প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপ দেশসমূহ যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক বৈরি তৎপরতার জায়গা নয়: সিএমজি
সেপ্টেম্বর ২৪: গত ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে ‘দ্য পার্টনারস ইন দ্য ব্লু প্যাসিফিক’ (পিবিপি)-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে এক ভাষণ দিয়েছেন।
ভাষণে তিনি যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলের উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও কাঠামোগত গঠনসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে মনোযোগী হবে বলে উল্লেখ করেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর এ ভাষণ ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম যুক্তরাষ্ট্র-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর শীর্ষসম্মেলনের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
কথিত পিবিপি চলতি বছরের জুন মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান এর সদস্য। ভারত হচ্ছে পর্যবেক্ষক দেশ। তা থেকে বুঝা যায় যে এ সংস্থা চার-পক্ষীয় ব্যবস্থা। একে অকাস জোটের কপিও বলা যায়।
সংস্থাটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের কথা জানায়। তবে, তার লক্ষ্য সরল নয়। মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, পিবিপি’র লক্ষ্য দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব রোধ করা। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দীর্ঘকাল ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নজরে ছিল না। এখন এটার ওপর দৃষ্টি রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য স্টিভ চাবট বলেন, চীন ও সলোমন দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে বছরের শুরুতে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ ভূ-কৌশলগত দ্বন্দ্বের ভিত্তিতে বৈরিতা সৃষ্টির তৎপরতা চালাচ্ছে। লক্ষ্য যদি সরল না হয়, তাহলে তা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
ফিজির প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক বাইনিমারামা বলেছেন, “ভূ-রাজনীতি নয়, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের সবচেয়ে দুশ্চিন্তা”। অস্ট্রেলিয়ার লৌওয়েই ইন্সটিটিউটের গবেষক মিহাই সোরা বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নেতারা ভূ-রাজনীতির দ্বন্দ্বের দাবা হিসেবে ব্যবহার হতে অপছন্দ করেন।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর জন্য বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা খুব জরুরি। সত্যি দেশগুলোর উন্নয়নে সহযোগিতা চালাতে চাইলে, যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত দেশগুলোর সঙ্গে সমতা-সম্পন্ন ও কল্যাণকর সহযোগিতা গড়ে তুলার পাশাপাশি তাদের স্বাধীনভাবে বৈদেশিক আদান-প্রদানের অধিকারকে সম্মান করা।