চীনের গভীর পাহাড়ে কয়েকটি গ্রামের বদলে যাওয়া
চীনে তা পিয়ে শান পর্বত নামে একটি পাহাড় আছে, যা দেশের দক্ষিণ ও উত্তরের ভৌগোলিক সীমারেখায় অবস্থিত। চীনের অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দুই বার তা পিয়ে শান পর্বত এলাকা পরিদর্শন করেন। স্থানটি চীনের বিপ্লবের সময়ে যুদ্ধক্ষেত্রও ছিল। পরিদর্শনকালে সি চিন পিং আবেগপূর্ণভাবে বলেছিলেন যে, বিপ্লবের পুরানো এলাকাকে ভালোভাবে গড়ে তুলতে হবে, স্থানীয় লোকজনের জীবনকে আরও সুন্দর করতে হবে।
সম্প্রতি সাংবাদিকরা তা পিয়ে শান পর্বতের বিপ্লব পুরানো এলাকায় গিয়ে দেখেছেন যে, সবখানে নতুন পরিবর্তন ঘটছে, সবখানে দেখা যাচ্ছে নতুন চেহারা।
তা পিয়ে শান পর্বত এলাকা হ্যনান প্রদেশের থিয়ানভুতাওয়ান পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত। এখানে আছে চার শতাধিক বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। পাহাড়ি অঞ্চল হওযায় এখানে উন্নয়নের গতি ছিল অনেক ধীর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপ্লবের ইতিহাস ও সবুজ প্রকৃতির কল্যাণে, থিয়ানভুতাওয়ান বড় আকারের নির্মাণকাজের মধ্যে না গিয়ে, বরং পুরানো স্থাপত্যকে ভালোভাবে সংরক্ষণ করেছে, হোমস্টে ও পর্যটন শিল্প উন্নয়ন করেছে।
সাংবাদিক গ্রামে ঢুকে দেখেছেন যে, গ্রামবাসীরা নতুন পাথরপথ নির্মাণ করছে। কয়েকটি হোমস্টের মালিকও নির্মাণ ও সাজানোর কাজে ব্যস্ত আছেন, যাতে পর্যটকদের আরো ভালোভাবে অভ্যর্থনা করা যায়।
গ্রামে একটি হোমস্টের দরজার উপরে লাল লণ্ঠন ঝুলানো আছে। ২০১৯ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বিশেষ করে এই হোমস্টেতে ঢুকে মালিক হান কুয়াং ইং পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। মালিক হান সি চিন পিংকে জানান, তিনি লাল ফৌজের বংশধর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রামীণ পর্যটনের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি পায় এবং তিনি সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে যৌথভাবে হোমস্টে স্থাপন করেন। প্রেসিডেন্ট সি তাঁর কথা শুনে খুব খুশি হন এবং বলেন, বিপ্লবের সাংস্কৃতিক সম্পদ ও সবুজ প্রাকৃতিক সম্পদ দিয়ে গ্রামের পর্যটন উন্নয়ন করা খুব ভালো এক পদ্ধতি। তা গ্রামকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে।
হান কুয়াং ইং পরিবার প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর কথা মনে রেখে আরও পরিশ্রম করেছেন। হোমস্টেতে তাঁরা স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য ও হাতে তৈরি শিল্পকর্ম বিক্রি করেন। হোমস্টেতে একটি চা কর্ণার নির্মাণ করেছেন তারা, যাতে পর্যটকরা হোমস্টেতে আরামে সময় কাটাতে পারেন।
রাতে পর্যটন শিল্পকে আরও চাঙ্গা করতে গ্রামের কর্মকর্তারা এবং কৃষক প্রতিনিধিরা একসাথে আলোচনা করেন। কেউ বলেন, পর্যটকদের আরও ভালো সেবা দিতে হবে; কেউ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে অধিক নজর দিতে হবে। একটি চিকিত্সা পয়েন্ট স্থাপন করা জরুরি বলেও কেউ কেউ মত দেন। গ্রামের কর্মকর্তারা সবার মতামত অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারেন।