বাংলা

ক্যামেরুনের আন্তর্জাতিক ছাত্র ওলি: চীনা সংস্কৃতি আমাকে ‘সম্প্রীতির’ পথ দেখিয়েছে

CMGPublished: 2023-04-11 10:00:06
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

ক্যামেরুন থেকে ওলি ১৯৯৫ সালের পরে জন্মগ্রহণ করেন এক যুবক। তিনি চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন, তাই তিনি ভাষা ও শিক্ষায় পিএইচডি করার জন্য এখানে আসেন। বিদেশি ভাষা শেখার এ দীর্ঘ প্রক্রিয়ায়, ওলি কোন ধরনের চীন আবিষ্কার করেছিলেন? শুনুন আজকের প্রতিবেদন।

“আমি প্রায় ৬ বছর ধরে চীনে আছি। আমি প্রথমবার চীনে আসি ২০১৭ সালে। তখন থেকে আমি চীনে রয়েছি।"

ওলি একজন ডক্টরাল ছাত্র, যিনি বেইজিং ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচার ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষায় অধ্যয়ন করছেন। প্রতিবেদক তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট করেন। সেদিন ওলি একটি কালো জ্যাকেট এবং একটি বেসবল ক্যাপ পরা ছিল। সে সাবলীল চীনা ভাষায় কথা বলেছিল, এটা ধারণা করাও কঠিন যে, সে একজন বিদেশি। এ বছর পিএইচডির তৃতীয় বর্ষে পড়া ওলি আফ্রিকার ক্যামেরুন থেকে এসেছেন। কেন তিনি এত সাবলীলভাবে চীনা ভাষায় কথা বলতে পারেন? তার কারণ, চীন সম্পর্কে ওলির প্রবল আগ্রহ ছিল। চীনে আসার আগে ওলি চীনাদের সাথে একটি অবিচ্ছেদ্য বন্ধন অনুভব করতেন। সে বলে,

“আমি প্রথমবার ক্যামেরুনের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটে চীনা ভাষা শিখেছিলাম। আমি সেখানে শুরুতে ৬ মাস পড়াশোনা করেছি। ৬ মাস পরে, আমি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটে যাই। কারণ, আমরা সেখানে চীনা ভাষাও অধ্যয়ন করতে পারি। স্নাতক পাসের পর আমি চীনে পড়ার বৃত্তির জন্য আবেদন করি।”

প্রথমবারের মতো চীনে আসা ওলি চীনের উন্নয়ন দেখে মুগ্ধ হন। বিশেষ করে, এত বড় একটি দেশে পরিবহন অবকাঠামো এত উন্নত যে লোকেরা দ্রুত ও দক্ষতার সাথে যাতায়াত করতে পারে। ওলি বলে,

“প্রথমবার যখন আমি চীনে এসেছিলাম, আমি চীনের উন্নয়ন অনুভব করি। বিশেষ করে পরিবহন ক্ষেত্রে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি সাবওয়ে, হাই-স্পিড রেল বা অন্য কোনো পরিবহন মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারেন, যা খুবই সুবিধাজনক। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি বেইজিং থেকে থিয়েনচিন, কুয়াংতুংয়ে যান, আপনি যেখানেই যান-না কেন, আপনি দ্রুত সেখানে যেতে পারবেন।”

২০২০ সালে ওলি চীনে একটি চীনা বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। তার বক্তৃতায়, তিনি "সম্প্রীতির" ঐতিহ্যবাহী চীনা দর্শন সম্পর্কে তার কথা ব্যাখ্যা করেন। তিনি ওই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করেন, যেখানে ৪০টিরও বেশি দেশের হাজার হাজার আন্তর্জাতিক ছাত্র অংশগ্রহণ করেছিল। ওলি বলে,

“প্রথমটি ‘হ্য’ শান্তির সম্প্রীতি এবং দ্বিতীয়টি ‘হ্য’ সহযোগিতার সম্প্রীতি। আমার ব্যক্তিগত অনুধাবন অনুযায়ী, যেহেতু চীন একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ দেশ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা চীনের দ্রুত উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ, তাই শান্তি ছাড়া কোনো উন্নয়ন হতে পারে না। আপনি যেখান থেকেই আসুন, ত্বকের রঙ, দেশ-পরিচয় যাইই হোক না কেন, বিশ্বের সব অংশকে শান্তিপূর্ণ করতে আমাদের একসাথে কাজ করা উচিত। শান্তি থাকলে আমাদের উন্নয়ন করা সহজ হবে।”

চীনে, ওলি অনেক উষ্ণ এবং নিঃস্বার্থ চীনা মানুষের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অধ্যয়ন ও গবেষণার পাশাপাশি, তিনি তার শিক্ষক এবং সহপাঠীদের ভাল বন্ধু হয়ে উঠেছেন, যা চীনে তার জীবনকে আরও রঙিন করে তুলেছে। ওলি বলে,

“তারা সবাই খুব খুশি আছে, বিশেষ করে চীনা বন্ধুরা, তারা আমাকে খুব স্বাগত জানায় এবং আমাকে চীনের সৌন্দর্যগুলো দেখায়। সময় থাকলে বেইজিং-এর দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাব এবং চীনের সৌন্দর্য দেখবো।”

ওলি পরের বছর বা দুই বছরের মধ্যে স্নাতক পাস করতে চলেছেন। তিনি তার পিএইচডি করার পরে জীবন নিয়ে খুব আশাবাদী। ওলি বলে,

“আমার যদি সুযোগ থাকে, আমি অবশ্যই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে, বা একটি মিডিয়া সংস্থায় শিক্ষক হব। কারণ আমি মিডিয়াতে বেশি আগ্রহী। তাই আমি চীনের রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশনে কাজ করতে চাই। যদি আমার সুযোগ থাকে, আমি এই কাজগুলো করতে চাই।”

ওলি বলেন যে, চীন একটি উন্নয়নশীল দেশ। অতীতে চীনের সব অভিজ্ঞতা তাকে নিশ্চিত করেছে যে, তিনি এখানে ভালোভাবে উন্নত হতে পারবেন। সে জানায়,

“চীন আমার কাছে খুবই আকর্ষণীয়। চীনে, শিক্ষা, অর্থনীতি বা যাই হোক না কেন, প্রত্যেকে তার জন্য উপযুক্ত একটি পথ খুঁজে পেতে পারে এবং তাদের আগ্রহের দিকে বিকশিত হতে পারে। সামাজিক সহনশীলতা এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির কারণে, প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব পথ খুঁজে পায় এবং তারপর তা বিকাশ করতে পারে।”

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn