বাংলা

স্বর্গের মতো শহর হাংচৌ-৪

CMGPublished: 2023-10-25 14:43:28
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

সুপ্রিয় শ্রোতা, গত অনুষ্ঠানে আমরা জানিয়েছিলাম, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ব্রোঞ্জ পদক লাভ করার পর তাদের সঙ্গে পরদিন আমাদের শপিং করতে যাবার কথা ছিল। সেদিন সকালে, আমি ও রুবি ট্যাক্সিতে করে তাদের হোটেলে যাই। তাদের মধ্যে মাত্র একজন কোচের ফোন হোটেলের ওয়াইফাইয়ে যুক্ত হলে ফেসবুকের মাধ্যমে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তাই আগের রাতে আমরা তাদের হোটেলের ঠিকানা নিয়ে নিই এবং পরদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হোটেলে দেখা করার কথা বলি। তবে সেদিন সকালে আমরা হোটেলে পৌঁছানোর পর কাউকে দেখতে পাই না। এমন সময় তাদের ফোন পাই। তারা জিজ্ঞাস করেন আমরা দুজন কখন আসব। আমরা তাদেরকে জানাই যে, আমরা ইতিমধ্যে হোটেলে পৌঁছে গেছি। আমরা ঠিক হোটেলে এসেছি কি না, সেটা বুঝবার জন্য আবার তাদের কাছে হোটেলের নাম জিজ্ঞাস করি। তারা নিশ্চিত করেন যে, তারা যে হোটেলে আছেন আমরা সেখানেই এসেছি। তারা জানান, তারা সবাই লবিতে আছেন। আমরা ফ্রন্ট ডেস্কে গিয়ে তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি। আর তখন আমাদের ভুলটা ভাঙে। হোটেলের একজন কর্মী আমাদেরকে জানান, এ ডিস্ট্রিক্টে তাদের হোটেলের মোট তিনটি শাখা আছে এবং সবগুলোর মূল নামই এক, শুধু শাখার নাম ভিন্ন। আসলে সকালে আমরা দুজন যখন ট্যাক্সি নিই, তখন ম্যাপে এই শাখার ঠিকানা সিলেক্ট করি, কিন্তু বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা রয়েছেন হোটেলের অন্য শাখায়। এখান থেকে সে হোটেলে যেতে আরও বিশ মিনিট লাগবে। আমরা দ্রুত আরেকটি ট্যাক্সি নিয়ে সঠিক হোটেলে পৌঁছাই। দেখি ওখানে সবাই হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। আমি কিছুটা বিব্রত বোধ করি। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তারা মোট ২০জনেরও বেশি ওখানে ছিলেন কিন্তু কয়েকজন আমাদের জন্য অপেক্ষা না করে ট্যাক্সিতে করে বাজারে গেছেন। আমি আবিষ্কার করি, ওই বাজার আমাদের দুজনের পরিচিত সে বাজার নয়। তারা একই হোটেলে থাকা শ্রীলংকা দলের সদস্যদের কথা শুনে অন্য একটি বাজারে গেছেন। বাকিরা হোটেলে আমাদের জন্য অপেক্ষায় আছেন। অতএব আমরা আমাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করি। সবাই তিনটি ট্যাক্সিতে করে প্রথম দলটি যে বাজারে গেছে, সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। না হলে সবাইও আলাদা হয়ে যাবে। তাদের কোনও স্থানীয় ফোন নম্বর নেই, যার জন্য যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না। বাজারে পৌঁছানোর পর আমরা প্রথমে আসা কয়েকজনকে খুঁজে পাই। সেখানে জানতে পারি, এ বাজারের জিনিসের দাম বেশি। আমরা তাদেরকে পরামর্শ দিই পাইকারী বাজারে যাওয়ার। কারণ তারা পোশাক, ব্যাগ, জুতাসহ নানা জিনিস কিনতে চান। তাই কোনও বড় পাইকারী বাজারে গেলে সবকিছু পাওয়া যাবে। তবে আমরা কীভাবে ২০জন ট্যাক্সিতে করে যাব? তারা চীনা ভাষা জানেন না। ফলে নিজেরা ট্যাক্সিও ডাকতে পারেন না। আমি বলি যে, আমাদের বাসে করে যাওয়াই ভাল। মাত্র ৩-৪টা স্টেশন পরে এমন মার্কেট। চীনে এখন বাসের ভাড়া মোবাইলের মাধ্যমে দিতে হয়। তাদের মোবাইলে আলি পের মতো কোনও অ্যাপ নেই। আবার আমার ও রুবির কাছে কোনও নগদ টাকা নেই। বাসে উঠার পর আমাদের ফোনের মাধ্যমে তাদের ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই আমরা। তবে বাসের চালক আমাদের এশিয়ান গেমসের কার্ড দেখে বলেন, আমরা সবাই বিনাভাড়ায় বাস চড়তে পারি। স্থানীয় যাত্রীর চেয়ে সংখ্যা বেশি আমাদের দলের সদস্যরা। স্থানীয়রা তাদেরকে দেখে আমাকে ও রুবিকে জিজ্ঞাস করেন তারা কোন দেশের মানুষ, সবাই কোথায় যাচ্ছেন। এশিয়ান গেমসের উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের মানুষ হাংচৌয়ে মিলিত হয়েছেন এবং হাংচৌয়ের বাসিন্দরাও তাদের আতিথেয়তা দেখিয়েছেন। আমরা স্থানীয় বড় পাইকারী বাজারে যাব - একথা শুনে তারা জানান, এ বাজারটি খুবই বড় এবং এর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন জিনিস বিক্রি হয়। তারাও ওই বাজারে যাচ্ছেন। তবে তারা শিশুদের পোশাক কিনবেন বলে তারা আমাদের আগেই নেমে যাবেন। তার মানে একই বাজারে গেলেও আলাদা স্টেশনে নামতে হয়। আপনি এখন নিশ্চয় অনুমান করতে পারছেন, কতটা বিশাল এ বাজার।

1234...全文 6 下一页

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn