লিলি/এনাম

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn