বাংলা

চীনের উত্পাদন-শিল্প ক্রমশ উন্নত হচ্ছে

CMGPublished: 2024-10-12 14:35:47
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চীনের উত্পাদন শিল্পের বর্ধিত-মূল্য ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে অতিক্রম করার পর, উত্পাদন শিল্পের সামগ্রিক স্কেল ধারাবাহিকভাবে ১৪ বছর বিশ্বের প্রথম স্থানে ছিল। চীন এখন “বিশ্ব কারখানা” থেকে “বিশ্ব উদ্ভাবন কেন্দ্র”-এ পরিণত হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় চীনের উত্পাদন-শিল্প উন্নততর হয়েছে; চীন উত্পাদনের ‘বড় দেশ’ থেকে উত্পাদনের ‘শক্তিশালী দেশ’ হিসেবে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

চীনের তিনটি বড় এয়ারলাইনস কোম্পানিতে “সি ৯১৯ যুগ” শুরু হয়েছে; প্রথম দেশজ বড় পরিসরের ক্রুজ জাহাজ ‘অ্যাডোরা ম্যাজিক সিটি”র ব্যবসা চালু হয়েছে; ছাংএ-৬ মহাকাশযান চাঁদের অন্ধকার স্থানে অবতরণ করে, সেখান থেকে নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেছে; দেশজ বৃহত্তম ব্যাসের শিল্ড টানেলিং মেশিন “চিংহুয়া”-র ব্যবহার শুরু হয়েছে। এ সবকিছুই বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং চীনা উত্পাদনের “শক্তিশালী” বাস্তব শক্তি দেখিয়েছে।

৭৫ বছরের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে চীনের শিল্পে উলম্ফনমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। শিল্পের বর্ধিত-মূল্য ১৯৫২ সালের ১২ বিলিয়ন ইউয়ান থেকে ২০২৩ সালে ৩৯.৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে উন্নীত হয়েছে।

চীনের প্রধান শিল্পপণ্যের উত্পাদনের পরিমাণ সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ৫ শ প্রধান শিল্পপণ্যের মধ্যে চীনে উত্পাদিত হয় ৪০ শতাংশের বেশি। এক্ষেত্রে চীনের অবস্থান বিশ্বের শীর্ষে। ২০২৩ সালে চীনে গাড়ি উত্পাদিত হয় ৩.০১১ কোটি। এ খাতে চীন টানা ১৫ বছর থরে বিশ্বে প্রথম স্থানে আছে। মোবাইলফোন, মাইক্রোকম্পিউটার, রঙিন টিভি সেট, ও শিল্প রোবট উত্পাদন হয়েছে যথাক্রমে ১৫৭ কোটি, ৩৩ কোটি, ১৯ কোটি ও ৪.৩ লাখ সেট। প্রতিটি ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান বিশ্বের শীর্ষে।

চীনা উত্পাদন শিল্প দ্রুত উন্নত হচ্ছে। উত্পাদিত পণ্যের সরবরাহ-সামর্থ্যও স্পষ্টভাবে বেড়েছে। পানির নিচের রোবট ও ট্রেনসহ প্রযুক্তি এবং চৌম্বকীয় অনুরণন ও অতিস্বনক ইমেজের মতো উচ্চ প্রান্ত মেডিকেল ইমেজিং সরঞ্জাম আন্তর্জাতিক নেতৃত্বাধীন মানে আছে। টানা ১৪ বছর ধরে চীন জাহাজ নির্মাণ সমাপ্তি এবং হ্যান্ড অর্ডার ভলিউমের দিক দিয়ে বিশ্বে প্রথম স্থানে আছে। জাহাজশিল্পের বিশ্ববাজারের ৫০ শতাংশের বেশি চীনের দখলে আছে। চীন বিশ্বের “জাহাজ কারখানা”-য় পরিণত হচ্ছে।

অন্যদিকে, ২০০৯ সাল থেকে চীন বহু বছর ধরে, টানা বিশ্ব মালামাল বাণিজ্যের প্রথম রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আছে। চীনা উত্পাদনের আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা-ক্ষমতা বাড়ছে। নয়াচীন প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে, চীনা রপ্তানিকৃত পণ্যগুলির ৮০ শতাংশের বেশি ছিল প্রাথমিক পর্যায়ের পণ্য। ২০২৩ সালে যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক সামগ্রী রপ্তানির মোট পরিমাণ ছিল ৫৮.৫ শতাংশ। একই বছর চীন প্রথমবারের মতো বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র ১৮তম জাতীয় কংগ্রেস থেকে চীন আধুনিক শিল্পব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুততর করে; ঐতিহ্যগত শিল্পের রূপান্তর ও আপগ্রেড করেছে; প্রাধান্য শিল্প সুসংহত ও উন্নত করেছে; ট্র্যাকনির্ভর যানবাহন সাজ-সরঞ্জাম, বুদ্ধিমান নেটওয়ার্ক নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি, ফটোভোলটাইক ও লিথিয়াম ব্যাটারিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সমগ্র শিল্পচেইনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা-ক্ষমতা উন্নত করেছে। নবোদিত শিল্প বাড়িয়ে, জৈব উত্পাদন, বাণিজ্যিক মহাকাশযান ও নিম্ব-আকাশ অর্থনীতিতে নতুন প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে শিল্পের দূরদর্শী বিন্যাস ঘটিয়ে, মানবিক রোবট, ৬জি ও পারমাণবিক উত্পাদনসহ নতুন ক্ষেত্র বিন্যাস করা হবে।

চীনা উত্পাদনের ভিত্তি অব্যাহতভাবে দৃঢ় হয়ে উঠছে; বিশ্বের একমাত্র উত্পাদন শিল্পের পুরো শিল্পচেইন দেশে পরিণত হয়েছে চীন। শিল্পচেইন ও সরবরাহ-চেইনের স্বায়ত্তশাসিত ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য ক্ষমতা বাড়ছে। শিল্পচেইন ও সরবরাহ-চেইনের বলিষ্ঠতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা-ক্ষমতা ধারাবাহিকভাবে উন্নত হচ্ছে।

চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী চিন চুয়াংলোং জানান, যদিও চীনের শিল্পে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, তবুও বড় থেকে শক্তিশালী হবার গুরুত্বপূর্ণ সময়পর্বে রয়ে গেছে দেশ। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি ও শিল্পের মৌলিক দক্ষতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্পষ্ট দুর্বলতা আছে। ভবিষ্যতে অব্যাহতভাবে সংস্কার গভীরতর ও উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ, উচ্চমানের উন্নয়ন ও উচ্চমানের নিরাপত্তা সামগ্রিকভাবে পরিকল্পনা করে, ব্যাপকভাবে নতুন ধরনের শিল্পায়ন প্রচার করতে হবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn