জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর উচিত প্রতিশ্রুতি পূরণ করা
২০০৯ সালের কোপেনহেগেন জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করার খাতে ব্যয় করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি। তাই এবারের কপ-২৭ সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
এমন পরিস্থিতিতে, উন্নত দেশগুলো অবশেষে ক্ষতিপূরণ তহবিল স্থাপনের ব্যাপারে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে একমত হয়েছে। তবে, মনে রাখতে হবে যে, এটা কোনো দয়া নয়, বরং দায়।
পাশাপাশি দেখতে হবে, কপ-২৭ এখনও তহবিলের প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো রোডম্যাপ তৈরি করেনি। কোন কোন দেশ তহবিলে অর্থ দেবে, তহবিল কিভাবে পরিচালিত হবে—ইত্যাদি বিষয়ে কোনো বিস্তারিত সিদ্ধান্ত হয়নি। এর সঙ্গে উন্নত দেশগুলো এই কাজের ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহী নয়। তাই, এই তহবিল ভালোভাবে কাজ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকের।
বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, চীন সবসময় জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চীন প্রতিবছর গড়ে ৩ শতাংশ জ্বালানি ভোগের মাধ্যমে বছরে গড়ে ৬.৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়ন করছে। ২০২১ সালে চীনের কার্বন ডাইঅক্সাইট নির্গমন ২০১২ সালের তুলনায় ৩৪.৪ শতাংশ কমেছে, যা ৩.৭ বিলিয়ন টন কার্বন ডাইঅক্সাইটের সমান। চীনে পুণর্ব্যবহার্য জ্বালানিতে বরাদ্দ ৩৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ।
এবারের সম্মেলনে চীনা প্রতিনিধিদল সার্বিক ও গভীরভাবে শতাধিক আলোচ্য বিষয়ে অংশ নিয়েছে। দৃঢ়ভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা করছে চীন। এ ছাড়া, সম্মেলনে সুফল অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
কোনো কোনো দেশ যেখানে সংঘাতে লিপ্ত, জ্বালানি সংকট যখন বিশ্বব্যাপী, তখন চীন স্থায়ীভাবে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। চীনা প্রতিনিধি বলেছেন, চীনের সরকার ২০২০ সালে নির্গমন কমানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ভিত্তিতে, ২০৩০ সালের আগে ‘সর্বোচ্চ নির্গমন’ ও ২০৬০ সালের আগে ‘কার্বন-নিরপেক্ষতা’ অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ওয়ালস্ট্রিটের খবর অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় চীনের কার্যকর ব্যবস্থা প্রতিশ্রুতির চেয়েও ভালো।