জনগণের শক্তি- সঠিক সময়, সঠিক স্থান ও জনগণের ঐক্য
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, পশ্চিম হান রাজবংশের দূত জাং ছিয়ান পশ্চিম অঞ্চলে "সিল্ক রোড" এর মাধ্যম মধ্য সমভূমির সভ্যতা পশ্চিমে ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং চীন ও পশ্চিম অঞ্চলের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের প্রচার করেছিল। থাং রাজবংশের সময় চিয়ানজেন পূর্ব এশিয়ার জাপানে ভ্রমণ করে কনফুসিয়ানিজম, বৌদ্ধধর্ম ও তাওবাদ সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে এবং সাংস্কৃতিক সংহতি প্রচার করতে পেরেছিলেন। মিং রাজবংশের সময়, জেং হ্য-এর পশ্চিম সমুদ্রযাত্রা উপকূলীয় দেশগুলির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদানকে শক্তিশালী করেছিল। শ্রীলঙ্কার জাতীয় জাদুঘরে এখনও একটি চীনা পাথরের ট্যাবলেট রয়েছে। এটি ১৪০৭ সালে জেং হ্য’র পশ্চিমে দ্বিতীয় সমুদ্রযাত্রার সময় দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার গালেতে শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই স্মৃতিস্তম্ভটিকে "প্রদানের স্মৃতিস্তম্ভ" বলা হয়। যাতে স্থানীয় মানুষের কাছে প্রদান করা জিনিসপত্রের তালিকা লিপিবব্ধ করা হয় এবং তিনটি ভাষায় বিভিন্ন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, পশ্চিমা ঔপনিবেশিকদের থেকে আলাদা জেং হ্য-এর সমুদ্রযাত্রা আবিষ্কার, দাসত্ব এবং আক্রমণের যাত্রা নয়। জেং হ্য–এর সমুদ্রযাত্রা প্রথমত, চীনের বৈদেশিক বিনিময় এবং পারস্পরিক শিক্ষার ধারণা প্রচার করার জন্য; দ্বিতীয়ত, তারা প্রচুর পরিমাণে রেশম, চীনামাটির বাসন এবং অন্যান্য উপহার বহন করে স্থানীয় জনগণের কাছে প্রদান করত। যার মাধ্যমে চীনের শান্তিপ্রিয় মহান দেশ তার ভাবমূর্তি প্রকাশ করেছে।
প্রাচীনকাল থেকেই, চীনা জনগণ "সঠিক সময়, সঠিক স্থান এবং মানুষের ঐক্য" ধারণার উপর ভিত্তি করে দেশের ঐক্য ও জাতির ঐক্যের প্রতি মনোযোগ দিয়েছে এবং ঐক্যের মাধ্যমে ঐক্যমত্য খোঁজা এবং ঐক্যমতের মাধ্যমে উন্নয়ন বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছে। চীন ‘সমুদ্রের সব নদীকে আলিঙ্গন করার’ মনোভাব নিয়ে "অমিল পাশে রেখে সম্প্রীতিতে থাকার" নীতির পক্ষে এবং ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য "জনগণই দেশের ভিত্তি" নীতির পক্ষে। চীনের ৫৬টি জাতিগোষ্ঠী মতভেদ সংরক্ষণের পাশাপাশি সাধারণ ভিত্তি খোঁজে এবং স্ব-উন্নতির প্রচেষ্টা করে। বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুপ্রতিবেশী নীতি অনুসরণ করে। অতএব, চীনের "জনগণমুখী" দৃষ্টিভঙ্গি একটি একচেটিয়া ও বিচ্ছিন্ন জনমুখী দৃষ্টিভঙ্গি নয়, বরং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিস্তৃত ভিত্তিক জনমুখী পদ্ধতি। তাই, চীনের জনমুখী ও শান্তিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির অর্থ কেবল তার নিজের জনগণের স্বার্থ ও মঙ্গলকে সম্মান করা এবং তার জনগণের সুরেলা সহাবস্থান চাওয়াই নয়, বরং অন্যান্য দেশের জনগণের স্বার্থ ও মঙ্গলকে সম্মান করা এবং অনুসন্ধান করা। যা মানবজাতির একটি অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটির টেকসই উন্নয়ন।