বাংলা

চীনে ফিরে আসার ২৫ বছরে মুলভূভাগের সঙ্গে হংকংয়ের বাণিজ্যের পরিমাণ ৬ গুণ বেড়েছে

CMGPublished: 2022-07-01 13:14:50
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুলাই ১: চলতি বছর হলো হংকং-এর মাতৃভূমিতে ফিরে আসার ২৫তম বার্ষিকী। গত ২৫ বছরে মূল ভূভাগ এবং হংকংয়ের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৬.১ গুণ বেড়েছে। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ মূলভূভাগ থেকে হংকংয়ে ১.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ হয়েছে; যা মূলভূভাগ থেকে বহির্বিশ্বে মোট বিনিয়োগের ৫৭.৬ শতাংশ। একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চ্যানেল হিসাবে হংকং-এর ভূমিকা আরও উন্নত হয়েছে। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় এ সম্পর্কে শুনুন একটি প্রতিবেদন।

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সারা বিশ্বের প্রায় ২২০টি গন্তব্যের সঙ্গে যুক্ত। প্রতিদিন হংকং এবং বাকি বিশ্বের মধ্যে মোট ১১০০টিরও বেশি ফ্লাইট যাতায়াত করছে। এই বছরের এপ্রিল মাসে হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় রানওয়ে সফলভাবে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে এবং শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে খুলবে। তখন হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কুয়াংতং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তম উপসাগরীয় অঞ্চলের বিমানবন্দর ক্লাস্টারের শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে উঠবে।

হংকং বিমানবন্দরের প্রশাসন ব্যুরোর কার্য-নির্বাহী প্রধান লিন থিয়েন ফু বলেন,

‘আমরা ২০১৬ সালের অগাস্ট মাস থেকে শুরু করেছি। তখন এই জায়গাটি সমুদ্রের জলে পূর্ণ ছিলো। সেই সময় মুলভূভাগের অনেক নেতৃবৃন্দ ও আঞ্চলিক সরকার আমাদের সাহায্য করেছে। কারণ সবাই মনে করত, এটিই কেবল হংকংয়ের একটি প্রকল্প নয়, বরং দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পও বটে।’

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হংকং-চুহাই-ম্যাকাও সেতু, কুয়াংচৌ-শেনচেন-হংকং হাই-স্পিড রেল... ধারাবাহিক ‘সুপার প্রজেক্টের মাধ্যমে হংকং এবং মূল ভূখণ্ডের সম্পর্ক আরো কাছাকাছি হয়েছে; দুই জায়গার আর্থ-বাণিজ্যিক বিনিময়ও বেড়েছে।

এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মুল ভূভাগ এবং হংকংয়ের বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০৭৭ কোটি মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৩৬০.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৮.৫ শতাংশ। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের চ্যানেল হিসেবে হংকংয়ের ভূমিকা আরো ভালো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সু ইউ থিং বলেন,

‘প্রত্যাবর্তনের ২৫ বছরে হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক খাতে সহযোগিতা ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে গড়ে উঠেছে এবং পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। ‘আরো ঘনিষ্ঠ আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনে’ ধারাবাহিক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে হংকংয়ে মুলভূভাগ সার্বিকভাবে পণ্য বাণিজ্য এবং পরিষেবা বাণিজ্য উন্মুক্তকরণ বাস্তবায়ন করেছে। তা ছাড়া, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুবিধার জন্য বৈচিত্র্য ও ফলপ্রসূ সহযোগিতাও চালানো হয়েছে।’

কুয়াংতং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা-বাণিজ্য সেবাকেন্দ্র হিসেবে হংকংয়ের বিশেষ সুবিধা ও ভূমিকা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। হংকং থেকে মুলভূভাগে কাজ করা শেনচেন শহরের একটি হাইটেক লিমিটেড কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইয়েন কুও শেং কুয়াংতং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়ন সাক্ষ্য বহন করেছেন এবং এ থেকে উপকৃতও হয়েছেন।

তিনি বলেন,

‘কেন্দ্রীয় সরকার অনেক নীতি জারি করেছে এবং বিভিন্ন খাতে অনেক সাহায্য করেছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, হংকংয়ের তরুণ তরুণীদের মুলভূভাগে ফিরিয়ে আনা উচিত্। সরকার আমাদের অনেক সুবিধা দিয়েছে এবং চীনের বাজারও বিশাল। হংকংবাসীদের নিজস্ব সুবিধা আছে এবং মুল ভূভাগের সামাজিক চাহিদার সমন্বয় করে আরও ভালোভাবে উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, কেন্দ্রীয় সরকার ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের যৌথ নির্মাণে অংশগ্রহণ এবং সামগ্রিক জাতীয় উন্নয়নে মেশানোর জন্য হংকংকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছে। ২০১৩ সাল থেকে হংকং এবং মূল ভূখণ্ডের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো টানা সাত বছর ধরে ‘এক অঞ্চল, এক পথের’ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বিনিয়োগের আলোচনা করেছে। হাজারেরও বেশি স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করেছে এবং ৭০টিরও বেশি বিনিয়োগ সহযোগিতার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। শু ইউথিং বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার অব্যাহতভাবে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি এবং মৌলিক আইন অনুসরণ করে হংকংয়ের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনগণের জীবন-জীবিকা উন্নয়ন এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে হংকংকে আরও ভালো সমর্থন দেবে।

লিলি/তৌহিদ/শুয়ে

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn