চীনের সঙ্গে সবুজ সহযোগিতার ভবিষ্যতে ভরসা রাখেন নরওয়েজীয় রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা
সম্প্রতি নরওয়েতে চীনা দূতাবাস ‘একসাথে একটি সবুজ ভবিষ্যৎ, চীন-নরওয়ে সবুজ সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারে অনেক নরওয়েজীয় রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী চীনের সঙ্গে তাদের সহযোগিতার গল্প ভাগাভাগি করে, চীন-নরওয়ে সবুজ সহযোগিতার ভবিষ্যতের ওপর ভরসা রাখার কথা জানিয়েছেন।
‘পশ্চিমের চীন থেকে সবুজ উন্নয়ন প্রযুক্তি শেখা দরকার’— ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ সবুজ উন্নয়ন আন্তর্জাতিক ইউনিয়নের ভাইস-প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘের সাবেক উপ-মহাসচিব এরিক সোলহেইম সিনহুয়া বার্তা সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এমন কথা বললেন।
তিনি বলেন, চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারের প্রতিদ্বন্দ্বিতার তীব্রতা উন্নীত করার জন্য চীন টেসলার মতো বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে চীনা বাজারে বিনিয়োগ, উত্পাদন ও বিক্রির অনুমোদন দেয়। এভাবে ‘ক্যাটফিশ ইফেক্ট’ গড়ে তুলে, বেশ কিছু স্থানীয় গাড়ি ব্র্যান্ড প্রতিযোগিতামূলক উৎপাদনে এসেছে। এ রকম সাফল্যের অভিজ্ঞতা থেকে নরওয়েসহ পশ্চিমা দেশগুলোর শেখার রয়েছে।
নরওয়ে’র হোগ অটোলাইনারসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সেবজর্ন ডাল বলেন, সবুজ রূপান্তরে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দরকার। আমাদের জন্য চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা না থাকলে, এটা বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়।
হোগ অটোলাইনারস হলো বিশ্ববিখ্যাত রো-রো জাহাজ পরিষেবা প্রদানকারী। ডাল বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের কোম্পানি সবুজ রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। তাই চীনা জাহাজ উত্পাদন প্রতিষ্ঠানের কাছে বেশ ক’টি দূষণমুক্ত জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত রো-রো জাহাজ অর্ডার করে। এসব জাহাজ পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর ও সেবায় আসছে। চীনা অংশীদার ও চীনা পণ্যের প্রতি আস্থার ভিত্তিতে কোম্পানিটি আবার নতুন অর্ডার করেছে।
চীনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নের গতি ও মাত্রা নরওয়ে’র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টেকসই উন্নয়ন বিভাগের প্রধান অড-ইঞ্জে কোয়ালহেইমের মনে গভীর ছাপ ফেলে। তিনি মনে করেন, বিশ্ব জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করার প্রক্রিয়ায় চীন অপরিহার্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা হলো নরওয়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। সবুজ রূপান্তর, সামুদ্রিক দূষণ প্রশাসন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ক্ষেত্রে নরওয়ে ও চীনের অনেক অভিন্ন উদ্বেগ আছে। তিনি দু’দেশের সহযোগিতা গভীরতর করে, বিশ্বের টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানি খাতে আরো বেশি অবদান রাখার প্রত্যাশা করেন।
“নরওয়ে’র অনেক ছোট স্টার্ট আপ প্রতিষ্ঠান আছে। যাদের কর্মীর সংখ্যা ৫০ জনেরও কম। সবুজ রূপান্তরে এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা সম্প্রসারণ ও মাত্রা বাড়ানোর জায়গা হলো চীন।” ইনোভেশন নরওয়ে’র অফশোর বায়ু শক্তির দায়িত্বশীল ব্যক্তি অ্যান্ডার্স নর্ডবার্গ বলেন, দূষণমুক্ত জ্বালানি শিল্পে চীনের বিনিয়োগ বিরাট এবং এই ক্ষেত্রে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বড় রাষ্ট্র চীন। নরওয়ে’র প্রতিষ্ঠান চীনা বাজার খতিয়ে দেখে এবং চীনের দূষণমুক্ত জ্বালানি শিল্পে দেশটির সরাসরি বিনিয়োগ বাড়তে থাকবে।
তিনি আরো জানান, জলবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ এবং সৌর শক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরো বেশি নরওয়েজিয়ান প্রতিষ্ঠান চীনা অংশীদারের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে চীনে, এমনকি বিশ্ব বাজারে শেয়ার সম্প্রসারণ করছে।