বাংলা

ব্রিক্স বিজনেস ফোরামে মূল ভাষণ দিয়েছে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং

CMGPublished: 2022-06-23 14:33:39
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুন ২৩: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গতকাল (বুধবার) রাতে উদ্বোধনী ব্রিক্স বিজনেস ফোরামে ‘যুগের প্রবণতার পথ ধরে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠন’ শীর্ষক মূল ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে সি চিন পিং বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্ব শত বছরের নতুন পরিবর্তন এবং মহামারির প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বিশ্ব অর্থনীতি কঠিন দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের উন্নয়ন গুরুতরভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

‘বিশ্ব কোন দিকে যাচ্ছে? শান্তি- নাকি যুদ্ধ ? উন্নয়ন- নাকি মন্দা? উন্মুক্তকরণ- নাকি রুদ্ধদ্বার? সহযোগিতা- নাকি বৈরিতার পথ? এসব প্রশ্ন আমাদের সামনে এসেছে। ইতিহাসের দীর্ঘপথে মাঝেমধ্যেই শান্তি, কখনো তরঙ্গের মতো চাঙ্গা অবস্থা দেখা দেয়। তবে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যাই হোক-না-কেন পরিবর্তন ও উন্মুক্তকরণের ঐতিহাসিক প্রবণতা পরিবর্তন হবে না। হাতে হাত রেখে সহযোগিতা এবং যৌথভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রত্যাশা পরিবর্তিত হবে না। আমরা মেঘে চোখ ঢেকে যাওয়াকে ভয় পাই না। সঠিকভাবে ঐতিহাসিক উন্নয়নের নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। এক সময় এ ঘটনা থেকে বিভ্রান্ত হবো না, ঝুঁকিতে ভয় পাবো না এবং সাহসীভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব। যাতে মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থের সংশ্লিষ্ট কমিউনিটির লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যায়।

সি চিন পিং বলেন, প্রথমত, আমাদের উচিত ঐক্যবদ্ধ ও সংযত হওয়া এবং যৌথভাবে বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। বেদনাদায়ক ইতিহাস প্রমাণ করেছে যে, আধিপত্যবাদ, গোষ্ঠীর রাজনীতি শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারে না। বরং যুদ্ধ ও সংঘাত তৈরি করে। জোর খাটিয়ে অবস্থান দখল করা, সামরিক মৈত্রী বাড়ানো এবং অন্য দেশের নিরাপত্তা উপেক্ষা করে নিজের নিরাপত্তা রক্ষা করা হলে নিজেও সংকটে পড়তে হতে পারে। প্রত্যেকে শান্তি রক্ষা করলে এবং যুদ্ধের বেদনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করলে শান্তির আলো দেখা যাবে। আমরা জাতিসংঘ সনদ ভুলবো না এবং শান্তি রক্ষার দায়িত্ব মনোযোগ দিয়ে পালন করবো।

সম্প্রতি আমি বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। বিভিন্ন পক্ষকে অভিন্ন, সহযোগিতামূলক ও টেকসই নিরাপত্তামূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডের অখণ্ডতা এবং জাতিসংঘ সনদের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা রক্ষাসহ দেশগুলোর সংঘাত ও বিতর্ক সমাধানে গুরুত্ব দেই। আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত ‘নিষ্ফল খেলা’ বাদ দেওয়া এবং যৌথভাবে আধিপত্যবাদ ও শক্তির রাজনীতির বিরোধিতা করার পাশাপাশি পরস্পরকে শ্রদ্ধা দেখানো, সমতা ও ন্যায্যতা, সহযোগিতার মাধ্যমে সমন্বিত অর্জনের নতুন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।

দ্বিতীয়ত: আমাদের উচিত পরস্পরকে সহযোগিতা করা এবং বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়ন বেগবান করা। বর্তমানে বিশ্ব উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্বের ৭০টিও বেশি দেশের ১২০ কোটি মানুষ করোনা, খাদ্য, জ্বালানি, ঋণ সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। গত দশের অধিক বছরের দারিদ্র্যমুক্তকরণের সাফল্য রক্ষার চেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে। গত বছর আমি ‘বিশ্ব উন্নয়নের প্রস্তাব’ উত্থাপন করেছিলাম। তাতে জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ কেন্দ্রিক ঐক্যবদ্ধ, সমতাসম্পন্ন, ভারসাম্যপূর্ণ ও সবার জন্য কল্যাণকর বিশ্ব উন্নয়নের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উন্নত করা এবং সার্বিকভাবে দারিদ্র্যবিমোচন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ডিজিটাল যোগাযোগ ও শিল্পায়নসহ নানা খাতের সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। নতুন দফায় প্রযুক্তিগত বিপ্লব ও শৈল্পিক সংস্কারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়ন ও সুবজায়ন দ্রুততর করতে হবে। পাশাপাশি মহামারি খাতে সহযোগিতা চালাতে হবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে আরও বেশি করোনা প্রতিরোধক ঔষুধ দিতে হবে, যাতে দেশগুলো দ্রুতভাবে মহামারি পরাজিত করতে পারে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn