স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল: বাংলাদেশ-চীন যৌথ উদ্যোগের আরেকটি উজ্জ্বল প্রতীক
কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বহুপ্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। চীনের অর্থায়নে নির্মিত দুই টিউববিশিষ্ট এ টানেলের একটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় আয়োজন করা হয় উদযাপনী অনুষ্ঠানের।
শনিবার রাজধানী ঢাকা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ উদযাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামও যোগ দেন আনন্দঘন এ উদযাপনী অনুষ্ঠানে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের পর বাংলাদেশের আরেকটি স্বপ্নের মেগা-প্রকল্প এই বঙ্গবন্ধু টানেল। দুই টিউব বিশিষ্ট এ টানেলের একটি টিউবের পূর্তকাজ সম্পন্ন হওয়াকেও তাই উদযাপনের মধ্য দিয়ে স্মরণীয় করে রাখলো দু’দেশ। বাংলাদেশ ও চীন দু’দেশের কাছেই এ টানেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। বস্তুত বাংলাদেশ-চীন যৌথ উদ্যোগের একটি প্রতীক হিসেবেই দেখা হচ্ছে এ টানেলটিকে।
শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় পানির নিচ দিয়ে নির্মাণ করা এটিই প্রথম টানেল। চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড নির্মাণ করছে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি। টানেল নির্মাণের প্রধান যন্ত্র টিবিএম মেশিন, টিউবের সেগমেন্টসহ ৯০ শতাংশ উপকরণ আমদানি করা হয়েছে চীন থেকে। ২৫ নভেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা।
কর্ণফুলী নদীর একপাড়ে শিল্প এলাকা আনোয়ারা আর অন্যপাশে পতেঙ্গা। এ টানেলের মাধ্যমে এই দুই পাড়কে একত্রিত করার ফলে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থারই কেবল উন্নয়নই হবে তা নয়, বরং এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পদক্ষেপে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। টানেলটি চালু হল জিডিপিতে শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।