বাংলা

পরমাণু দূষিত পানি সমুদ্রে নিঃসরণে জাপানের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত

CMGPublished: 2023-08-23 10:40:14
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

অগাস্ট ২৩: দেশ বিদেশের দৃঢ় প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ২২ অগাস্ট জাপান সরকার ঘোষণা করে যে, ২৪ অগাস্ট থেকে ফুকুশিমা পরমাণু দূষিত পানি সমুদ্রে নিঃসরণ করা হবে। জাপানের টোকিও বিদ্যুত্ কোম্পানি সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতি কাজও শুরু করেছে। এদিন জাপানি নাগরিকরা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসংলগ্ন দেশ জাপান সরকারের এ সিদ্ধান্তের দৃঢ় প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা মনে করে, জাপানের পরমাণু দূষিত পানির সমুদ্রে নিঃসরণের আচরণ দায়িত্বহীন, তা কেবল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে না, বরং ভয়াবহ দুর্যোগ সৃষ্টি করবে। সিএমজি সম্পাদকীয় বলেছে, এতে জাপানের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।

দুই বছর আগে জাপান সরকার দূষিত পানি সমুদ্রে নিঃসরণের পরিকল্পনা ঘোষণার পর ব্যাপক সমালোচনা ও সন্দেহ তৈরি হয়। পরে ফুকুশিমা স্থানীয় বাসিন্দা ও আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে জাপান সরকার জানায় যে, সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা হবার আগে তারা পরমাণু দূষিত পানি সমুদ্রে নিঃসরণ করবে না। তবে, গতকালের ওই ঘোষণা ভীষণ আপত্তিকর।

বস্তুত জাপান সরকার শুধু দেশটির নাগরিকদের সঙ্গেই প্রতারণা করে নি, বরং আন্তর্জাতিক সমাজের সামনে ‘পরমাণু দূষিত পানি সমুদ্রে নিঃসরণের নিরাপদ ধারণা’ প্রচার করেছে। জাপান সরকার ‘পরমাণু বর্জ্য পানিকে’ সুন্দর করে ‘পরমাণু বিশুদ্ধ পানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। জাপানের পত্রিকা ও টেলিভিশনও সংশ্লিষ্ট ‘পরমাণু বিশুদ্ধ পানির’ নিরাপত্তার বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করেছে, যাতে বিভিন্ন পক্ষের প্রতিবাদ বন্ধ করা যায়।

অন্যদিক ব্যাপক টাকা দিয়ে পরমাণু দূষিত পানির সমুদ্রে নিঃসরণে ‘আন্তর্জাতিক পাস’ ক্রয় করা হচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে আইএইএ’র সংশ্লিষ্ট পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশের আগে জাপান সরকার প্রতিবেদনের খসড়া জেনে নেয় এবং অনেক সংশোধনী প্রস্তাব দেয়। আইএইএ’র সচিবালয়ের কর্মীদের কাছে ১০ লাখেরও বেশি ইউরো ঘুষ দেয় জাপান। ফলে আইএইএ’র প্রতিবেদনেও বিশেষজ্ঞদের প্রকৃত মতামত পাওয়া যায় নি।

তবে জাপান সরকারের এসব পদক্ষেপ পরমাণু দূষিত পানি নিঃসরণের বাস্তবতা বিকৃত করতে পারে নি। এ দূষিত পানির মধ্যে ব্যাপক তেজস্ক্রিয় উপাদান রয়েছে, যা প্রশান্ত মহাসাগর ও বিশ্বের সমুদ্রে প্রবেশ করবে। ফলে সামুদ্রিক পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য অতুলনীয় ক্ষতি হবে। জাপান সরকারের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, পরমাণু দূষিত পানি বিশুদ্ধ হলেও প্রায় ৭০ শতাংশ জল সরাসরি নিঃসরণ করা যাবে না। এ অবস্থায় জাপানের পরমাণু দূষিত পানির নিঃসরণ আচরণ অগ্রহণযোগ্য। গ্রিনপিস বিশেষজ্ঞ শাওন বার্নি আহ্বান জানান যে, জাপান সরকারের উচিত মানব অধিকার লঙ্ঘনকারী আচরণ বন্ধ করা।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn