বাংলা

রাজনৈতিক পদ্ধতি ইউক্রেন সংকট সমাধানের সঠিক উপায়: সিআরআই সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2023-02-25 19:20:33
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

ফেব্রুয়ারি ২৫: গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন সংকট শুরুর এক বছর পূর্তি হয়। বিগত এক বছরে, এ সংকট শুধু ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে, তা নয়, বরং বিশ্বের জন্যও আরও বেশি অনিশ্চয়তা ও অনিরাপদ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে: কিভাবে এ সমস্যার সমাধান করা যায়? যুদ্ধবিরতি কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায়? এ সব প্রশ্নের উত্তর দিতেই, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চীন ‘রাজনৈতিক পদ্ধতিতে ইউক্রেন সংকট সমাধানবিষয়ক চীনা অবস্থান’ শীর্ষক ধারণাপত্র প্রকাশ করে। এ ধারণাপত্র ইউক্রেন সংকট সমাধানে চীনা প্রস্তাব।

বিগত এক বছরে ইউক্রেন সংকটের বৈশ্বিক প্রভাব চিন্তা করলে, চীনের এই প্রস্তাবের মূল্য ও অর্থ আরও স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা যাবে। এ সংকটে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বিশ্বের জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ-ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, পারমাণবিক নিরাপত্তা গুরুতর হুমকির মুখে পড়েছে, এবং বিশ্বায়নের প্রক্রিয়াও মুখ থুবড়ে পড়েছে।

ইউক্রেন সংকট বিশ্বের জন্য একটি সতর্কবার্তা। এই বার্তা বলছে: এই যুগে সংঘর্ষ ও যুদ্ধে কেউ জয়ী হতে পারে না; সংলাপ ও আলোচনা হচ্ছে সংকট মোকাবিলার একমাত্র পথ।

ইউক্রেন সংকট সমাধানের জন্য চীন কাজ করে আসছে। চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ ব্যাপারে ধারাবাহিক প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। তিনি রাজনৈতিক পদ্ধতিতে ইউক্রেন সংকট সমাধানের সঠিক পথ দেখিয়েছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত চীনের ‘রাজনৈতিক পদ্ধতিতে ইউক্রেন সংকট সমাধানবিষয়ক চীনা অবস্থান’ শীর্ষক ধারণাপত্র রাজনৈতিক পদ্ধতিতে ইউক্রেন সংকট সমাধানের লক্ষ্যে উত্থাপিত একটি সার্বিক প্রস্তাব। এতে মোট ১২টি বিষয় স্থান পেয়েছে, যা শান্তির জন্য বড় দেশ হিসেবে চীনের আকাঙ্খার প্রতিফলন।

ইউক্রেন সংকটে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো ‘আগুনে ঘি ঢালার’ ভূমিকা পালন করে আসছে। তারা এ সংকটের সূত্রপাত ঘটিয়েছে এবং পরিস্থিতিকে দিন দিন আরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে সম্ভাব্য সবকিছুই করছে। সমস্যার সত্যিকারের সমাধানের আগে এই বিষয়টিকে আমলে নিতে হবে। ‘স্নায়ুযুদ্ধের চিন্তাধারা ত্যাগ করা’, “একতরফা নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করা”-সহ বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে চীন। ইউক্রেন সমস্যার সমাধানের জন্য এসব প্রস্তাব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববাসী এ থেকে বুঝতে পারবে যে, ইউক্রেন সংকটের মূল উত্স আসলে কী। এ ক্ষেত্রে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর উচিত আত্মসমালোচনা করা।

পাশাপাশি, বেসামরিক লোকজন ও যুদ্ধবন্দিদের রক্ষা করা, শস্য রফতানির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করাসহ আরও প্রস্তাব দিয়েছে চীন। এসব প্রস্তাবে মানবজাতির জন্য চীনের আবেগ ও উদ্বেগ প্রকাশিত হয়।

এ ছাড়া, চীন জোর দিয়ে আহ্বান জানায় যে, শিল্প-চেইনের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করা যাবে না। বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বানও জানায় চীন। যে-কোনো দেশের, যে-কোনো পরিস্থিতিতে, রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের বিরোধিতাও করে চীন।

বস্তুত, ইউক্রেন সংকট সমাধানের জন্য, পরিস্থিতিকে আরও জটিল করবে—এমন কাজ থেকে সকল পক্ষকে বিরত থাকতে হবে ও ঠাণ্ডা মাথায় শান্তির জন্য কাজ করে যেতে হবে। সংকট সমাধানে চীন কার্যকর প্রস্তাব দিয়েছে এবং নিজের দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর উচিত নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করা।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn