বাংলা

‘চীনা পিওনি ফুলের গ্রামে’ দুটি পরীক্ষা

CMGPublished: 2024-04-26 13:25:51
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

বর্তমানে চীনের ছোং ছিং শহরের স্যু পাই গ্রামে চীনা গুল্মজাতীয় পিওনি ফুল পুরোদমে ফুটছে। এ ফুল নিয়ে দুটি পরীক্ষা চলছে।

প্রথমটি পরীক্ষা চালাচ্ছেন যিনি, তিনি হচ্ছেন এ গ্রামের সিপিসি’র সম্পাদক থিয়ান ছিন সি। তিনি খুব সরল যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষা করছিলেন। এক সারিতে বসানো আছে বেশ কয়েকটি কাঁচের ফুলদানী। ফুলদানীগুলোতে রয়েছে স্বচ্ছ তরল এবং বেশ কয়েকি তাজা চীনা গুল্মজাতীয় পিওনি। ফুলদানীগুলোকে পানি, পুষ্টিকর পানি এবং মিষ্টি পানিসহ নানা মার্ক করা হয়েছে। থিয়ান ছিন সি একটু পরপরই সেগুলো দেখতে আসেন।

থিয়ান ছিন সি বলেন, গত ২০২১ সালে স্যু পাই গ্রাম ‘গ্রামীণ সামষ্টিক সংস্থা যোগ কৃষি পরিবার” এর পদ্ধতিতে চীনা গুল্মজাতীয় পিওনি শিল্প উন্নয়ন করতে শুরু করে। এখন প্রথমবারের মতো এ ফুল ফুটছে। গ্রামটিও প্রথমবারের মতো লাইভে তাজা ফুল বিক্রি করে। তাতে ফুল চাষের প্রথম ফলাফল পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, “লাইভে অনেক দর্শক আমাদের জিজ্ঞাসা করেন যে, তাজা ফুল কি পানি দিয়ে রাখতে হয়। আমাদের লাইভ কর্মীদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তাই এ অপেশাগত পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা বিক্রির পাশাপাশি শিক্ষা গ্রহণ করছি।” থিয়ান ছিন সি’র লাইভ কক্ষে যে ফুলগুলো বিক্রি করা হয়, সেগুলো গ্রামের সামষ্টিক সংস্থা ও কৃষি পরিবার থেকে নেওয়া হয়েছে।

যেটা থিয়ান ছিন সিকে অবাক করে দেয়, সেটি হলো তাজা ফুলের জনপ্রিয়তা। দুই সপ্তাহের মধ্যে ৩ লাখের বেশি চীনা পিওনি ফুর বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিটির দাম ৩ ইউয়ান।

জানা গেছে, স্যু পাই গ্রামে কয়েকশ বছর ধরে চীনা গুল্মজাতীয় পিওনি চাষ করা হয়ে আসছিল। তবে আগে কখনও তাজা চীনা গুল্মজাতীয় পিওনির বিক্রি হয়নি। গ্রামবাসীরা এ গাছের মূল ঔষধি উপকরণ হিসেবে বিক্রি করতেন। ৩ ও ৪ বছরে একবার এ ফসল হয়। ০.০৬ হেক্টর জমিতে আয় হয় ৭ হাজার ইউয়ান। তবে চীনা গুল্মজাতীয় পিওন এক বছর একবার ফোটে। বপন থেকে তিন বছর পর ফুল ধরতে শুরু করে। প্রতি বছরে তাজা ফুল সংগ্রহ করা যায়। ০.০৬ হেক্টর জমিতে আয় হয় ১৭ হাজার ইউয়ান।

লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে তাজা ফুল বিক্রি ছাড়া, গ্রামবাসীরদের উপার্জন বৃদ্ধির পদ্ধতি অনেক বেড়েছে। গ্রামবাসী কাও কান ছেং বলেন, তিনি চীনা গুল্মজাতীয় পিওনি বাগানে আগাছা ও ফুল কাটাসহ শ্রম দেন। প্রতি বছরে তিনি ৭ হাজার ইউয়ান উপার্জন করতে পারছেন। তাছাড়া গ্রামের পিওনি বাগান অনেক পর্যটককে আকর্ষণ করছে। গ্রামবাসীরা ডিম, মধু ও ময়দা নিয়ে বিক্রি করতে বাগানে আসেন।

থিয়ান ছিন সি বলেন, “আমি সর্বোপরি একজন স্থানীয় বিশেষজ্ঞ, এবং পিওনির দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যৎ বিকাশ আমাদের গ্রামের প্রকৃত বিশেষজ্ঞদের থেকে অবিচ্ছেদ্য।”

তারপর তিনি আমাদের সাংবাদিককে নিয়ে দ্বিতীয় দলীয় পরীক্ষাকর্মীদের কাছে নিয়ে যান। পরীক্ষাকর্মী যেখানে অবস্থান করছেন, সেখানকার নাম চীনা গুল্মজাতীয় পিওনি বিজ্ঞান-প্রযুক্তি অঙ্গন। ২০২৩ সালে চীনের কৃষি পেশাদার বিজ্ঞান-প্রযুক্তি সমিটি ১৯৫টি বিজ্ঞান-প্রযুক্তি অঙ্গন স্থাপন করেছে। স্যু পাই গ্রামের এ অঙ্গন ছোং ছিং শহরের ১৬টি অঙ্গনের একটি।

অঙ্গনে পশ্চিম-দক্ষিণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান ইয়ু ও লি হাই সিয়া দেশ থেকে চীনা গুল্মজাতীয় পিওনির চারা পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

জান ইয়ু বলেন, ‘এ অঙ্গন স্থাপনের লক্ষ্য হলো চীনা গুল্মজাতীয় পিওনির প্রজাতি লালন এবং চারা প্রজনন পরীক্ষা করা।”

সাধারণত, তারা রিসোর্স গার্ডেনে বিভিন্ন প্রবর্তিত প্রজাতির পিওনির বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করেন এবং স্থানীয় আবহাওয়া খাপখাওয়ানোর জন্য উপযুক্ত আরও প্রজাতি নির্বাচন করতে সাহায্য করেন।

লি হাই সিয়া বলেন, ‘পর্যবেক্ষণ কাজের ফাঁকে আমরা গ্রামের পরিচালিত লাইভ কক্ষে সাহায্য করতে যাই। এ সুযোগের মাধ্যমে ফুল বাজার এবং বাজারের চাহিদা সম্পর্কে আরও ভালো জানা যাবে। যা ক্লাস ও পরীক্ষাগার থেকে শেখা সম্ভব হয় না।”

থিয়ান ছিন সি বলেন, বর্তমানে বর্তমানে এখানে চারা সবই অন্য স্থান থেকে আনা হয়। পশ্চিম-দক্ষিণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাকর্মীদের পরীক্ষা সফল হলে চারার চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।

স্যু পাই গ্রামের দুটি পরীক্ষা উচ্চ বিদ্যালয়, কৃষি ও বাজারকে একীভূত করেছে, যা গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের জন্য শক্তি যুগিয়েছে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn