ঐতিহ্যগত চীনা চিন্তাধারার মূল সারমর্ম হল জনগণকে সমৃদ্ধ করা এবং উপকৃত করা
ছি-এর রাজা সুয়ানওয়াংকে মেনসিয়াসের পরামর্শ দেওয়ার ইতিহাস থেকে, আমরা জানি যে ‘জনগণকে রক্ষা করায় রাজা হওয়া’ হল মেনসিয়াসের ‘হিতৈষী সরকার’ চিন্তার মূল প্রস্তাব। ‘জনগণকে রক্ষা করা’ মানে জনগণের প্রকৃত চাহিদা মেটানো থেকে শুরু করে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, পরিবহন, স্বাস্থ্য এবং মৃত্যু সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো সমাধান করা, যা জনগণ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। মেনসিয়াসের ‘জনগণকে রক্ষা করার’ চিন্তাভাবনাকে একটি সূচনা বিন্দু হিসাবে গ্রহণ করলে, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে জনগণকে সমৃদ্ধ এবং উপকৃত করার ঐতিহ্যগত চীনা চিন্তার নিম্নলিখিত মূল সারমর্ম রয়েছে।
প্রথমটি হল, জনগণের জন্য সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দেওয়া। মেনসিয়াসের দৃষ্টিতে, রাষ্ট্র ‘জনগণকে সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দিতে পারলে’, অর্থাৎ, প্রাতিষ্ঠানিক গ্যারান্টির মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জনগণকে তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জীবিকা সরবরাহ করতে পারলে, তাদের স্থায়ী সম্পত্তির কারণে জনগণের অধ্যবসায় থাকে। জনগণের জীবন-জীবিকার সুবিধার জন্য এটিই প্রথম পদক্ষেপ এবং কল্যাণকর নীতি। প্রাচীনকালে, কৃষি ছিল জাতীয় অর্থনীতির প্রাণশক্তি, শুধুমাত্র কৃষির ভিত্তিকে মজবুত করলে এবং মানুষের পর্যাপ্ত খাদ্য ও বস্ত্র থাকলেই সমস্ত শিল্পের উন্নতি ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ৪৮৫ খ্রিস্টাব্দে, জমি দখল রোধ করার জন্য এবং কৃষকদের নিজস্ব জমি নিশ্চিত করার জন্য, দেশটি ‘সমান ভূমি ব্যবস্থা’ প্রয়োগ করে, যা জনসংখ্যার ভিত্তিতে জমি ভাগ করার একটি ব্যবস্থা। এটি কৃষকদের শক্তিশালী জমিদারদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি পেতে এবং দেশের সাধারণ মানুষ হতে সক্ষম করে। রাষ্ট্রীয় করের পরিমাণ কম হলেও পরিবারের সংখ্যা বাড়ে, মানুষ ধনী হয় এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগার ভরে যায়। ঐতিহাসিক নথিগুলো দেখায় যে রাজ্যের নয় বছরের খাদ্য মজুদ রয়েছে এবং জনগণের তিন বছরের খাদ্য সরবরাহ রয়েছে, যা চীনা ইতিহাসে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সেরা সময় তৈরি করেছে।