বাংলা

পিচফুলে সমৃদ্ধি সিচাংয়ের লিনচি কৃষকদের

CMGPublished: 2024-05-03 10:00:36
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চীনের সিচাং বা তিব্বতের লিনচি শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে পিচ ব্লসম ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচার ফেস্টিভ্যাল। পাহাড়জুড়ে পিছ বাগানে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। পর্যটকরা সুন্দর পিচফুল উপভোগের পাশাপাশি সুন্দর সুন্দর ছবি তোলেন। অসাধারণ পিচ সম্পদ কাজে লাগিয়ে লিনচি’র পিচফুল অর্থনীতিতে প্রাণশক্তি দেখিয়েছে এবং স্থানীয় কৃষকদের উপার্জন বাড়ানোর পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে।

লিন চি শহরের কালা গ্রামে রয়েছে ১৮ হেক্টর পিচ বাগান। পরিচ্ছন্নকর্মী প্রতিদিন বাগান পরিষ্কার করে, তাই বাগানে দেখতে খুব পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন। কর্মীরা কেউ কেউ পর্যটকের জন্য ঘোড়া টেনে ছবি তুলছেন। কেউ কেউ যানজট ছাড়াতে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করছেন। পিচ বাগানের বাইরে নি ইয়াং নদীর পারে কেউ কেউ গান গাইতে গাইতে গাছ লাগাচ্ছেন।

সিমাছুচি নামের এক সিচাংবাসী বলেন, ‘দর্শনীয় স্থানে যারা কাজ করছেন, তারা আমার মতো গ্রামবাসী। কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাংবাদিককে তার মোবাইলে সেভ করা কর্মসূচি দেখান: গত সপ্তাহে নদীর পারে পিচ গাছ লাগানো হয়েছে। এ সপ্তাহে পিচ বাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।

সাংবাদিকরা দেখেছেন যে, কালা গ্রামবাসী পিচফুল উৎসব চলাকালে টিকিট বিক্রি, পরিছন্নতাকর্ম পরিচালনা এবং শ্রম দেওয়াসহ নানা কাজ করে আসছেন।

গ্রাম কমিটির উপপরিচালক সিমাতুওচি বলেন, “আমরা গ্রামবাসীদের চার দলে ভাগ করেছি। এর জন্য একটি কর্মসূচিও বানিয়েছি। অনেক কাজ রয়েছে। আমাদের ৩৩টি পরিবারের ১৪৮ জন সে সব কাজ সম্পন্ন করার জন্য যথেষ্ট নয়।”

সাংবাদিককে এ কথা বলার সময় নিমাতুওচি স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী কাপড়ে চেয়ারে হাত দিয়ে তীরন্দাজি সরঞ্জাম পরীক্ষা করছেন। তিনি বলেন, “আজ আমি তীরন্দাজি মাঠে কাজের দায়িত্বে রয়েছি। কিছুক্ষণ আগে বেশ কয়েকজন পর্যটক প্রকল্পের অভিজ্ঞতা নিতে এসেছিলেন।”

২০২৩ সালে কালা গ্রামের পিচ বাগানে আসা পর্যটকের সংখ্যা ১.১ লাখ ছাড়িয়েছে, যা থেকে আয় হয়েছে ৩৪.১ লাখ ইউয়ানের বেশি। গত মাসে এ গ্রামের কর্তৃপক্ষ কর্মীদের মোট ৩৮ লাখ ইউয়ান বেতন ও ভাতা দিয়েছে। নি ইয়াং নদীর ভাটি অঞ্চলে অবস্থিত তুও তাং গ্রাম। সম্প্রতি এ গ্রামে ৩ হাজারেরও বেশি পিচগাছে ফুল ফুটেছে। অনেক পর্যটক নিজের পছন্দের সিচাং জাতির কাপড় পরে এ দর্শনীয় স্থানে ছবি তুলতে যান।

কোং বু ইউয়ান দর্শনীয় স্থানের দায়িত্বশীল ব্যক্তি চেন লিয়াং বলেন, “পর্যটকরা বিনা পয়সায় সুন্দর সিচাং’র কাপড় পরে পিচফুল বাগান ঘুরে দেখতে পারেন। এটি গ্রামটির নতুন সেবা।” ছেন লিয়াং জানান, তাঁর কোম্পানি জমি সংগ্রহের মাধ্যমে কু চিউ উপজেলায় গোলাপ ও ব্লুবেরিসহ নানা বাগান প্রতিষ্ঠা করেছে। কোম্পানিটি কৃষি রোপণ, পর্যটন, ফুল ও ফসল তোলা এবং ব্যাপক প্রক্রিয়াকরণের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যটনের জন্য নতুন শক্তি যুগিয়েছে।

কোং বু ইউয়ান দর্শনীয় স্থানে ২০২৩ সালে ৫০ জন স্থানীয় গ্রামবাসী নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের আগাছা নিড়ানো, সার প্রয়োগ ও বাছাইসহ নানা কাজে নিয়োজিত করা হয়।

লিনচি শহরের পো মি পিচ ব্লসম ভ্যালির কু থোং গ্রামে বর্তমানে রয়েছে তিনটি হোমস্টে হোটেল। গ্রামবাসী লুও সোং তুন চু জানিয়েছেন, “পীচফুল যখন ফোটে, তখন সব হোমস্টে হোটেল পর্যটকে ভরপুর থাকে।” লুওসোংতুনচু’র হোমস্টে হোটেল গ্রামে সবচেয়ে বড়। যার আছে ৭টি রুম। সম্প্রতি তিনি প্রতিদিন পর্যটকের জন্য সিচাং’র পোষাক ও খাবার সরবরাহ করে থাকেন।

পো মি পীচ ব্লুসম ভ্যালিতে আছে ৯০টিরও বেশি হোমস্টে হোটেল ও সাধারণ হোটেল। গ্রামবাসীদের পিচ অর্থনীতি উন্নয়নে উৎসাহ দেওয়ার জন্য পিচ উৎসবের প্রাক্কালে স্থানীয় সরকার ‘পো মি জেলার সংস্কৃতি ও পর্যটন জনশক্তি রিজার্ভ প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করে। যার মধ্যদিয়ে রেস্তোরা, বেশি বাসস্থান, ক্যাটারিং, কৃষিপণ্য ব্যবস্থাপনায় জড়িত ১১০ জনেরও বেশি মানুষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বর্তমানে পিচ মূল্যবান গাছে পরিণত হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত লিনচি শহরে মোট ২৩ লাখেরও বেশি দেশি-বিদেশী পর্যটক ভ্রমণ করতে আসেন। যা থেকে আয় হয়েছে ২০০ কোটি ইউয়ান। লিনচি শহরের পিচ উপত্যকার গ্রামগুলো এখনও উন্নয়নের নতুন রূপের সন্ধ্যান করছে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn