স্বর্গের মতো শহর হাংচৌ-৩
গত সপ্তাহের অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম, ২৩ সেপ্টেম্বর হাংচৌ এশিয়ান গেমস উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আমি ও রুবি হাংচৌয়ের পশ্চিম হ্রদে শুটিং ও লাইভ ভিডিও করেছি। ভিডিও তিনটি অংশে বিভক্ত। সেগুলো হলো হাংচৌয়ের তিনটি অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐহিত্য - পশ্চিম হ্রদ, বেইজিং-হাংচৌ মহাখাল এবং লিয়াং চু ধ্বংসাবশেষ।
চব্বিশ সেপ্টেম্বর আমরা বেইজিং-হাংচৌ মহাখালের হাংচৌ অংশে দেখতে যাই। এর আগে আমরা এবার এশিয়ান গেমসের সাংবাদিকের জন্য বিশেষ পরিবহন কার্ড পেয়েছি। এ কার্ড দিয়ে হাংচৌ এশিয়ান গেমস ও প্যারা গেমস চলাকালে
বিনামূল্যে বাস ও সাবওয়েতে চড়া যায়। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে আমি ও রুবি সাবওয়ে দিয়ে মহাখালে যাই।
হাংচৌর সাবওয়ে ব্যবস্থা গোটা চীনের মধ্যে বেশ উন্নত। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাংচৌতে মোট ১২টি সাবওয়ে লাইন চালু হয়, যেগুলোতে মোট ২৬০টি স্টেশন রয়েছে। হাংচৌর সাবওয়ে লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ৬১০ কিলোমিটার। হাংচৌর ১০টি এলাকাকেই সাবওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।
সাবওয়ে চড়ে হাংচৌর যে কোনও জায়গা যাওয়া যায়। আমরা দুজন দু’বার সাবওয়ে লাইন বদলে মহাখালের কুংচেন নামক একটি সেতুর কাছে পৌঁছাই। এবারের মাস্কটের অন্যতম চেন চেনের নাম এ সেতুর নাম থেকে এসেছে।
প্রায় আড়াই হাজার বছর আগ থেকে বেইজিং-হাংচৌ মহাখালের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এটি বিশ্বে দীর্ঘতম ও প্রাচীনতম মহাখালের অন্যতম। এটা মহাপ্রচীর ও খান এ্য চিং (ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ প্রকল্প)সহ প্রাচীন চীনের তিনটি মহান প্রকল্পের অন্যতম এবং এসব এখন পর্যন্ত কাজে লাগছে। সেটি চীনা সংস্কৃতির একটি প্রতীকও। মহাখাল দক্ষিণের হাংচৌ থেকে শুরু হয়ে চেচিয়াং, শানতুং, হ্য পেই প্রদেশ ও থিয়ান চিন শহর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উত্তরের বেইজিং পর্যন্ত এসেছে। হুয়াং হ্য নদী ও ইয়াংজি নদীসহ ৫টি নদীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এ মহাখাল। তার মোট দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৭৯৪ কিলোমিটার এবং এ খাল উত্তর ও দক্ষিণ চীনের মধ্যে অর্থনীতি, সংস্কৃতি উন্নয়ন ও বিনিময় এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ব্যবসা ও কৃষির উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করে।