বাংলাদেশের নদ-নদীর গুরুত্ব
প্রয়োজন নদী শুমারি
ইতিহাসের নানা তথ্য থেকে দেখা যায়- ১৯ শতকের দিকে গোটা অঞ্চলে ছোট বড় নানা ধরনের নদীর সংখ্যা ছিল সাড়ে চার হাজার নদী ছিল্ । পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে বর্তমানে নদীর সংখ্যা সাড়ে চারশ। বেসরকারি হিসেবে তা ৭ শ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নদী শুমারিই হয়নি। তাই দেশের প্রকৃত নদীর সংখ্যা কত তা আসলে বলা মুশকিল। নদী শুমারি ও নদীর সংজ্ঞা নির্ধারণ করলেই কেবল দেশের নদ-নদীর সঠিক হিসেব বের করা আনা সম্ভব।
নদী গবেষকদের মতে, নদী কখনো একা মরে না। নদীর মৃত্যু হলে পাড়ের জনপদও একটু একটু করে মরতে শুরু করে। রাজধানী ঢাকা যদি বুড়িগঙ্গার মৃত্যুর কারণ হয় তবে নদীর মৃত্যুতে ঢাকার অবস্থাও এখন মুমূর্ষু প্রায়! বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বংশী, বালু এবং শীতলক্ষ্যা নদীর দুধারে গড়ে ওঠা শিল্প কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্যের বিষক্রিয়ায় এসব নদী ধীরে ধীরে প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণে প্রয়োজন দ্রুত নদী শাসনের ব্যবস্থা করা।
নদী শাসন কাকে বলে? বা নদী শাসন কি?
দেশের নদীগুলোতে সাধারণা দুপারেই ভুমি ক্ষয় হয় ও পার ভাঙ্গে। এতে বাড়ি-ঘর, জমি-জমা হারিয়ে যায়। এমন ক্ষয় রোধ করার জন্য নদীপৃষ্ঠ থেকে পাড়ের উচ্চতায় বড় বড় পাথর ফেলে বা কংক্রিটের তৈরী ব্লক দিয়ে জলের স্রোত এবং পারের মাঝে বাঁধের মত বানিয়ে পারের ক্ষয় রোধ করা যায়। এটা নদী শাসনের কার্যকর একটি পদ্ধতি।
পাশাপাশি, নদীর নাব্যতা ও গভীরতা বজায় রাখার জন্য নদীর তলদেশের বালি উত্তোলন করা, পানি প্রবাহ ও নদীর পরিবেশ ধরে রাখা নদীশাসনের আরেকটি রূপ।
সেই সঙ্গে বড় ধরনের জলাধার নির্মাণ করা, হাওড়-বাওড়গুলোর সংস্কার করে পানি ধারণ করা ও পানির গুণগত মান বাড়ানোর মতো নানা উদ্যোগ বেশ সহজেই গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে করে দেশে মরুকরণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পানি সংরক্ষণ, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির চাপ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যাও রোধ করা যাবে।