বাংলা

গ্রামের খেলা মাঠগ্রামের খেলা মাঠ

CMGPublished: 2023-08-23 09:13:09
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

গ্রীষ্ককালে বাইরে কোথায় একটু ঠাণ্ডা পাওয়া যায়? ছুটির সময়ে শিশুরা কোথায় খেলতে পারে? চীনের হু পেই প্রদেশের নান চাং জেলার মানুষদের জন্য সে জায়গাটি নান বেই গ্রামের বিনোদন পার্ক। এমন চাহিদা পূরণের জন্য সবার শক্তি একত্রিত করে গ্রামে একটি বিনোদন পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে।

নান বেই গ্রামের উইলো বন পার্কে ঢুকলে দেখা যায় সবুজ গাছপালা ও বাহারি রঙের ফুল। ছোট একটি নদী এখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গেছে। গ্রামের বাসিন্দারা অবসরে এখানে হাঁটাহাঁটি করে। নদীর পাশে স্থাপিত হয়েছে দোলনা ও দোলবিছানা; বাচ্চাদের খেলার জন্য বালির স্তূপও রয়েছে। শিশুরা ছুটিছুটি করে খেলে এখানে। প্রতিদিন রাত ৭টায় বিশেষ আলোক শো শুরু হয়, যা রাতে ‘ঝাপসা’ সৌন্দর্য যুক্ত করে। তবে আপনি কি কল্পনা করতে পারেন মাত্র এক মাস আগে এটা ছিল একটি বর্জ্যভূমি।

নান বেই গ্রামে বাস করে ৯৪৪টি পরিবারের ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের অধিকাংশ গ্রামের পাশে বড় একটি সিমেন্ট কারখানায় কাজ করেন। গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় চলছে। এসময় নিজের বাচ্চা কোথায় খেলতে পারে - এ ব্যাপার নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। নান বেই গ্রামে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) কমিটির সম্পাদক চাং হুয়ান বলেন, এখানে আগে ছিল বর্জ্যভূমি আর নদীর অন্য পারে যেতে চাইলে গ্রামবাসীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হতো। জুলাই মাসে এক গ্রাম-সম্মেলনে অনেকে এ বর্জ্যভূমিকে ব্যবহার করে একটি বিনোদন পার্ক নির্মাণের প্রস্তাব দেন।

যেমন কথা, তেমন কাজ। গ্রামের সাবেক সিপিসি সম্পাদক চাং চুয়ান থাই একজন কাঠমিস্ত্রি। তিনি এক সপ্তাহের মতো সময় নিয়ে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেন। এই সেতু দিয়ে গ্রামবাসীরা নদী পারাপার হতে পারে। তারপর চলে দোলবিছানা স্থাপন, লণ্ঠন ঝুলানো এবং নুড়ি পাথর ফেলার কাজ। সিমেন্ট কারখানা বিনামূল্যে ৩০০ টন কাঁকর সরবরাহ করে, যা দিয়ে পার্কে রাস্তা নির্মিত হয়। এক মাস কাজের পর এ বর্জ্যভূমি একটি সুন্দর পার্কে পরিণত হয়।

এ পার্ক চালু হবার পর বাসিন্দারা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে সেটা পরিস্কার করে। পাশাপাশি গ্রাম কর্তৃপক্ষ দুজন নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করেছে, যারা পার্কে টহল দেন। পর্যটকের জন্য বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা বোর্ড ও সাইন স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় গ্রামের বাসিন্দারা পার্কে খাবার ও খেলনা বিক্রির মতো ছোটখাট ব্যবসা শুরু করে।

২০০২ সাল থেকে নান চাং জেলায় শুরু হয় গ্রাম-সম্মেলন ব্যবস্থা। তাকে ‘রেড বাড়ির’ সম্মেলন বলা হয়। ১০-২০টি পরিবার নিয়ে একেকটি ‘বাড়ি’ গঠিত হয় এবং সবার কাছাকাছি নির্দিষ্ট একটি জায়গায় নিয়মিত সম্মেলন আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি যারা গ্রামে বাইরে থাকেন, তারাও অনলাইনে সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। বর্তমানে নান চাং জেলায় মোট ১ হাজার ৮১১টি ‘রেড বাড়ি’ আছে। এমন একটি সম্মেলনেই নান বেই গ্রামে এ পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে গ্রামের ভিতরেই পার্কে ভ্রমণের চাহিদা পূরণ হয়েছে।

চাং হুয়ান জানান, ভবিষ্যতে তারা নতুন কিছু দোকান নির্মাণ করবেন এবং ভাড়া দেবেন। এতে গ্রামের আয় ৫০ হাজার ইউয়ান বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn