বাংলা

আফ্রিকার ‘ভাল জিনিসে’র চীনের ‘নতুন অধ্যায়’

CMGPublished: 2024-11-11 10:58:04
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

দক্ষিণ আফ্রিকার মণি, ইথিওপিয়ার কফি, কেনিয়ার তাজা ফুল এবং ঘানার চকলেট— সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফ্রিকায় চীনা পণ্য জনপ্রিয় হবার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত আফ্রিকার ‘ভালো জিনিস’ চীনে এসে, চীন-আফ্রিকা আর্থ-বাণিজ্যের ‘দ্বিমুখী প্রচেষ্টা’ স্বচক্ষে দেখছে।

হুনান প্রদেশ, চীন-আফ্রিকা বেসরকারি বিনিময় ও সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ অগ্রণী প্রান্ত হিসেবে, চীন-আফ্রিকা আর্থ-বাণিজ্য মেলা দীর্ঘকাল সেখানে অনুষ্ঠিত হয়ে উভয়পক্ষের জন্য বিনিময় ও উপলব্ধির জানালায় পরিণত হয়েছে। ছুটি বা কোন দিবসের সময়, রাজধানী ছাংশা’র মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী সেখানে অধ্যয়ন করতে যায়। তারা আফ্রিকার টোটেম হস্তশিল্পজাত তৈরী করার মাধ্যমে আফ্রিকার সংস্কৃতি, ইতিহাস ও শিল্প অনুভব করে। পণ্যভোগীরাও সেখানে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হীরা, রুবি ও নীলকান্তমণি কিনে। চীন-আফ্রিকা আর্থ-বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্রদর্শনী হলের অপারেটর আন সিন জানান, এখানে আসা মানুষেরা দক্ষিণ আফ্রিার হীরা, তানজানিয়ার নীলকান্তমণি, মিসরের মশলা, নাইজেরিয়ার চীনাবাদাম, গাম্বিয়ার তিল ও মাদাগাস্কারের ভ্যানিলা ইত্যাদি দেখতে পারেন। আফ্রিকান এ সব পণ্যের মাধ্যমে আফ্রিকার নান্দনিকতা অনুভব করা যায়।

চীনা বাজারে প্রবেশ করার পর আফ্রিকার কফি সৃজনশীল ‘স্থানীয়করণ’ পরিবর্তন ঘটে। চীনা তরুণ পণ্যভোগীর পছন্দ অর্জন করার কারণে, কোন কোন হুনান চা ব্র্যান্ড, আফ্রিকান কফি কাঁচামাল হিসেবে নতুন পানীয় উন্নয়ন করে। কোন কোন ব্র্যান্ড আফিকান কফি বৈশিষ্ট্য হিসেবে আফ্রিকান কফি ও হুনানের সিয়াংথান মধু সংযুক্ত করা নতুন পণ্য চালু করে, আফ্রিকান কফি’র ‘স্থানীয়করণ’ অনুশীলন করে।

বর্তমানে চীনের অভ্যন্তরীণ পানীয় ব্র্যান্ড অনলাইনে আফ্রিকার কফি বাগান মালিকের সঙ্গে সরাসরিভাবে যোগাযোগ করে, লেনদেন প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি সামগ্রিক মূল্য কমায়। আফ্রিকার কফি রোস্টিং কারখানা, কফি গভীর প্রক্রিয়াকরণ লাইনের নির্মাণ পরিকল্পনা আরো বেশি রকমের আফ্রিকান কফি বীজ চীনে প্রবেশ করতে সহায়ক হবে।

চলতি বছরের জুলাই চীনের প্রথম আফ্রিকান তাজা ফুল পুনরায় রপ্তানি বাণিজ্য ছাংশা’য় সম্পন্ন হবার সঙ্গে সঙ্গে কেনিয়া থেকে আমদানিকৃত ৪শ’ তাজা গোলাপী ফুল ছাংশা’র মাধ্যমে পুনরায় রপ্তানির পর উজবেকিস্তানে বিক্রি করা হয়েছে। ছাংশা হুয়াং হুয়া বিমানবন্দরের কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার ইয়ু ছিং জানান, শুল্ক বিভাগ বিশেষ করে ‘সবুজ চ্যানেল’ খুলে, প্রতিষ্ঠানগুলোর কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সময় কমিয়ে পুনরায় রপ্তানি বাণিজ্য ত্বরান্বিত করেছে। হুনান সি ইউয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লিমিডেট কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তি হুয়াং জিনান বলেন, ভবিষ্যতে কোম্পানি পুনরায় রপ্তানি বাণিজ্য রূপ কাজে লাগিয়ে কেনিয়ার আভাকাডো’র বিক্রি সুষ্ঠু করবে। এছাড়া তানজানিয়ার বাহারি মাছ আমদানি করতে চায়। চীন, আফ্রিকার উন্নতমানের ও বৈশিষ্ট্যময় কৃষি পণ্যের আমদানির ওপর গুরুত্ব দেয়। আফ্রিকা থেকে কৃষি পণ্যের আমদানি পরিমাণ ধারাবাহিক ৭ বছর ধরে বেড়েছে। ২০২৩ সালে আফ্রিকা থেকে চীন বাদাম, সবজি, ফুল ও ফলের বৃদ্ধি হার ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১৩০, ৩২, ১৪ ও ৭ শতাংশ বেড়েছে।

২০২৪ সালের প্রথমার্ধে আফ্রিকা থেকে চীনের আমদানি ছিল ৬০.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। উজ্জ্বল মণি থেকে সমৃদ্ধ স্বাদ পর্যন্ত, এক একটি পণ্যের কারণে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার দরজা আরো বড় হয়ে উঠে। চীন-আফ্রিকা বাণিজ্যের পারস্পরিক সুবিধা চীনা পণ্যভোগীদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি আফ্রিকান জনগণের জন্য বাস্তব আয় নিয়ে যায়।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn