দক্ষিণ চীন সাগরে সমস্যা তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ফিলিপাইন: সিএমজি সম্পদকীয়
এপ্রিল ১৩: মার্কিন সময় ১১ এপ্রিল, ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ফিলিপাইন প্রথমবারের মতো ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করে। সম্মেলনের পরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয় দেশ তিনটি প্রতিরক্ষা বিষয়ক সহযোগিতা জোরদার করে কথিত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ও বিশ্বের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি এগিয়ে নিয়ে যাবে। তারা চীনের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার আভিযোগও এনেছে। দক্ষিণ চীন সাগর ও পূর্ব চীন সাগরে চীনের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ধারাবাহিক কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।
আসলে, দেশ তিনটির এমন বক্তব্য নতুন কোন ব্যাপার নয়। গেল কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বিরুদ্ধে কথিত ‘ছোট গ্রুপ’ তৈরি করে আসছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে গঠিত হয় গ্রুপ কোয়াড (QUAD), ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে গঠিত হয় গ্রুপ আক্কুস (AUKUS)। এ সংস্থাগুলো স্নায়ুযুদ্ধের চিন্তাভাবনায় গ্রুপ রাজনীতির প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য রক্ষা করতে সম্ভাব্য প্রতিযোগীদের দমন করার প্রচেষ্টার নজীর এগুলো।
বিশ্লেষকরা মনে করে, ফিলিপানকে সমর্থন করে দক্ষিণ চীন সাগরে সমস্যা সৃষ্টি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, যদি পূর্ব এশিয়া শান্ত থাকে তাহলে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের খবরদারির সুযোগ থাকে না। দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
অন্যদিকে দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ইশারায় ফিলিপাইন নানা সমস্যা তৈরি করছে। তারা এর মাধ্যমে আসলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা ও সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেতে চায়।
এবার ত্রিদেশীয় সম্মেলনের প্রাক্কালে, অনেক বিক্ষোভকারী হোয়াইট হাউসের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন। তারা সমালোচনা করে বলেন, এ ত্রিপক্ষীয় শীর্ষসম্মেলনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইনকে সার্বভৌমত্ব রক্ষার উস্কানি দিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনকে কোনঠাসা করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষ নয় এবং তাদের এতে তাদের হস্তক্ষেপ করাও উচিত নয়।
চীন সবসময় আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ড নিয়ে মতভেদ দূর করার নীতিতে অবিচল রয়েছে। তবে তার মানে এ নয় যে, কোনো কোনো দেশের অযৌক্তিক আচরণ সহ্য করবে বেইজিং। আসিয়ান দেশগুলোর চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ফিলিপাইনের বিরুদ্ধ-আচরণ এ অঞ্চলে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নয় বরং দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বয়ে আনবে।