যুক্তরাষ্ট্রের ডাকাতির কবলে আফগান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ!
যুক্তরাষ্ট্রে গচ্ছিত রাখা আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র জব্দ করে রাখে। এখন তা নিজেদের অর্থের মতো করে নানা খাতে বন্টন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব পরাশক্তি। কিন্তু আফগান জনগণের অর্থ নিয়ে এমন কাণ্ডকে ‘ডাকাতি’ হিসেবে অভিহিত করছেন অনেক বিশ্লেষক।
গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে এসে একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। আফগানিস্তানের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার জন্য স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭ বিলিয়ন ডলার জমা রেখেছিল। যে অর্থের মালিক একমাত্র আফগান জনগণ ছাড়া আর কেউ নয়। কিন্তু তালিবান ক্ষমতায় আসার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র এই অর্থ হাতিয়ে নেয়। অথচ সারা বিশ্ব জানে, তালিবানকে যুক্তরাষ্ট্রই দোহা চুক্তির মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে এবং আফগানিস্তান থেকে নিজেদের নিরাপদ পলায়ন সুনিশ্চিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র শুরুতে এই ৭ বিলিয়ন ডরার জব্দ করে। সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই অর্থ বিভিন্ন খাতে বন্টন করে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এমন আদেশ বিশ্বকে অবাক করেছে। সেসঙ্গে আফগান জনগণকে মর্মাহত করেছে। কারণ বাইডেন কোনোভাবেই আরেকটি দেশের জনগণের অর্থ বন্টন করতে পারেন না। অনেকে আবার একে রীতিমতো ‘ডাকাতি’ বলে অভিহিত করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এই অর্থকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। এর কিছু অংশ কুখ্যাত ৯/১১ এর শিকারদের ক্ষতিপূরণে ব্যবহার করা হবে এবং বাকি অংশ আফগানিস্তানে ভবিষ্যতে মানবিক সহায়তার জন্য একটি ট্রাস্ট তহবিলে স্থানান্তর করা হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের আফগান অন্তর্বর্তী সরকার তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আফগান সরকার বলেছে, প্রথমত, ৯/১১ ঘটনার পর ২০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। ঘটনার সাথে আফগান জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই এবং আফগানিস্তানের সবমানুষ এর মূল্য দিতে পারে না। ক্রমাগত যুদ্ধ এবং অস্থিরতা আফগানিস্তানের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশকে উদ্বাস্তুতে পরিণত করেছে। প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন আফগান সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রায় ২৩ মিলিয়ন মানুষ চরম ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩.২ মিলিয়ন শিশুও রয়েছে।