বাংলা

সিএমজি সম্পাদকীয়: চীন ও মধ্য এশিয়ার ‘হাতে হাত মিলিয়ে অগ্রসর’ হওয়ার প্রেরণা কী?

CMGPublished: 2023-05-17 13:23:22
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মে ১৭: ১৮ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রথম চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন চীনের শানসি প্রদেশের সি’আন শহরে অনুষ্ঠিত হবে। একত্রিশ বছর আগে চীন ও মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এই প্রথমবারের মতো শীর্ষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। এক শতাব্দীতে বিশ্বের অভূতপূর্ব বড় পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে প্রাচীন সিল্ক রোডের সূচনা-স্থানে ছয়টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মিলন অসাধারণ তাত্পর্যপূর্ণ।

"ভাল প্রতিবেশী, ভাল বন্ধু, ভাল অংশীদার, ভাল ভাই" – এ হলো চীন ও মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের সম্পর্কের একটি সত্য চিত্র। ১৯৯২ সালে চীন ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের পরীক্ষাকে প্রতিহত করেছে। ‘ভাল-প্রতিবেশী’ বন্ধুত্ব থেকে তাদের সম্পর্কের উত্তরণ হয়েছে কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা দ্রুত লেনে প্রবেশ করেছে। এর পেছনে অনুপ্রেরণা কী?

প্রথমত, রাষ্ট্রপ্রধানের কূটনৈতিক নেতৃত্বের কারণে। বিগত ১০ বছরে, চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সাতবার মধ্য এশিয়া সফর করেছেন; বুখারা, সমরকন্দ ও প্রাচীন সিল্ক রোড বরাবর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে পায়ের ছাপ রেখেছেন। মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও বেইজিং, সাংহাই, ছিংতাও ও চীনের আরও অনেক জায়গা সফর করেছেন। বর্তমানে চীন ও মধ্য এশিয়া উভয়ই উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। চীন চীনা-শৈলীর আধুনিকীকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোও উন্নয়ন কৌশল জোরদারে মনোযোগ দিচ্ছে এবং চীনের সাথে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য উন্মুখ তারা। একই সময়ে, গোটা দেশ শতাব্দী পরিবর্তনের প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছে এবং তাদের যৌথভাবে চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠার আকাঙ্ক্ষা আরও শক্তিশালী হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রথম চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে দুই পক্ষের মধ্যে কৌশলগত পারস্পরিক আস্থা জোরদার হবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো সম্প্রসারিত হবে।

মধ্য এশিয়ার দেশগুলো স্থলবেষ্টিত; উন্নয়ন তাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। চীন ও মধ্য এশিয়া এক পক্ষ অন্য পক্ষের অর্থনৈতিক পরিপূরক। বিশেষ করে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যখন ২০১৩ সালে কাজাখস্তান সফর করেন, তখন তিনি প্রথমবারের মতো যৌথভাবে ‘সিল্ক রোড ইকোনমিক বেল্ট’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ উত্থাপন করেন; বিশাল পারস্পরিক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করেন।

মধ্য এশিযার বন্ধুরা প্রায়ই বলেন যে, মধ্য এশিয়া সমুদ্র থেকে অনেক দূরে হলেও, "আমরা চীনের কাছাকাছি এবং চীনের অত্যন্ত বড় মার্কেট আমাদের সমুদ্র।" চীন ও মধ্য এশিয়া নতুন শক্তি, ডিজিটাল অর্থনীতি, উচ্চ প্রযুক্তি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করছে। মধ্য এশিয়া শুধুমাত্র ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের সুচনা-স্থান নয়, একটি ফলাফল দৃষ্টান্ত এলাকাও বটে।

হাজার বছরের বন্ধুত্ব ও বাস্তব সহযোগিতা চীন ও মধ্য এশিয়ার মানুষের হৃদয়কে আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। চীন ও মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ উন্নয়নশীল দেশ, এবং তারা সকলেই দৃঢ়ভাবে বহুপাক্ষিকতা ও আন্তর্জাতিক আইনের স্বীকৃত নিয়মগুলোকে সমর্থন করে এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার মতো মূল স্বার্থ রক্ষায় একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মতো দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মের ভিত্তিতে, চীন ও মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ ‘তিন শক্তির’ মোকাবিলায় কার্যকরভাবে আঞ্চলিক ও বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে যৌথভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।

"মিলিত শক্তি একগুঁয়ে পাথরকে লাভায় পরিণত করতে পারে।" এটি তুর্কমেনিস্তানের একটি বিখ্যাত কবিতা। গত ৩০ বছরে, চীন ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো সব সময় এক পক্ষ অন্য পক্ষকে সম্মান করেছে, ভাল-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব বজায় রেখেছে, একে অপরকে কঠিন অবস্থায় সাহায্য করেছে, পারস্পরিক সুবিধা ও উভয়ের জন্য লাভজনক ফলাফল অর্জন করেছে এবং একটি নতুন ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উদাহরণ স্থাপন করেছে। আজ, ছয়টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ভবিষ্যত উন্নয়নের সন্ধান করতে এবং যৌথভাবে চীন-মধ্য এশিয়ার একটি ভবিষ্যত নিয়ে একটি ঘনিষ্ঠ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার জন্য সি’আন শহরে সমবেত হচ্ছেন, যা অবশ্যই পরবর্তী ‘সোনার ৩০ বর্ষ’ তৈরি করবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn