বাংলা

মিথ্যা আইনের কারণে সংকটে পড়বে খোদ যুক্তরাষ্ট্র: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2022-06-22 11:01:12
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুন ২২: গতকাল (মঙ্গলবার) যুক্তরাষ্ট্র কথিত ‘উইগুর জাতির বাধ্যতামূলক শ্রম প্রতিরোধ আইন’ কার্যকর করেছে। এ মিথ্যা আইনে বাধ্যতামূলক শ্রমে উত্পাদিত নয় বলে প্রমাণিত না হলে চীনের সিনচিয়াং থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সিনচিয়াংয়ের মানবাধিকারকে অপমান করেছে। এটি মানবাধিকারকে অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগের মার্কিন নতুন কর্মকান্ড। যার লক্ষ্য সিনচিয়াংয়ের তুলা, টমেটো এবং সৌরশক্তিসহ নানা সুবিধাজনক শিল্পকে দমন করা এবং চীনের উন্নয়ন রোধ করা। তবে দেশটি দ্রুত লক্ষ্য করবে যে, সে সব অবরোধের ফলাফল তারা নিজেরাও বহন করবে। গতকাল চায়না মিডিয়া গ্রুপের এক সম্পাদকীয়তে এ মন্তব্য করা হয়েছে।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, কথিত বাধ্যতামূলক শ্রম পুরোপুরি চীন-বিরোধী শক্তির তৈরি মিথ্যাচার। তুলা উত্পাদন দিয়ে উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে যে, সিনচিয়াংয়ে তুলা রোপনের সময় অধিকাংশ অঞ্চলে যন্ত্র ব্যবহারের হার ৯০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। কিছু কিছু অঞ্চলে রোপণ যন্ত্র এমনকি পেই তৌ নেভিগেশন ব্যবস্থা স্থাপিত আছে এবং তাতে কোনো চালক থাকে না। তাই, বাধ্যতামূলক শ্রমের কথা কিভাবে আসলো? সম্প্রতি গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া ব্র্যান্ড স্কেচারসের চীনে উত্পাদিত কিছু জুতা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক অফিসে আটকা পড়েছে। ফলে স্কেচারসের স্বাধীন তদন্তকারীরা এ নিয়ে তদন্ত করেছে। এসময় তারা চীনের সহযোগী কোম্পানিতে কোনো বাধ্যতামূলক শ্রমের প্রমাণ পায়নি। সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষণ মতে, ঊনবিংশ শতাব্দিতে দেশটিতে বাগান মালিকরা কালো দাসদের তুলা সংগ্রহে বাধ্য করার ইতিহাসের কারণে বর্তমান সিনচিয়াং নিয়ে এভাবে ভাবছে মার্কিন কিছু লোক। এটি একেবারেই অযৌক্তিক।

আসলে সিনচিয়াংয়ে কর্মসংস্থানের অবস্থা কেমন? এ সম্পর্কে মার্কিন রাজনীতিকরা একদম দৃষ্টি রাখে না। তারা কেবল চায়, মানবাধিকারের অজুহাতে মিথ্যাচার করে চীনকে অপমান করতে এবং সিনচিয়াংয়ের অগ্রসর শিল্পকে দমন করতে। তারা চায় বিশ্বজুড়ে সরবরাহ-চেইন থেকে সিনচিয়াং এমনকি পুরো চীনকে বাদ দিতে, যাতে সিনচিয়াংয়ের মধ্য দিয়ে চীনকে রোধ করা যায়। সম্প্রতি কোনো কোনো গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন এক কর্মকর্তা একটি অনুষ্ঠানে স্বীকার করে বলেছেন, সিনচিয়াংয়ে বাধ্যতামূলক শ্রম, গণহত্যা এবং মানবাধিকার নিয়ে দোষারোপ করা একটি কার্যকর পদ্ধতি, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য চীনকে সংকটে ফেলে দেওয়া।

যুক্তরাষ্ট্র কি তার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারবে? বিশ্লেষকদের মতে, কথিত উইগুর জাতির বাধ্যতামূলক শ্রম প্রতিরোধ আইন বাস্তবায়নের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক শৃঙ্খলা নষ্ট হয়েছে এবং বিশ্ব শিল্প ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা লঙ্ঘন হয়েছে। সিনচিয়াংয়ের কিছু বাণিজ্যিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হতে পারে। তবে চীনের উন্নয়ন রোধ করা অসম্ভব।

সিনচিয়াংয়ের তুলা থেকে জানা যায়, একদিকে, চীনের নিজস্ব উন্নত বস্ত্রশিল্প রয়েছে। তুলার চাহিদা অনেক বেশি। ২০২১ সালে তুলা আমদানির পরিমাণ ২৩ লাখ ৪২ হাজার টন ছাড়িয়েছে। তাতে বলা হয়, চীনে পর্যাপ্ত বাজার রয়েছে। অন্যদিকে, সিনচিয়াংয়ের তুলার গুণ বিশ্বের শীর্ষ স্থানে রয়েছে। বিশ্বের অনেক বড় ব্র্যান্ড স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ যে, সিনচিয়াং বরাবরই উন্মুক্ত পথে অবিচল রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে সিনচিয়াংয়ে বৈদেশিক আমদানি রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭,৪১০ কোটি ইউয়ান, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০.৯ শতাংশ বেশি। তাতে স্পষ্ট যে, বিশাল চীনা বাজার ও বিশ্ব বাজারের চাহিদা সিনচিয়াংয়ের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য সুযোগ তৈরি করবে। যুক্তরাষ্ট্র নিজের দরজা বন্ধ করলেও সিনচিয়াংয়ের পণ্যের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না।

বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র এ মিথ্যা বিলের কারণে সংকটে পড়তে পারে। মার্কিন শ্রম অধিকার সমিতি অনুমান করে জানায়, মার্কিন ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতিবছর ২,০০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের ১৫০ কোটি সিনচিয়াংয়ের ফ্যাব্রিক দিয়ে তৈরি পোষাক আমদানি করে। মার্কিন পলিটিকো ওয়েবসাইটের মতে, বিলটি কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতা এবং প্রস্তুতকারকদের ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। কোনো কোনো বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পোষাক শিল্পে ব্যাপক আঘাত আসবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn