যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিংয়ে অবনমন
অগাস্ট ৪: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং শীর্ষ স্তর ‘এএএ’ (ট্রিপল এ) থেকে এক ধাপ কমিয়ে ‘এএ+’ (ডাবল এ প্লাস)-এতে এনেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ফিচ। দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থাপনার কারণে এটি করা হয়েছে বলে ফিচ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পয়লা অগাস্ট ফিচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও ঋণ ব্যবস্থাপনার মানে ধারাবাহিক অবনতি ঘটেছে। ফলে মার্কিন সরকারের আর্থিক প্রশাসনের দক্ষতার ব্যাপারে মানুষের সন্দেহ তৈরি হয়েছে, যেটি ওয়াশিংটনের জন্য একটি সতর্কবার্তা।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংগ্রাম হলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির একটি স্বতন্ত্র দিক। মার্কিন ঋণ সংকট নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধ চলেছে। যদিও শেষ মুহূর্তে তাদের মধ্যে একটি মতৈক্য হয়েছে, তবে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে দুই দলের মধ্যে আবার ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা দিয়েছে।
এর পাশাপাশি ফিচ মনে করছে আগামী ৩ বছর যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক ক্ষয়, ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণের বোঝা এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার চিত্র চলতে থাকবে। সেটি মার্কিন সরকারের জন্য দ্বিতীয় সতর্কবার্তা।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েসবাইট সূত্রে জানা গেছে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত মার্কিন সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ দেশটির নাগরিকদের মাথাপিছু ঋণ প্রায় ১ লাখ ডলার। দেশটি ঋণের এ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে প্রত্যাশার চেয়ে ৯ বছর আগে। ২০১১ সালে মার্কিন সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার, বর্তমানে সেটি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
তাছাড়া, মার্কিন ডলারমুক্ত বাণিজ্যের জন্য বিভিন্ন দেশের প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিটের জন্য বড় ঝুঁকি। ফিচের প্রতিবেদনের কারণে অনেক উন্নত বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলার ব্যবহারের পূর্বশর্ত সরকারের ক্রেডিট। সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অবশ্যই নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশ মার্কিন ডলারমুক্ত বাণিজ্যের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তবে ফিচের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে দ্বিমত পোষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন। তিনি এটিকে ‘স্বেচ্ছাচারী ও পুরনো তথ্যের ভিত্তিতে করা রিপোর্ট’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে রাজনৈতিক দলের বিবাদ আর্থিক মন্দা মোকাবিলার জন্য সহায়ক নয়, সঠিক পদ্ধতিতে দেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া খুব জরুরি।