চীনা প্রকল্পের কারণে দাশেরকান্দির পানি আবার পরিষ্কার হয়েছে
“চীনা প্রকল্পের কারণে আমাদের পানি আবার পরিষ্কার হয়েছে।” ৭৪ বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুল মাঝি খুশি মনে সাংবাদিককে এ কথা বললেন।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ-পূর্ব উপকণ্ঠে দাশেরকান্দি গ্রামে খাল-বিল ও নদী রয়েছে। আব্দুল মাঝি সেখানে দর্শনার্থী বহনকারী নৌকা চালান।
তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও এখানে এমনটা ছিল না। ছোটবেলা থেকে তিনি এখানে বসবাস করে আসছেন। শুরুর দিকে এখানকার পানি পরিষ্কার ছিল। কিন্তু ঢাকা শহরের আয়তন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সংখ্যাও বাড়ে। এতে যত্রতত্র আবর্জনায় পানির মান খারাপ হয়ে যায়।
কিন্তু আব্দুল মাঝি ভাবতেও পারেননি যে, দু’য়েক বছরে তার প্রিয় গ্রামটির খাল-বিল-নদীর পানি আবার পরিষ্কার হয়ে উঠবে, এমনকি তিনি মাছ চাষ এবং নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।
এমন অভাবিত পরিবর্তনটি এসেছে দাশেরকান্দিতে পয়ঃশোধনাগার নির্মাণ ও চালুর পর থেকে।
বাংলাদেশের রাজধানী ও সবচেয়ে বড় শহর ঢাকার লোকসংখ্যা প্রায় ২ কোটি। শহরের পয়ঃবর্জ্য আগে বেশিরভাগই সরাসরি গিয়ে পড়তো আশপাশের খাল-বিল ও নদীগুলোতে। এতে পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়তো।
এ পরিস্থিতিতে জনকল্যাণে নদীগুলোর পানির গুণগত মান ঠিক রাখতে চীন ও বাংলাদেশ যৌথভাবে “এক অঞ্চল এক পথ” কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। বাংলাদেশকে প্রকল্প বাস্তবায়নে রেয়াতি ঋণ দেয় চীন।
প্রকল্পটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫৬০ টন প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাসহ একটি স্লাজ ড্রাইং-বার্নিং সিস্টেম রয়েছে। এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১ আগস্ট। পাওয়ার চায়নার অধীনে ছেংতু ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের ডিজাইনে নির্মিত প্রকল্পটি এক বছরের অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের পর ওয়াসার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শোধনাগারটি নির্মাণে নিম্ন-কার্বন নিঃসরণ, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ করার ধারণা দিয়ে কারখানার নির্মাণ এবং স্লাজ পুড়িয়ে ফেলার প্রক্রিয়ায় পুরোপুরিভাবে স্থানীয় চাহিদা ও বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে, চীনের সর্বশেষ প্রযুক্তি ও মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে।