বাংলা

চাগোস দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়ে বিরোধ মেটানোর পর, মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ ইস্যুর মুখোমুখি হবে ব্রিটেন: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2023-01-03 21:27:26
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জানুয়ারি ৩: ২০২৩ সালের প্রথম দিনে, মধ্য ভারত মহাসাগরের চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা একটি সুসংবাদ পেয়েছেন। মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগনাথ ঘোষণা করেছেন যে, তিনি বিতর্কিত চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব নিয়ে যুক্তরাজ্যের সাথে আলোচনা শুরু করেছেন। এর মানে, চাগোস দ্বীপপুঞ্জের মরিশাসে প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আশা করে, চাগোস দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়ে মতবিরোধ কেটে যাওয়ার পর, মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আর্জেন্টিনার সাথে আলোচনা শুরু করবে ব্রিটেন।

ব্রিটেন একসময় সবচেয়ে বেশি বিদেশী উপনিবেশের অধিকারী ইউরোপীয় শক্তি ছিল।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, পশ্চিমা ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, কিন্তু উপনিবেশবাদের ভূতটি থেকে যায়।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এই মর্মে রায় দেয় যে, চাগোস দ্বীপপুঞ্জে ব্রিটেনের দখল অবৈধ। একই বছরের মে মাসে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাব পাস করে। প্রস্তাবে ব্রিটেনকে ছয় মাসের মধ্যে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসকে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু ব্রিটেন আজ পর্যন্ত সেটা করেনি।

গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং দেশীয় ঔপনিবেশিক বিরোধী গোষ্ঠীগুলির চাপের মধ্যে, যুক্তরাজ্য জানিয়েছে যে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে মরিশাসের সাথে আলোচনা করবে এবং এই বছরের প্রথম দিকে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।

গত বছরের নভেম্বরে, যুক্তরাজ্যের রাজকুমারী অ্যান মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জে একটি আকস্মিক সফর করেন। ক্রিসমাস সময়কালের পরপরই, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাক মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জে একটি বক্তৃতা দেন, ঔপনিবেশিক নীতির পুনর্নিশ্চিত করেন এবং ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত করেন, যা বহির্বিশ্ব থেকে সমালোচনার সম্মুখীন হয়।

মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ ইস্যুতে, জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক রেজুলেশনগুলি স্পষ্ট, এবং যুক্তরাজ্যের এ ব্যাপারে সামনে না এগুনোর কোনো কারণ নেই। ১৯৬৫ সালে,জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০৬৫ নম্বর প্রস্তাব পাস করে, যাতে মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ ইস্যুকে "উপনিবেশমুক্ত" বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ব্রিটেন ও আর্জেন্টিনাকে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ সমাধানের আহ্বান জানানো হয়।

ঔপনিবেশিকতাসংক্রান্ত জাতিসংঘের বিশেষ কমিটি ব্রিটিশ সরকারকে আর্জেন্টিনার সাথে আলোচনা করার জন্য ৩০টিরও বেশি প্রস্তাবে আহ্বান জানিয়েছে। তবে যুক্তরাজ্য এ বিষয়ে কান দেয়নি। আজ ব্রিটেন, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসাবে, স্পষ্টতই জাতিসংঘের প্রস্তাব লঙ্ঘন করে মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ দখল করে রেখেছে।

মানবসভ্যতার ইতিহাসে উপনিবেশবাদ একটি দাগ, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আর্জেন্টিনাকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করেনি। এটা আশা করা যায় যে, ব্রিটিশ পক্ষ চাগোস দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা সমস্যার সমাধানের পরে মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ সমস্যাটির মুখোমুখি হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ আর্জেন্টিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আলোচনা শুরু করবে। আজ একবিংশ শতাব্দীতে উপনিবেশবাদের কোনো স্থান নেই।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn