বাংলা

চীনের সঙ্গে সহযোগিতা আরও গভীর করবে আইএইএ

CMGPublished: 2023-05-24 14:29:53
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মে ২৪: চীনের জাতীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থার আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মহাসচিব রাফায়েল গ্রোসি এখন চীন সফরে রয়েছেন।

পাঁচদিনের (২২ থেকে ২৬ মে) এ সফরে তিনি চীনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শন করবেন। সংস্থাটির দায়িত্ব নেয়ার পর এটি গ্রোসি’র প্রথম চীন সফর।

গত ২২ মে চীনের গণমাধ্যমের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি চীনের সঙ্গে সহযোগিতা গভীরতর করা এবং পারমাণবিক ক্ষেত্রে বিশ্ব উন্নয়ন প্রস্তাব ও বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাবের বাস্তবায়নকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন।

এবারের সফরে গ্রোসি চীনের জাতীয় পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে ‘সহযোগিতা করে আশার আলো চালু করা—ক্যান্সারে আক্রান্তদের যত্ন নেওয়া’ চুক্তি।

গ্রোসি বলেন, উন্নয়নশীল বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোতে রেডিওথেরাপিসহ পারমাণবিক ওষুধের চাহিদা এবং সরবরাহের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান ব্যবধান রয়েছে। তাই তিনি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দফতরে ‘আশার আলো’ উদ্যোগটি চালু করেছিলেন। এর লক্ষ্য হলো রেডিওলজিক্যাল ডায়াগনোসিস এবং চিকিৎসা ব্যবহারসহ নিউক্লিয়ার মেডিসিন প্রযুক্তি দিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষমতা উন্নত করা।

গ্রোসি এই প্রকল্পে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সাথে সহযোগিতা গভীর করতে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের পারমাণবিক প্রযুক্তি দিয়ে চিকিৎসার মান উন্নত করতে যৌথভাবে সহায়তা করার জন্য চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

‘সহযোগিতা অনেকভাবে হতে পারে। যেমন: যৌথ প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম প্রদান করা বা রেডিওলজিক্যাল রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য প্রধান সরঞ্জাম দান করা এবং চীনা বিশেষজ্ঞ, পণ্ডিত ও চিকিৎসাকর্মীদের সরাসরি ‘আশার আলো’ প্রকল্পে অংশগ্রহণ করা। আমি এই বিষয়ে চীনের উদারতা এবং মনোযোগের জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’

গ্রোসি চীনের উত্থাপিত বিশ্ব উন্নয়ন প্রস্তাব ও বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাবের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং পরমাণু শক্তির উন্নয়ন ও পরমাণু প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যের সক্রিয় মূল্যায়ন করেছেন। চীনের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা গভীরতর করার প্রত্যাশায় রয়েছেন তিনি।

গ্রোসি বলেন, আগামী বছর হবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থায় চীনের যোগদানের ৪০তম বর্ষ। গত ৪০ বছরে চীনের পারমাণবিক খাতের উন্নয়ন অনেক দ্রুত হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের জলবায়ু উষ্ণ হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে অনেক দেশ পারমাণবিক শক্তি উন্নয়ন করতে খুব আগ্রহী এবং তাতে আন্তর্জাতিক সমাজের সমর্থনও প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে চীন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা গভীরতর করতে পারে।

‘আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা চীনের মতো দেশগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। অন্যান্য যেসব দেশের প্রযুক্তি এবং সক্ষমতা রয়েছে- তাদের পারমাণবিক শক্তি বিকাশে সহায়তা করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা আজ যে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি তার মাধ্যমে আমরা সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে স্পষ্ট করবো এবং চীনা বিশেষজ্ঞরা অন্যান্য দেশকে পারমাণবিক শক্তি বিকাশে সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সাথে কাজ করবেন। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা এবং চীনের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক পারস্পরিক কল্যাণের। আমি আশা করি, এই সম্পর্ক গভীরভাবে বিকশিত হবে।’

জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারমাণবিক দূষিত বর্জ্যপানি সমুদ্রে নির্গমনের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাপানের প্রতিবেশী দেশগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ প্রসঙ্গে গ্রোসি বলেন, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা সব দেশের উদ্বেগগুলো বোঝে। তাই বর্জ্যপানির নিষ্কাশন নিয়ে সার্বিক মূল্যায়ন এবং স্বাধীন তত্ত্বাবধান করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন,

‘সমুদ্রে বর্জ্যপানি ফেলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা প্রয়োজনীয় পরিবেশগত বিশ্লেষণ এবং জাপানের গৃহীত প্রযুক্তিগত উপায় অধ্যয়ন করেছে। তাছাড়া, সমগ্র প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জাপানি নিয়ন্ত্রক সংস্থার ক্ষমতা মূল্যায়ন করেছে। আমরা বিভিন্ন দেশের উদ্বেগগুলোকে গুরুত্ব দিই এবং প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিক্রিয়া জানাই।’

লিলি/এনাম

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn