গরমে সংশ্লিষ্ট পণ্যের বাজার চাঙ্গা
এবার গ্রীষ্মকালে বিশ্বজুড়েই গরম পড়েছে তুলনামূলকভাবে বেশি। চীনও এর বাইরে নয়। গরমের সাথে সাথে তাই চীনে সংশ্লিষ্ট পণ্যের বাজারও চাঙ্গা হয়েছে। সানস্ক্রিন, দুধ চা, আইসক্রিম, ফলমূল, ইত্যাদি পণ্যের চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে। তথাকথিত ‘দুধ চা অর্থনীতি’ ও ‘রাতের অর্থনীতি’-ও দেখাচ্ছে চাঙ্গাভাব।
সম্প্রতি চীনের বহু জায়গায় প্রচণ্ড গরম পড়েছে। আর এ গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রীষ্মকালে প্রচলিত বিভিন্ন পণ্যের বাজারও হয়েছে ‘গরম’। তাপ উপশমকারী যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন জিনিসপত্রের বিক্রি বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, গরম-প্রতিরোধক পণ্যের চাহিদা বাড়ায়, পর্যটন, ক্যাটারিং ও বিনোদনের মতো ঐতিহ্যগত খাতে নতুন প্রাণশক্তি যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি, ডিজিটাল অর্থনীতি, শেয়ারিং অর্থনীতি ও প্ল্যাটফর্ম অর্থনীতির মতো নতুন বাণিজ্যিক কার্যক্রমেও নতুন করে গতির সঞ্চার হয়েছে।
চরম গরমে বেশকিছু সৃজনশীল ঠাণ্ডা পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন জায়গায় ভোগের প্রবণতায় নতুনত্ব দেখা যাচ্ছে। শেনইয়াং শহরের বিভিন্ন শপিংমলে এয়ার কন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটরের মতো ঘরে ব্যবহার্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির বিক্রির পরিমাণ শীর্ষস্থানে পৌঁছেছে। হাইখৌ শহরে এয়ার কন্ডিশনার এবং ওয়াশিং মেশিন বিক্রয় বাড়ছে। শানতোং প্রদেশের রাজধানী চিনানের পথচারী সড়কের ‘গ্রীষ্মের আইস সিল্ক’ অঞ্চলে, তাপমাত্রা-প্রতিরোধক পণ্যের চাহিদা অনেক বেড়েছে।
এদিকে, ‘রাতের অর্থনীতি’ একদিকে জনসাধারণের জীবনের সাথে এবং অন্যদিকে পণ্যভোগের নতুন বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও নতুন হট স্পটের সাথে সংযুক্ত। আজকাল চীনের অনেক ছোট শহর, ‘রাতের অর্থনীতি’র ওপর নির্ভর করে, সংস্কৃতি ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট পণ্য ও সেবার বাণিজ্য চাঙ্গা করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটনসংশ্লিষ্ট পণ্যের ভোগ ও অবসরসংশ্লিষ্ট বিনোদনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এ অবস্থায়, রাতের বাজার ও হাল্কা খাবারসমৃদ্ধ সড়কের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
হেপেই প্রদেশের চেংতিং শহরের রাতের বাজারে ৬ শতাধিক ট্রাক চীনের বিভিন্ন জায়গার সুস্বাদু খাবার বহন করে আনে। ছোংছিং ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ‘রাতের থিয়েটার’-এর মাধ্যমে স্থানীয় পণ্য ও সেবার ভোগ বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। চিয়াংসু প্রদেশের নানচিংয়ের রাতের বাজার ‘নানচিং স্বাদ’-এর মাধ্যমে পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। পাশাপাশি, “ক্যাম্পিং+” ও “লাইভ স্ট্রিমিং+”-এর মতো নতুন বিষয়গুলোও যুক্ত হচ্ছে এখানে।
চীনের পর্যটন গবেষণালয়ের প্রধান তাই পিন বলেন, সংস্কৃতি ও পর্যটন খাতের সংযুক্তির প্রবণতা বাড়ছে। সাংস্কৃতিক পণ্য এবং পর্যটনসংশ্লিষ্ট পণ্য ও পরিষেবার মানও বাড়ছে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ভবিষ্যতে বিগ ডেটা, মেটাভার্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো নবোদিত প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার হবে। এদিকে, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক পর্যটনশিল্পের সংযুক্তির কাজেও অতিরিক্ত গতির সঞ্চার হবে। আর সৃজনশীল পণ্য ও সেবা এ খাতের মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে।