বাংলা

বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে চীনা-মালয়েশীয় নির্মাতার গল্প

CMGPublished: 2024-03-11 14:31:34
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মালয়েশিয়ার ইস্ট কোস্ট রেল লিঙ্ক বা ইসিআরএল সেরেন্দাহ ২ নম্বরে পুরোদমে চলছে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ। মাটি ফুঁড়ে কাজ করে চলেছে খননযন্ত্র। সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে, নিরাপত্তা হেলমেট ও প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরা খাং ফুশেংকে ঘামতে দেখা গেল।

৩৮ বছর বয়সী খাং ফুশেং এ প্রকল্পে যোগ দেন ২০২১ সালে। এখন তিনি অষ্টম বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী। দায়িত্ব পালনে তিনি পেশাদার এবং তার দায়িত্বে থাকা সুড়ঙ্গ, সেতু ও কালভার্টসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করতেও তিনি সুদক্ষ।

চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)’র নির্মিত ৬শ’ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ ইসিআরএল’কে মালয়েশিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম উপকুল সংযুক্ত করার ‘স্থল সেতু’ বিবেচনা করা হয়। চলতি বছরের বসন্ত উৎসবের আগেই ২৭টি সুড়ঙ্গ হলিং-থ্রু, ১৩টি স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।

বসন্ত উৎসব চলাকালে সেরেন্দাহ ২ নম্বর সুড়ঙ্গের নির্মাণ সাইটের আশপাশে লাল লণ্ঠন ঝোলানো হয় এবং শুভ ‘ফু’ অক্ষর ঝোলানো হয়। তবে চান্দ্র নববর্ষের প্রথম দিন নির্মাতাদের ব্যস্ততাতেই কেটেছে।

খাং ফুশেং জানান, সেরেন্দাহ-২ নম্বর সুড়ঙ্গ হলো তাদের বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সুড়ঙ্গের ভূতাত্ত্বিক ঝুঁকি অনেক বেশি। এখানে পরিবেশগত নিরাপত্তার চাহিদা বেশি। আবার হাতে বেশি সময়ও নেই। অনেকগুলো পদ্ধতির মাধ্যমে তারা প্রথম ধাপে এখানকার পরিবেশ সংক্রান্ত কিছু তথ্য হাতে পেয়ে সুড়ঙ্গের নিরাপদ নির্মাণ নিশ্চিত করেন।

বহু বছর ধরে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকেই খাং ফুশেং পেয়েছেন তার জটিল সব প্রাযুক্তিক সমাধান। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো বিদেশে কাজ শুরু করেন তিনি। তুলনামূলক সহজ থেকে শুরু করে তার কাজগুলো ছিল পদ্ধতিগত ও জটিল। বিভিন্ন সমস্যা ও শর্ত মোকাবিলা করার দক্ষতা বেড়েছে অব্যাহতভাবে। একই সময় তিনি বিদেশে চীনের নির্মাণ-প্রযুক্তির উন্নয়নেরও একজন সাক্ষী।

মালয়েশীয় সমাজকর্মী শি ইশিয়ান তথ্য প্রকৌশলী। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পে যোগ দেওয়ার পর থেকে প্রকৌশল যন্ত্রপাতি এবং ‘বুদ্ধিমান’ প্রশাসনিক প্ল্যাটফর্ম-এ কাজ করছেন।

তার চোখে চীনা প্রশাসকদের নৈপুণ্যের অংশগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। তারা বৈচিত্র্যময় স্টাইলের প্রকল্পে যোগ দেন এবং কঠোর পরিশ্রমীও।

এক বছরে শি ইশিয়ানের ভূমিকার বিস্তৃতি অষ্টম বিভাগের প্রকৌশলী এবং মালয়েশিয়ার সুপারভাইজর থেকে ছাড়িয়ে গেছে। তিনি এখন বিভিন্ন সরকারি এজেন্সি, উদ্যোক্তা এবং পরিবেশ ও জলসেচসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের ‘সেতু’তে পরিণত হয়েছেন। যোগাযোগ ও সমন্বয় কাজ তার অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি প্রযুক্তি শিখে আরো মসৃণভাবে বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের প্রত্যাশা করেন তিনি।

জানা গেছে, ২০২৩ সালে ইসিআরএল প্রকল্পে দেশি-বিদেশি কর্মীর সংখ্যা ছিল ২০ হাজারের বেশি। এর মধ্যে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা ১৮ হাজারের বেশি। এ ছাড়া প্রায় ২ হাজার মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের নির্মাণে অংশ নেয়।

সুঙ্গাই দুআ নিউ ভিলেজ-২ সুড়ঙ্গ নির্মাণকাজ নিরাপদ ও মসৃণভাবেই চালু হয়েছে। গ্র্যান্ড পায়া স্টেশনের সাইট অপারেশন নির্মাণও শুরু হয়েছে এবং তৃতীয় বিভাগের ৫৪ নম্বর সেতুর কনটিনিউয়াস বিমের কাজও চলছে।

খাং ফুশেং বলেন, আমরা মূল উদ্দেশ্য ও মিশনটাকে মাথায় রেখে, মালয়েশীয় সহকর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশটির জন্য পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল সংযুক্ত করা ‘স্থল সেতু’ নির্মাণ করবো।

প্রেমা/ফয়সল

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn