বাংলা

চিলির একটি ছোট্ট শহরে "চাইনিজ গার্ল"—চীনা ভাষার প্রতি লরেটো ইয়োসের ভালবাসা-China Radio International

criPublished: 2020-12-22 13:53:12
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চিলির এক ১৭ বছর বয়সী কিশোরী লরেটো ইয়োস চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণে একটি ছোট্ট শহর কুইরিবে বাস করেন। তার একটি সুন্দর চীনা নাম রয়েছে: সিং মেইলিং। গত বছরের অগাস্টে ওয়ার্ল্ড মিডল স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বাদশ "চাইনিজ ব্রিজ" চীনা ভাষা দক্ষতা প্রতিযোগিতায় লরেটো চিলিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিল। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোতে তার খবর ও বড় বড় ছবি প্রকাশের পর সেন্ট নিকোলাস মিডল স্কুলের সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা তাকে "চাইনিজ গার্ল" বলে ডাকা শুরু করে।

লরেটোর যখন ১৩ বছর বয়স, তখন সে চীনা ভাষা শেখার জন্য একটি মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে এবং একটি নতুন জগৎ খুঁজে পায়। তারপর আনন্দিতভাবে নিজেই অধ্যয়ন শুরু করে। চীনা চরিত্র, শিল্প, সংস্কৃতি ও দর্শন লরেটোকে মুগ্ধ করে।

"যেহেতু আমি প্রথম চীনা ভাষার সংস্পর্শে এসেছি, আমি এই ভাষার প্রেমে পড়ি। আমার জন্য চীনা ভাষা শেখা আমার জীবনের একটি অঙ্গ।" লরেটো বলে, যখন সে বিরক্ত হয়, তখন অনলাইনে যায় এবং ঐতিহ্যবাহী চাইনিজ নাচ দেখে। "চীন সম্পর্কিত যে কোনও বিষয়ই আমাকে শান্ত করতে পারে; তা চীনা ভাষা শেখা বা চীনা সংগীত শোনা- যাই হোক না কেন।"

সেন্ট নিকোলাস মিডল স্কুল ২০১০ সাল থেকে চাইনিজ কোর্স শুরু করে। চ্যান্সেলার ভিক্টর রয়েস বলেন যে, ২০১০ সালে ৩৪জন শিক্ষার্থী চাইনিজ ক্লাসে ভর্তি হয় এবং ২০১৯ সালে চারশ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ছিল। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা চীনা শিক্ষকের সংখ্যাও এক থেকে তিন জনে উন্নীত হয়।

লরেটোর চীনা শিক্ষক ইয়াং ল্যান সাংবাদিকদের বলেন, লরেটো চীনা ভাষার প্রতি আগ্রহ বেশ দৃঢ় এবং চীনের প্রতি তার অনুভূতি বিশেষ ধরণের।

"চাইনিজ ব্রিজ" প্রতিযোগিতার প্রস্তুতির দিনগুলোতে, সে খুব কমই বিশ্রাম নিত। এমনকি বিশ্রামের দিন এবং ছুটির দিনেও, সে যথাযথভাবে চর্চা করত এবং গাইডেন্সের জন্য একজন চীনা শিক্ষকের খোঁজে দুই ঘণ্টা বাসে যাতায়াত করত! গত বছর, সে বিশ্ব মিডল স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য "চাইনিজ ব্রিজ" বা চাইনিজ দক্ষতা প্রতিযোগিতার ফাইনালে অংশ নিতে চীন এসেছিল। এই প্রথম লরেটো চিলির বাইরে কোনো দেশে পা রাখে। লরেটো বলে যে, চীনে তার তিন সপ্তাহ ভ্রমণে অনেক নতুন অভিজ্ঞতা হয়। "চিলিতে ফিরে আসার পরে আমি চাইনিজ ভাষা আরও ভালভাবে শেখার চেষ্টা করি। আমার ব্যাপকভাবে চিন্তাভাবনা সম্প্রসারণ হয় এবং সেখানে কেবল একটি লক্ষ্যই রয়েছে।"

শিক্ষকদের কাছ থেকে চাইনিজ শেখার পাশাপাশি, লরেটো স্কুলের টিউটরিং প্রোগ্রামেও অংশ নিয়েছিল। তিন বছর ধরে সে প্রতি শুক্রবার বিকেলে চার ও পাঁচ গ্রেডের শিশুদের চীনা শেখানোর জন্য দুই ঘণ্টা করে সময় দেয়। ক্লাসে সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮টি শিশুকে চীনা নার্সারি ছড়াগুলো শেখায়। তবে প্রায়শই তাদের সঙ্গে তার মনের কথাও শেয়ার করেছিল। তার কথাগুলো বাচ্চাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। দশ বছর বয়সী হোসেরো বলে: "আমার স্বপ্ন অনুবাদক হওয়া এবং ভবিষ্যতে চিলিতে চীনা ভাষা শেখানো"।

গত ১৫ ডিসেম্বর চীন ও চিলির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপিত হয়। লরেটো জানায় যে, দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ খাত শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের অনেক সুযোগ করে দিয়েছে। সে নিজেকে চীনের "সুপার ফ্যান" হিসাবে "খুব খুশি" বোধ করে। গত নভেম্বর মাসে, লরেটো হাই স্কুল পাস করে। পরের বছর, সে চীনে অধ্যয়নের জন্য বৃত্তি পায় এবং তা ব্যবহারের পরিকল্পনাও করেছে।

চ্যান্সেলার ভিক্টর রেয়েস বলেন যে, চীনা ভাষা শেখা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এর কৌশলগত তাত্পর্য রয়েছে। চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং চিলির বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ভালোভাবে চীনা ভাষা শেখা চিলির বাচ্চাদের জন্য আগামী বিশ্বের দরজা খুলে দেবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn