বাংলা

মহামারীর বিরুদ্ধে তিন বছরের লড়াইয়ের মাধ্যমে চীন বিশ্বের জন্য যা করেছে: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2023-01-20 17:04:01
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

১৯ জানুয়ারি ছিল নভেলকরোনাভাইরাস সংক্রমণ অবস্থাকে ‘বি-শ্রেণীতে’ অবনমন করার ১১তম দিন। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, সারা দেশের সমস্ত প্রদেশের হাসপাতালের জ্বর ক্লিনিক, জরুরী বিভাগ এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া গুরুতর রোগীর সংখ্যা আগেই শিখরে পৌঁছেছে। ফলে মানুষ আরও প্রশান্তির সাথে বসন্ত উত্সবকে স্বাগত জানাতে পারবে।

বর্তমানে গোটা চীনে ধীরে ধীরে অতীতের মতো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসছে। অনেক চীনা পর্যটকও বিদেশ ভ্রমণ করছেন। এই সবই চীনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মহামারী প্রতিরোধের কারণে সম্ভব হচ্ছে। চীন মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ সাফল্য পেয়েছে।

গত তিন বছরে চীন সরকার প্রতিটি চীনা নাগরিকের জীবন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। ১৪০ কোটিও বেশি জনসংখ্যার একটি বড় দেশ হিসাবে এই অর্জন মহামারীর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়েও ইতিবাচক অবদান। একই সঙ্গে সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী চীন তার মহামারী প্রতিরোধক-ব্যবস্থা সমন্বয় করেছে। যখন শক্তিশালী প্যাথোজেনিসিটিসহ মূল স্ট্রেন এবং ডেল্টা মিউট্যান্ট স্ট্রেন বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে পড়ে, তখন চীন শক্তিশালী মহামারী প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করে, যা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মূল্যবান সময় দিয়েছে। সম্প্রতি ভাইরাসের পরিবর্তন, মহামারী পরিস্থিতি এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কাজের ব্যাপক মূল্যায়নের ভিত্তিতে, চীন সময়মত মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাকে সুবিন্যস্ত করে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পরিচালক বোর্জে ব্রেন্ডে মনে করেন, চীনের মহামারী প্রতিরোধনীতির সমন্বয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে এবং বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়ক প্রমাণিত হবে।

গত তিন বছরে চীন প্রকাশ্যে ও স্বচ্ছভাবে মহামারীসংক্রান্ত তথ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে ভাগ করেছে, মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং ভ্যাকসিন ও টেস্টিং রিএজেন্টের উন্নয়নের জন্য বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রদান করেছে। যথাসময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে মহামারী সম্পর্কে রিপোর্ট করা, প্যাথোজেন শনাক্ত করা, ভাইরাসের জিন সিকোয়েন্সিং করা, রোগ নির্ণয় ও চিকিত্সা পরিকল্পনা এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা প্রকাশ করা—এ সবগুলো মহামারীর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে চীনের দায়িত্বশীল কার্যকলাপের প্রতিফলন। অসম্পূর্ণ পরিসংখ্যান অনুসারে, গত তিন বছরে চীন ডাবলিউটিও’র সাথে ৬০টিরও বেশি প্রযুক্তিগত বিনিময় করেছে। গত এক মাসে চীন ডাবলিউটিও’র সঙ্গে পাঁচটি প্রযুক্তিগত আদান-প্রদান করেছে। দু’পক্ষের কর্মকর্তাদের মধ্যে একবার ফোনালাপও হয়েছে। ডাবলিউটিও’র মহাপরিচালক তেদ্রোস আদহানম সম্প্রতি মহামারী মোকাবেলায় চীনা সরকারের প্রচেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে দীর্ঘমেয়াদী প্রযুক্তিগত আদান-প্রদান আর মহামারীসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত ভাগ করার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

চীন ১৫০টিরও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ২২০ কোটি ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে, ১৫৩টি দেশ ও ১৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কয়েক’শ বিলিয়ন অ্যান্টি-মহামারী সামগ্রী সরবরাহ করেছে, ৩৪টি দেশে ৩৮টি অ্যান্টি-মহামারী চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ গ্রুপ পাঠিয়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী মহামারী মোকাবিলায় চীনের অবদান।

গত তিন বছরে মহামারীর আঘাত এবং একতরফাবাদ ও সংরক্ষণবাদের উত্থানের মুখে, চীন সক্রিয়ভাবে তার বৈদেশিক উন্মুক্তকরণকে প্রসারিত করেছে এবং কার্যকরভাবে বিশ্বব্যাপী শিল্প ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে। ২০২২ সালে চীনের পণ্যবাণিজ্যে আমদানি ও রপ্তানির মোট মূল্য ৪০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে, যা ২০২১ সালের অনুরূপ সময়ের চেয়ে ৭.৭ শতাংশ বেশি।

মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিগত তিন বছরে বিশ্বে চীনের অবদান সবার কাছে স্পষ্ট। কিছু পশ্চিমা রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম এটিকে যতই ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করুক না কেন, সত্যকে তারা মুছে ফেলতে পারবে না। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নভেলকরোনাভাইরাস মহামারী এখনও ছড়াচ্ছে। শুধুমাত্র একসাথে কাজ করলেই দ্রুত মহামারীর ধোঁয়াশা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। চীন মহামারীর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে আগের মতো সহযোগিতা করে যাবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে ‘চীনা অবদান’ রাখবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn