বাংলা

চীনা প্রতিষ্ঠানের নির্মিত জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রে কম্বোডিয়ান শহরের ‘গ্রিড দ্বীপ’ পরিস্থিতির অবসান

CMGPublished: 2024-08-05 10:07:30
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চলতি বছরের জুলাই মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম কম্বোডিয়ার কাও কং প্রদেশে চীনের হুয়াডিয়ান কর্পোরেশনের বিনিয়োজিত স্টুং রুসেই চরুম নিম্ন অববাহিকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবসায়িক অপারেশনের দশম বার্ষিকী। স্টুং রুসেই চরুমে প্রবেশ করে, জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রের বাঁধে কয়েকটি চীনা ও কম্বোডিয়ান অক্ষর বিশেষ নজরকাড়ে।

এটি বিদেশে হুয়াডিয়ানের ‘বিওটি’ রূপে বিনিয়োজিত ও উন্নয়ন করা প্রথম জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র। কেন্দ্রটির বিদ্যু্ত উত্পাদন ক্ষমতা ৩৩৮ হাজার কিলোওয়াট এবং গড় বার্ষিক বিদ্যুত্ উত্পাদন প্রায় ১ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা এবং বিরাট মাত্রায় দেশটির বিদ্যুত্ ঘাটতি পরিস্থিতি প্রশমিত করে।

“জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র হলো জ্বালানি অবকাঠামো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি স্থানীয় উন্নয়ন জোরদার করে এবং জনগণের জীবনমান উন্নীত করে।” প্রকল্পের কম্বোডিয়া কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তি জু সিনইউয়ান জানান, জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি উৎপাদনের আগে, দেশটির বিদ্যুত্ ঘাটতির পরিমাণ সারা দেশের বিদ্যুত্ চাহিদার ২০ শতাংশের বেশি এবং তা গুরুতরভাবে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিঘ্নিত করে।

উ সিথিয়ান হলেন স্টুং রুসেই চরুম কোম্পানির কম্বোডিয়ান ভাষা অনুবাদক। তাঁর বাসা কাও কং প্রদেশের কাও কং শহর। তিনি জানান, শহরটি আগে ছিল দেশটির একটি ‘গ্রিড দ্বীপ’, সকল বিদ্যুত্ প্রতিবেশি থাইল্যান্ড থেকে আমদানী করা হতো। কোম্পানি কেন্দ্র থেকে কাও কং শহর পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করে, এখান থেকে সারা দেশের গ্রিডে সংযুক্ত করা হয়। এখন স্থানীয় বিদ্যুতের দাম আগের থেকে প্রায় ৮০ শতাংশ কমেছে এবং বিদ্যুৎ সঙ্কট খুব কম হয়। কারখানা ভবন আরো বেশি হচ্ছে, জনগণও এয়ার কন্ডিশনারের মতো বৈদ্যুতিক সামগ্রী কিনছেন। এখন বিদ্যুতের দাম সস্তা হবার পাশাপাশি সুবিধাজনকও হয়েছে। জীবনযাপনের মান আরো ভালো হয়েছে।

দশ বছরে জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি উত্পাদন শুরু হওয়া থেকে ধারাবাহিকভাবে ৩ হাজার ৯শ’ দিন নিরাপদ উত্পাদন বাস্তবায়ন করে এবং সবুজ বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান ১১ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘন্টা আউটপুটে পৌঁছেছে। উত্পাদন চালু হবার পরবর্তি বছর বিদ্যুত্ উত্পাদন পরিমাণ সারা দেশের বিদ্যুত্ উত্পাদন পরিমাণের ৩০ শতাংশে পৌঁছায়।

জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি পুরোপুরিভাবে চীনা জলবিদ্যুত্ প্রযুক্তির একটা উচ্চ মানদণ্ড। কোম্পানির উত্পাদন প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি লুও চিয়ানহুয়া জানান, উত্পাদন করার পর প্রকল্পে সার্বিকভাবে চীনের হুয়াডিয়ানের নিরাপত্তা, গুণগতমান ও পরিবেশ সংরক্ষণ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও ম্যানেজমেন্ট স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার শুরু করেছে।

“প্রযুক্তিগত তত্ত্বাবধান হলো জলবিদ্যুত কেন্দ্র বিশেষ সরঞ্জামের প্রতি স্বাভাবিক পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যা বিদ্যুত কেন্দ্রের ব্যক্তিগত ও সরঞ্জাম নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু কম্বোডিয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগত মানদণ্ড ও চাহিদা ছিল না। লুও চিয়ানহুয়া জানান, ২০১৬ সালে কোম্পানি চীনের অগ্রণী মানদণ্ড অনুসারে কম্বোডিয়ার একমাত্র পরীক্ষামূলক বিদ্যুত্ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং দেশটির জলবিদ্যুত্ প্রকল্পের প্রযুক্তিগত তত্ত্বাবধানের অগ্রগামী মডেল তৈরি করে।

জু সিনইউয়ান বললেন, কম্বোডিয়ায় চীনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা চীনা সরঞ্জাম, চীনা প্রযুক্তি ও চীনা মানদণ্ড কম্বোডিয়ায় নিয়ে এসেছেন। এর লক্ষ্য হলো স্থানীয় উন্নতমানের দূষণমুক্ত বিদ্যুত্ জ্বালানি সরবরাহ করার চেষ্টা চালিয়ে, মানুষের সুন্দর জীবন নিশ্চিত করা।

উত্পাদনের শুরু থেকে জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি বেশ কয়েক বার কম্বোডিয়ার বড় ক্রীড়া ইভেন্ট ও নববর্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের বিদ্যুৎ সরবরাহ গ্যারান্টির জন্য ‘জোরালো’ ভুমিকা রেখেছে।

স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কার্যকর করার জন্য কোম্পানিটি বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কোর্স ও কার্যক্রম আয়োজন করার মাধ্যমে স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা উন্নীত করতে সাহায্য দেয়। বর্তমানে প্রকল্পে কম্বোডিয়ান কর্মীর সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি এবং বেশ কয়েকজন কম্বোডিয়ান কর্মী প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনায় স্থান পান।

“জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি চীন ও কম্বোডিয়ার জনগণের মৈত্রীর সেতু, উচ্চমানে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের নির্দেশনায় দু’দেশের কর্মীরা দু’দেশের মৈত্রীর ফুল আরো সমৃদ্ধভাবে লালন করার প্রত্যাশা করি।” জু সিনইউয়ান এমন কথা বললেন।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn