মহাপ্রাচীরের কোলে গ্রামীণ শিক্ষকদের প্রচেষ্টা
মহাপ্রাচীর চীনের সুবিখ্যাত দর্শনীয় স্থানগুলোর অন্যতম। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি চীনের গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যটনস্থান। যারা মহাপ্রাচীরে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পান, তাদের যাওয়ার আগ্রহও অনেক বেশি। মহাপ্রাচীরের কোলে অনেক ছোট ছোট গ্রাম রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই এসব গ্রাম দূরবর্তী এলাকায় অবস্থিত এবং যাতায়াতব্যবস্থাও সুবিধাজনক নয়। এখানকার অনেক গ্রামীণ বাচ্চা রয়েছে। তাদের শিক্ষা দিতে বিভিন্ন প্রজন্মের শিক্ষকরা দূরবর্তী স্থান থেকে আসেন। আজকের আসরে চীনের হ্যপেই প্রদেশের মহাপ্রাচীরের কাছে একটি ছোট গ্রামের শিক্ষক-দম্পতির গল্প তুলে ধরবো।
ভোরবেলার কুয়াশা আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে গেছে। পাহাড়াঞ্চলের উপর নির্মিত মহাপ্রাচীরও দূর থেকে যেন কাছে চলে এসেছে। হ্যপেই প্রদেশের থাংশান শহরের ছিয়ানসি জেলায় লিচিয়াইয়ু গ্রামের শিক্ষক ইয়াং চিন লু এবং তাঁর স্ত্রী শিক্ষিকা চাং হাই ইয়ান তাঁদের ব্যস্ত দিন শুরু করেছেন। বহু বছর ধরে এ গ্রামের স্কুলে বাইরে থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা আসছেন ও চলেও যাচ্ছেন, কেবল তাঁরা দু’জন দীর্ঘকাল এখানে শিক্ষকতার কাজ করে যাচ্ছেন। স্কুলই তাদের বাড়ি। দু’জন পরস্পরের হাত ধরে সুন্দর গ্রামীণ জীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন।
নিজের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে শিক্ষক চাং হাই ইয়ান বলেন, ২০০৩ সালে তিনি হ্যপেই ক্রীড়া একাডেমি থেকে স্নাতক হন এবং তাঁর জন্মস্থান থাংশান শহরের ছিয়ানসি জেলার একটি মাধ্যমিক স্কুলে ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন। সেখানে তিনি স্বামী ইয়াং চিন লু’র সাথে পরিচিত হন এবং তখন দু’জনের বয়স প্রায় সমান ছিল। অনেক কথা নিয়ে আলোচনা করতেন তারা। একসময় দু’জন প্রেমে পড়েন ও বিয়ে করেন। পরে তাদের একটি বাচ্চাও হয়।
২০০৬ সালে ছিয়ানসি জেলার অনেক স্কুল একত্র করা হয় এবং ইয়াং চিন লু দূরবর্তী এলাকার লিচিয়াইয়ু প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ পান। তখন দু’জনের পরস্পরের সাথে দেখা করা খুবই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, এ গ্রাম ছিয়ানসি জেলার সবচেয়ে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। জেলার সাথে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার হলেও, পাহাড়াঞ্চলের পথ অতিক্রম করতে অনেক সময় হাঁটতে হয়। ফলে শিক্ষক ইয়াংকে তখন স্কুলে থাকতে হয় এবং স্ত্রী চাংকে স্কুলের কাজ করার সাথে সাথে বাচ্চারও যত্ন নিতে হয়। জীবনের এই কষ্ট দু’জনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।