চীন ও ভিয়েতনাম যৌথ নির্মিত জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র দেশটির উত্তরাঞ্চীয় পাহাড়ি অঞ্চলকে আলোকিত করছে
ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় পাহাড়ি অঞ্চলের লাও কাই প্রদেশের সা পা শহরে প্রবেশ করলে, এখানে-সেখানে দেখা যায় আলোর স্ট্রিং দিয়ে সাজানো দোকান। যখন রাত পড়ে, দেশটির সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী অধ্যূষিত শহরটি একটি উজ্জ্বল আলোকিত শহরে পরিণত হয় যা কখনোই ঘুমায় না।
আজকের এই সমৃদ্ধ দৃশ্যের সঙ্গে ১০-১২ বছর আগে নির্মিত সিও চং হো জলবিদ্যুত্ স্টেশনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। বিদ্যুত্ উত্পাদনের প্রথম দিন থেকে দিনের পর দিন জমিটি অব্যাহতভাবে প্রাণশক্তি পুনরুজ্জীবন বেগবান করছে।
সম্প্রতি জলবিদ্যুত্ স্টেশন প্রথম দফা অতিথিদের অভ্যর্থনা জানায়। ‘আই শো আসিয়ান’ চীন-আসিয়ান যুব গল্প ও কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিদেশী প্রকল্পের ফিল্ড পরিদর্শন কার্যক্রম ২৭ ও ২৮ আগস্ট ভিয়েতনামে গেছে। চীন, ভিয়েতনাম, ব্রিটেন ও কানাডা— চারটি দেশের তরুণ-তরুণী ভিয়েতনাম-চীন বিদ্যুত্ বিনিয়োগ কোম্পানি লিমিডেট ও সিও চং হো জলবিদ্যুত্ স্টেশনে পরিদর্শন করেছেন।
স্টেশনের কারখানার ব্যবস্থাপক নগুয়েন হং কোয়াং জানান, ২০১২ সালে স্টেশনটি অপারেশনে যায়। এর বার্ষিক গড় বিদ্যুত্ উত্পাদন পরিমাণ ১১.৮ কোটি কিলোওয়াট ঘন্টা এবং এটি ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় দূষণমুক্ত বিদ্যুত্ সরবরাহ করছে।
আলোচনাসভায় অংশ নেওয়া এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রমিক ইউনিয়নের ভাইস-চেয়ারম্যান বললেন, বিদ্যুত্শক্তি থাকলে, টিভি ও কম্পিউটার শিক্ষাদানে ব্যবহার করা হয়, যা শিক্ষার ধরণ সমৃদ্ধ করে পাহাড়ি গ্রামের শিশুদের বিশ্বকে দেখার জানালা খুলে দিয়েছে। এ ছাড়া ভিয়েতনমা-চীন বিদ্যুত্ বিনিয়োগ কোম্পানি লিমিডেট পাহাড়ের বাইরে থেকে সরাসরিভাবে বিদ্যুত্ স্টেশনগামী পথ নির্মাণ করেছে। নিকটবর্তী গ্রামের বাইরের সাথে সংযুক্ত নিরাপদ মসৃণ পথ আছে, অর্থনীতিও অব্যাহতভাবে উন্নয়ন হচ্ছে।
পরিদর্শন দলের সফর শেষে সূর্য অস্ত যায়। আশপাশের গ্রামগুলো পাহাড়ি রাতে পরপর আলো জ্বালায়। ভিয়েতনামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্লগার ডুং ক ট্যান মোবাইলফোন দিয়ে মাঝেমাঝে ছবি তুলেন। এর আগে তিনি কয়েক বার সা পা অঞ্চলে এসেছিলেন। কিন্তু এবার প্রথমবারের মতো সিও চং হো জলবিদ্যুত্ স্টেশনে এসে, সত্যিকারভাবে ভিয়েতনাম-চীন সহযোগিতার সাফল্য অনুভব করছেন।
সা পা শহরে ফিরে আসতে রাত হয়ে গেছে। স্থানীয় এক রেস্তোঁরায় ভিয়েতনামের সংখ্যালঘু জাতির পোশাক পরা এক অভিনতা বাঁশ দিয়ে চীনা সংগীত ‘চাঁদ আমার হৃদয় প্রতিনিধিত্ব করে’ বাজাচ্ছেন। সেখানে বিভিন্ন দেশের পর্যটক মিলিত হচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেক চীনা পর্যটক। “স্থিতিশীল বিদ্যুত্ সরবরাহের কারণে রেস্তোঁরার ব্যবসা খুবই ভাল। আমাদের স্থিতিশীল আয়ও আছে।” রেস্তোঁরার খাদ্য পরিবেশিকা নগুয়েন ল্যান আনহ বললেন কথাটি।