বাংলা

চীনের বিশাল বাজার ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর সুবিধা

CMGPublished: 2023-08-16 14:34:33
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

বর্তমানে চীনে রয়েছে ১.৮ লাখ কফিসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। ভবিষ্যতে চীনের কফিবাজার বৃদ্ধির ধারা বজায় রাখবে। রাশিয়ার স্পুটনিক বার্তাসংস্থা সম্প্রতি এক নিবন্ধে চীনের কফিবাজারের প্রাণশক্তিকে এভাবে বর্ণনা করে। এটি চীনের ভোগবাজার পুনরুদ্ধারের মাত্র একটি উদাহরণ।

চীনের সরকার ১৫ আগস্ট এক পরিসংখ্যানে জানিয়েছে, চীনের অর্থনীতি অব্যাহতভাবে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। এরই মধ্যে পরিষেবা খাতে ভোগ বৃদ্ধির চমক দেখা যাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে পরিষেবা খাতে বিক্রির পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০.৩ শতাংশ বেশি ছিল।

গরমের ছুটিতে পর্যটন, সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক ভ্রমণ বৃদ্ধির কল্যাণে সংশ্লিষ্ট পরিষেবা খাতে ভোগ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সামাজিক ভোগ্যপণ্য বিক্রির পরিমাণও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.৩ শতাংশ বেড়েছে। ভোগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নির্ণায়ক চালিকাশক্তি। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গতি দুর্বল। এ অবস্থায় চীনের ভোগবাজার বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কী সুযোগ দিতে পারে?

আগে চীনে ভোগবাজারে পণ্যের ভোগ ছিল বেশি। বর্তমানে পরিষেবা ভোগের পরিমাণ বেড়ে প্রায় সমান হয়েছে। চীনা নাগরিকদের গড় ব্যয়ের মধ্যে পরিষেবা খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ভোগ-কাঠামোর রূপান্তরে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন বিকল্প সৃষ্টি হয়েছে।

কিছুদিন আগে বৈদেশিক ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ আরও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে, চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ ২৪-দফা নীতিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে অনেক বিষয় পরিষেবা খাতে উন্মুক্তকরণ বাড়ানোসম্পর্কিত। বিশ্লেষকরা বলছেন, টেলিকম, ব্যাংকিং ও জৈব চিকিত্সাসহ নানান খাতকে আরও উন্মুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যার অর্থ চীনের পরিষেবা খাতে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ বেড়েছে।

এ ছাড়া, ভোগ পুনরুদ্ধার ও জোরদার করতে হলে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য ও পরিষেবা চাই। ভোক্তাদের হালনাগাদ চাহিদা মেটাতে হবে। গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য ও পরিষেবা দিতে হলে উদ্ভাবন প্রয়োজন। জাপানের নিহন কেইজাই শিমবুন ওয়েসাইটে সম্প্রতি বলা হয়েছে, ২০২২ সালে চীনে স্টক তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে গবেষণায় মোট ১৬৪ হাজার ১৯০ কোটি ইউয়ান ব্যয় করা হয়েছে। ৫ বছরের মধ্যে এটা ১.৬ গুণ বেড়েছে। কিছু কিছু চীনা প্রতিষ্ঠানে গবেষণাকর্মীর সংখ্যা মোট সংখ্যার ৯০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ২০২২ সালে বিশ্ব উদ্ভাবন সূচকের তালিকায় চীনের অবস্থান ছিল ১১, যা ৩৬টি মাঝারি ও উচ্চ আয়ের দেশের মধ্যে চীনকে নিয়ে গেছে শীর্ষে।

উদ্ভাবনের উর্বর মাটি হিসেবে চীন বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাপকভাবে আকর্ষণ করছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে সিলেমের চীনা গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র এবং স্নেইডারের চীনা অটোমেশন রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট সেন্টার পরপর উদ্বোধন করা হয়। গত মে মাসে ভলভোর শাংহাই নকশাকেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। ইউনিলিভারের হাই-অ্যান্ড পোশাক ব্র্যান্ড থিয়ানচিনে এশিয়ান রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান চীনের উদ্ভাবনের সুযোগ গ্রহণ করছে।

চীনের আর্থিকনীতিও বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আকর্ষণীয়। বর্তমান বিশ্বে বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। কিছু পশ্চিমা দেশ হঠাত্ করে আর্থিকনীতি পরিবর্তন করে। তবে, চীন স্থিতিশীল ও স্থায়ী নীতি কার্যকর করে আসছে, যা বিদেশী ব্যবসায়ীদেরকে আস্থা বাড়িয়েছে। গত বছরের শেষ দিকে চীনের কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক কর্মসভায় ‘ভোগ পুনরুদ্ধার ও বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার’ কথা বলা হয়। চলতি বছর চীন সরকার ধারাবাহিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভোগ বাড়াবে।

আন্তর্জাতিক পরিবেশ এখনও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। চীন কখনও অর্থনীতির এ চ্যালেঞ্জকে অস্বীকার করে না। তবে, এর মধ্যেও চীনের অর্থনীতি দৃঢ় পায়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চীনের অর্থনীতি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ কাঠিয়ে গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়ন সাধনে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়।

১৬ আগস্ট, ২০২৩

চায়না মিডিয়া গ্রুপ(সিএমজি) থেকে ওয়াং তান হোং রুবি

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn