চীন-বাংলাদেশের মধ্যে নতুন জ্বালানি সহযোগিতার ব্যাপক সম্ভাবনা
গত বছর মাত্র উন্নয়নশীল দেশের সারিতে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ শীর্ষসম্মেলনে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তনের কাঠামোগত চুক্তি কর্তৃপক্ষের কাছে জাতীয় নির্ধারিত অবদান পরিকল্পনা উত্থাপন করেছে। তাতে আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে তৈরি হবে বলে আশা ব্যক্ত করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ দুর্বল দেশগুলোর অন্যতম। যদিও দেশটির কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ বিশ্বের মোট পরিমাণের ০.৪৭ শতাংশের চেয়ে কম। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছে। গত সাত বছরে জলবায়ু মোকাবিলার ক্ষেত্রে ব্যয় দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার বায়ু বিদ্যুৎ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে তৈরি বিদ্যুতের পরিমাণ জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ১০ শতাংশ উন্নত করার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উদ্যোক্তা সংস্থা এনার্জি ট্র্যাকার এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৭২৪ কিলোমিটার উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উপযোগী। কক্সবাজারের সে প্রকল্প চালু হওয়ার পর প্রতিবছর ৪৪ হাজার ৬শ টন কয়লা সাশ্রয় হবে এবং ১ লাখ ৯ হাজার দু’শ টন কম কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হবে। যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জ্বালানি সাশ্রয় ও নির্গমন কমানো এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ।
চীনের বায়ু বিদ্যুৎ প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে। আগেকার বিদেশি প্রযুক্তি গ্রহণ থেকে উন্নতি করে বর্তমানে চীনের বায়ু বিদ্যুৎ প্রযুক্তি বিশ্বের প্রথম সারিতে রয়েছে। কক্সবাজারের প্রকল্পের চীনা গ্রুপ এসপিআইসির বর্তমানে পিভি ইন্সটল ক্ষমতা ৩ কোটি ৫০ লাখ কিলোওয়াট ছাড়িয়েছে। নতুন জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ৭ কোটি কিলোওয়াট এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ১০ কোটি কিলোওয়াট ছাড়িয়েছে। এ তিনটি সূচক বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে। কক্সবাজারের সে প্রকল্পের পর গ্রুপটি বাংলাদেশের সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে আরও সহযোগিতা চালাবে।