বাংলা

আমাদের যে ধরণের বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রয়োজন ও চীনা দৃষ্টিভঙ্গি

CMGPublished: 2022-11-17 15:19:37
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

নভেম্বর ১৭: গতকাল (বুধবার) বিকেলে জি-২০ গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের ১৭তম শীর্ষসম্মেলন ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে সমাপ্ত হয়েছে। সম্মেলন চলাকালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন এবং ‘উন্নয়ন’-কে মূল শব্দ হিসেবে নিয়ে, জি-২০ গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রতি আরও সহনশীল, অভিন্ন কল্যাণকর ও নমনীয় বৈশ্বিক উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। এতে ব্যাপক সাড়াও পাওয়া গেছে।

শীর্ষসম্মেলনে গৃহীত ঘোষণায় চীনের প্রস্তাব প্রতিফলিত হয় এবং বিশ্বের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা চালানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত হয়। দ্রুতগতিতে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়ন এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে অভিন্ন সমৃদ্ধি বাস্তবায়ন করা উচিত বলে ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

জি-২০ গোষ্ঠী হলো আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রধান ফোরাম। এতে বিশ্বের প্রধান উন্নত অর্থনৈতিক সত্তা ও উদীয়মান বাজার অর্থনৈতিক সত্তাগুলো অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে শতাব্দীর পরিবর্তন এবং মহামারী একে অপরের সাথে জড়িয়ে আছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির দুর্বলতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মানবজাতির উন্নয়ন গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সম্প্রতি ২০২৩ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা ২.৭ শতাংশে নামিয়ে দিয়েছে, যা জুলাই মাসে করা পূর্বাভাসের চেয়ে ০.২ শতাংশ কম। জি-২০ গোষ্ঠীর বালি শীর্ষসম্মেলনের থিম ‘অভিন্ন পুনরুদ্ধার এবং শক্তিশালী পুনরুদ্ধার’-এও জনগণের অভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে।

প্রশ্ন হচ্ছে: বর্তমানে আমাদের কী ধরণের উন্নয়ন প্রয়োজন? শীর্ষসম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সি আরও সহনশীল, অভিন্ন কল্যাণকর ও নমনীয় বৈশ্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক জনমত এই যে, তাঁর উত্থাপিত ৩-দফা প্রস্তাব খুবই সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ।

মানবজাতির একটিই পৃথিবী আছে। এখানে ঐক্য হলো শক্তি এবং বিচ্ছিন্নতার কোনো পথ নেই। প্রেসিডেন্ট সি’র এই এই বক্তব্যের মানে, বিভিন্ন দেশের উচিত্ একে অপরকে সম্মান করা, মতবিরোধ পাশে রেখে মতৈক্য অন্বেষণ করা, সহাবস্থান করা, এবং উন্মুক্ত বৈশ্বিক অর্থনীতি গড়ে তোলা।

প্রত্যেক দেশের অভিন্ন উন্নয়ন হলো সত্যিকার উন্নয়ন। প্রত্যেক দেশ ভালো থাকতে চায়। আধুনিকায়ন কোনো নির্দিষ্ট দেশের বিশেষ অধিকার নয়। প্রেসিডেন্ট সি’র প্রস্তাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া দেশগুলোর আন্তরিকভাবে অন্য দেশকে সাহায্য করা এবং অভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এ নীতি চীন সবসময়ই অনুশীলন করে আসছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট সি ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ’ প্রস্তাব করেন। এক বছরের মধ্যে চীন শতাধিক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে এ প্রস্তাবের বাস্তবায়নকাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং জাতিসংঘের ‘এজেন্ডা ২০৩০’ বাস্তবায়নে নতুন চালিকশক্তির যোগান দিয়ে আসছে। গতকাল (বুধবার) চীন ও ইন্দোনেশিয়ার সহযোগিতায় নির্মিত জাকার্তা-বান্দুং হাই-স্পিড রেলপথে দ্রুতগতির ট্রেন চলেছে পরীক্ষামূলকভাবে। এই রেলপথ শীঘ্রই আন্তর্জাতিক যোগাযোগের একটি অংশ হয়ে উঠবে।

খাদ্যশস্য ও জ্বালানির নিরাপত্তা হলো বৈশ্বিক উন্নয়নের সবচেয়ে জরুরি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে প্রেসিডেন্ট সি উপায়ও বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, খাদ্য ও জ্বালানি সংকটকে রাজনীতিকরণ করা যাবে না এবং বিশ্বের খাদ্যশস্য ও জ্বালানির সরবরাহ-চেইনকে বাধাহীন করতে হবে।

অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ অভূতপূর্ব উপায়ে সমাধান করতে হবে। বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আগের যে-কোনো সময়ের তুলনায় আমাদের উন্নয়নের ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করা উচিত। জি-২০ গোষ্ঠীর উচিত কার্যকর, সঠিক, দ্রুত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। বালি দ্বীপের শীর্ষসম্মেলন থেকে উচ্চারিত ‘চীনের কন্ঠ’ মতৈক্য বাড়াবে এবং বিশ্বের উন্নয়নকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। ক্রমাগত আধুনিকায়নের দিকে অগ্রসর হওয়া চীন অবশ্যই বিশ্বের জন্য আরও সুযোগ বয়ে আনবে এবং ‘অভিন্ন পুনরুদ্ধার, ও শক্তিশালী পুনরুদ্ধার’ কার্যক্রম জোরালোভাবে বেগবান করবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn