বাংলা

আমি চীনের উন্নত শিক্ষার ধারণা আমার দেশে নিয়ে যেতে চাই: গিনি-বিসাউয়ের মেয়ে ইনাসিয়া

CMGPublished: 2024-09-30 20:13:19
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

আমি চীনের উন্নত শিক্ষার ধারণা আমার দেশে নিয়ে যেতে চাই: গিনি-বিসাউয়ের মেয়ে ইনাসিয়া

গিনি-বিসাউ প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালো জুলাই মাসে চীনে রাষ্ট্রীয় সফর করেন। গিনি-বিসাউ পশ্চিম আফ্রিকায় অবস্থিত এবং চীন থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত। তবে, দীর্ঘ দূরত্ব বিনিময়ের জন্য দুই দেশের জনগণের উত্সাহকে বাধা দেয়নি। চীনে অধ্যয়নরত গিনি-বিসাউয়ের একটি মেয়ে ইনাসিয়া আমাদেরকে তার চীন ও চীনের সিনচিয়াংয়ের গল্প বলছিলেন।

“আমার নাম ইনাসিয়া। আমি গিনি-বিসাউ থেকে এসেছি। এখন আমি সিনচিয়াংয়ের শিহেজি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য অধ্যয়ন করছি।”

পশ্চিম আফ্রিকা থেকে চীনের সিনচিয়াং পর্যন্ত, ইনাসিয়ার শিক্ষাগত পথ মানচিত্রে একটি দীর্ঘ পথ এঁকেছে। ইনাসিয়া তার বন্ধুদের কাছ থেকে চীন সম্পর্কে অনেক গল্প শুনেছিল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চীন সম্পর্কে অনেক তথ্য অনুসন্ধান করেছিল। তবে, চীনে আসার পরেও তিনি বিশেষভাবে বিস্মিত হন। তিনি বলেন,

"চীনে আসার পর, আমার কল্পনার চেয়েও সম্পূর্ণ আলাদা বিষয় দেখেছি। চীনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এত দ্রুত হবে বলে আমি আশা করিনি। মোবাইল পেমেন্টের সুবিধা আমার চোখ খুলে দিয়েছে। চীনের অবকাঠামো খুবই নিখুঁত, বসবাসের পরিবেশ খুবই নিরাপদ, এবং এখানকার লোকেরাও খুব বন্ধুত্বপূর্ণ। এসব আমার মনের উপর একটি বিশেষ ছাপ ফেলেছে।”

ইনাসিয়া এখন সিনচিয়াংয়ের শিহেজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের স্নাতক ছাত্রী। যখন তিনি প্রথমবার সিনচিয়াংয়ে যান, তখন জলবায়ু ও ভাষা ইনাসিয়ার কাছে বেশ চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করে। তবে তার শিক্ষক এবং সহপাঠীদের উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সাহায্যে তিনি দ্রুত স্থানীয় জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নেন। তিনি বলেন,

‘আমাদের দেশে শুধু দুটি ঋতু আছে - বর্ষাকাল এবং শুষ্ক ঋতু, প্রতিটি ঋতু অর্ধেক বছর। তাই সিনচিয়াংয়ে শীত কাটানো আমার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ; এ ছাড়া, আমার চীনা ভাষা খুব ভাল নয়, তা আমার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমার সহপাঠীরা খুব ভালো, এবং তারা সবসময় সাহায্য করতে ইচ্ছুক। আমি চাইনিজ ভালোভাবে শিখতে চাই। আমি আমার ইংরেজি শিক্ষা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করার পর বিশেষভাবে চীনা ভাষা অধ্যয়ন করতে চাই।"

ইনাসিয়ার মেজর হল ইংরেজি ভাষা শিক্ষা। এখানে, তাত্ত্বিক জ্ঞান শেখার পাশাপাশি, শিক্ষণ অনুশীলনে অংশ নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে তার। একটি স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে তার সাম্প্রতিক ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা তাকে চিন্তা করার জন্য অনেক কিছু দিয়েছে। তিনি বলেন,

“গত সেমিস্টারে, আমি যথেষ্ট সৌভাগ্যবান ছিলাম, একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইন্টার্ন করেছি। আমি চাইনিজ শিক্ষক এবং ছাত্রদের সাথে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে অনেক উপকৃত হয়েছি। আমি তাদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি, শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ এবং তাদের ছাত্রদের যত্ন দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমি আনন্দের সাথে আবিষ্কার করেছি যে চীনের পাঠ্যক্রম আমার দেশের চেয়ে বেশি পদ্ধতিগত, যা আমাকে আমার দেশের শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নে নতুন অনুপ্রেরণা দিয়েছে। চীনের শিক্ষাব্যবস্থা অনুশীলন এবং তত্ত্বের সংমিশ্রণকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়, যা আমাদের দেশ থেকে অনেক আলাদা। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে গিনি-বিসাউতে চীনের শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা ফিরিয়ে আনব, যাতে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত হয়। বিশেষ করে, পাঠ্যক্রমের নকশা এবং ইংরেজি শিক্ষার পদ্ধতির ক্ষেত্রে।”

আজ, ইনাসিয়া সিনচিয়াংয়ের জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। সুন্দর ও দুর্দান্ত দৃশ্য, উষ্ণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ, ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ... ইনাসিয়া আরও বেশি লোকের কাছে সিনচিয়াংকে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়, যা প্রতিদিন তার কাছে বিস্ময় নিয়ে আসে। তিনি বলেন,

“আমার প্রিয় সিনচিয়াং খাবার হল ‘বড় প্লেট চিকেন’। আমি আমার বন্ধুদের সাথে এটি রান্না করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ভালভাবে রান্না করতে পারিনি। গত বছর আমি সিনচিয়াং এর চারপাশে ভ্রমণ করেছি, এবং যারা আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছিল তা হল কাশগার এবং উরুমচির লোকেরা গান গাইতে এবং ভালো নাচতে পারেন, যা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।”

চীন এবং গিনি-বিসাউ-এর মধ্যে বন্ধুত্ব পুরানো প্রজন্মের নেতাদের দ্বারা সৃষ্ট এবং উভয় পক্ষের দ্বারা ভাগ করা একটি মূল্যবান সম্পদ। ১৯৭৬ সাল থেকে, চীন গিনি-বিসাউতে চিকিত্সা দল প্রেরণ করেছে এবং গিনি-বিসাউ ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ ও অধ্যয়নের জন্য চীনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে, চীনা কৃষি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরাও গিনি-বিসাউয়ের বাফাটা জেলায় সক্রিয় রয়েছে, স্থানীয়দের ধান চাষে সহায়তা করেছে; গিনি-বিসাউ-এর জাতীয় সংগীত "দিস ইজ দ্য কান্ট্রি উই লাভ" চীনা সুরকার সিয়াওহ্য রচিত এবং দুই দেশের মধ্যে বিনিময়ের ইতিহাসে একটি ভালো গল্প হয়ে উঠেছে। বর্তমানে, চীন ও গিনির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন প্রেরণা যোগ করেছে।

ইনাসিয়া বলেন যে, তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে গিনি-বিসাউতে ফিরে আসার পরে, তিনি চীনে যা দেখেছেন এবং শুনেছেন সে সম্পর্কে আরও বেশি লোককে বলবেন। তিনি বলেন,

“আমি আশা করি যে, আমি চীনে অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা আমার দেশে নিয়ে যাব। বিশেষ করে, ইংরেজি শিক্ষার পদ্ধতি সংস্কার করা এবং শিক্ষার মান উন্নত করার জ্ঞান। চীনে অধ্যয়নের অভিজ্ঞতা কেবল আমার আন্তর্জাতিক দিগন্তই প্রসারিত করেনি, আমার শিক্ষার শক্তিও মজবুত করেছে। আমি গিনি-বিসাউ এবং চীনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার সেতু হয়ে ওঠার অপেক্ষায় আছি।”

ইউরোপকে প্রকৃত চীন বলবেন: চীনে বসতি স্থাপন করার একজন অস্ট্রিয়ান বন্ধু রবার্ট

‘চীনের সাফল্যের গল্প’ এবং ‘হংছিয়াও গল্প- পুরো প্রক্রিয়ায় জন গণতন্ত্রের তৃণমূল অনুশীলনের রেকর্ড’ চীনের উন্নয়নের গল্প বলার দুটি বই, যা যথাক্রমে বিদেশি ভাষা পাবলিশিং হাউস এবং শাংহাই পিপলস পাবলিশিং হাউস প্রকাশ করেছে। আপনি সম্ভবত জানেন না যে, এই দুটি বইয়ের লেখক ইউরোপের একজন আন্তর্জাতিক বন্ধু।

“আমার নাম রবার্ট ফিজটাম এবং আমি অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা থেকে এসেছি। আমি প্রথমবার চীনে আসি ১৯৭৯ সালে, চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পরের বছর।”

প্রকৃতপক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন, রবার্ট ইতিমধ্যেই চীনের প্রতি, বিশেষ করে চীনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রচুর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স অনুষদে অর্থনীতিতে মেজর করেছেন এবং অপ্রচলিত পশ্চিমা অর্থনীতি নিয়ে অধ্যয়ন করতে তার দারুণ আগ্রহ রয়েছে। ২০১৩ সালে, রবার্ট ও তার চীনা স্ত্রী- তার স্ত্রীর জন্মস্থান কুয়াংসিয়ের নানিং শহরে ফিরে যান, এবং তারপর থেকে তারা ১১ বছর ধরে সেখানেই বসবাস করছেন। রবার্ট বলেন,

“আমি ইউরোপে ৬০ বছর ধরে বসবাস করেছি, আমি বাইরের ভিন্ন জগত দেখতে চাই। কারণ আমার স্ত্রী চীনা, তাই আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে, তার জন্মস্থান নাননিংয়ে থাকব।”

রবার্টের মতে, নানিং সবুজ এবং সুন্দর পরিবেশে পূর্ণ একটি শহর। এটি খুব বসবাসযোগ্য এবং ভিয়েনার সাথে তার শহরের খুব মিল রয়েছে। এখানে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে চীনের দ্রুত উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনে গভীর পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যক্ষ করেছেন। বিশেষ করে, তিনি নিরঙ্কুশ দারিদ্র্য দূরীকরণে চীনের অনুশীলন এবং সাফল্য দেখে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন।

রবার্ট বলেন,

“কুয়াংসিতে অনেক জাতিগত সংখ্যালঘু রয়েছে, এবং তারা যে ছোট গ্রামগুলিতে বাস করে সেগুলি দুর্গম স্থানে রয়েছে যা অসুবিধাজনক পরিবহনে রয়েছে। অন্য কথায়, সরকারকে অবশ্যই স্থানীয় অবস্থার উপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে, যাতে এই এলাকার মানুষজন দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। কারণ, দারিদ্র্যবিমোচন করা অভাবগ্রস্ত লোকদের অর্থ প্রদান করা নয়; বরং, তাদের জন্য দীর্ঘকাল লাভজনক কর্মসংস্থানে রাখা।”

123全文 3 下一页

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn