‘অবিস্মরণীয়’ নামক অভিনব ক্যাফে
চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের ছেং তু শহরের একটি নার্সিং হোমের এক কোণে অবস্থিত ‘অবিস্মরণীয়’ নামের ক্যাফেটি। বয়স্ক লোকেরা এখানে কফি তৈরি করে বিক্রি করেন। তারা এই বিশেষ উপায়ে বাইরের জগতের সঙ্গে সংযোগে রাখার চেষ্টা করেন। আজকের জীবন কথা অনুষ্ঠানে আমরা তাদের গল্প শুনবো।
কফি বিন পাউডার তৈরি করা, দুধ প্রস্তুত করা এবং সবশেষে কফির তরল যোগ করা পর্যন্ত, নার্সিং হোমে সমাজকর্মীদের সহায়তায়, ৮৪ বছর বয়সী তেই শিউ ইয়ু তার ‘দৈনিক কাজ’ কফি বানানো নিয়ে ব্যস্ত। নার্সিং হোমের রাস্তার পাশের একটি কোণে অবস্থিত ‘অবিস্মরণীয়’ ক্যাফেটি খুব বড় নয়, তবে এটি সুসজ্জিত। এখানে ল্যাটে, আমেরিকান স্টাইল এবং অন্যান্য তাজা কফি তৈরি করা যায়। বয়স্ক মানুষেরা দিনে সর্বোচ্চ কয়েক ডজন কাপ কফি তৈরি করতে পারেন। কিন্তু প্রতিবারই তারা এটি আবার তৈরি করতে গেলে, নার্সিং হোমের সমাজকর্মীদের শুরু থেকে তাদের শেখাতে হয়।
কফি শপটি মাত্র চার মিটার চওড়া। কিন্তু নার্সিং হোমের তেই শিউ ইয়ু’র মতো ডিমেনশিয়া আক্রান্ত অনেক বয়স্ক মানুষ প্রায়ই এখানে একসঙ্গে কফি তৈরি করতে জড়ো হন। ডিমেনশিয়া আক্রান্ত বা স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে তাঁরা কফি তৈরির ধাপ এবং প্রতি কাপ কফির দাম প্রায়ই ভুলে যান।
কর্মীদের উৎসাহে, তেই শিউ ইয়ু কিছু সময়ের জন্য একজন শিক্ষক হতে চেষ্টা করেছেন এবং আমাদের সাংবাদিককে কফি বানাতে নিয়ে যান। যদিও পদক্ষেপগুলো অসম্পূর্ণ ছিল এবং অনেক বিবরণ ভুলে গিয়েছেন, তিনি প্রক্রিয়া চলাকালীন দুর্দান্ত একাগ্রতা দেখিয়েছেন। কর্মীরা বলেন, কফি বানানো বয়স্কদের প্রয়োজনীয়তার অনুভূতি দিতে পারে।
স্মৃতি-প্রতিবন্ধকতার কারণে, এই ক্যাফেতে অনেক বয়স্ক মানুষ এক কাপ কফি তৈরির সম্পূর্ণ পদক্ষেপগুলো আর মনে রাখতে পারেন না, তবে এটি তাদের ‘প্রয়োজনীয়’ হওয়ার আনন্দের অভিজ্ঞতাকে প্রভাবিত করে না। কফি তৈরির মাধ্যমে বয়স্করা তাদের কাজের ক্ষমতা অনুশীলন করেন এবং কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ব্যাধিগুলো মোকাবেলা করার পাশাপাশি বাইরে গিয়ে কফি বিক্রির মাধ্যমে সমাজের সাথে সংযোগ স্থাপন করেন।