বাংলা

মালাউই যুবক সিম্বির সুখি জীবনের পথ

CMGPublished: 2022-11-21 18:13:24
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

বর্ষাকাল আসার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ মালাউই প্রজাতন্ত্রের নসানজে জেলার তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে পৌঁছেছে। নসানজে থেকে মালকা হাইওয়ে পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের এক্সটেনশন রাস্তা পাকাকরণ প্রকল্প এগিয়ে চলছে। আর ৩৩ বছরের মালাউই যুবক ড্যানি সিম্বি তার বাসার সামনে দিয়ে যাওয়া এ রাস্তা দেখে খুব খুশি হয়েছেন।

চীনা রেলপথ ২০তম ব্যুরো গ্রুপ কর্পোরেশন লিমিটেড-নির্মিত হাইওয়েটি দেশটির জাতীয় রাজপথের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পাশাপাশি, মালাউই ও মোজাম্বিককে সংযুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ যাতায়াত সংযোগস্থল। ২০১৯ সালের শুরুতে ২০তম ব্যুরোয় যোগ দেয়ার পর থেকে সিম্বি স্বচক্ষে জন্মস্থানের কাঁচা রাস্তা ধাপে ধাপে পাকা ও প্রশস্ত পিচ রাস্তায় পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া দেখেছেন। একই সময়ে তিনিও নির্মাণ সাইট সুপারভাইজারে পরিণত হন।

সিম্বি বলেন, “নসানজে--মালকা হাইওয়ে স্থানীয় জনগণের জন্য বিরাট পরিবর্তন ডেকে আনছে। আমার অনেক বন্ধু স্থিতিশীল চাকরি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা শিখেছে। ফলে সবার জীবন আরো সুখি হয়েছে।”

২০তম ব্যুরোয় কাজ করার কয়েক বছরে তিনি পরিবারের জন্য নতুন ঘর বানিয়ে নতুন আসবাবপত্র কিনেছেন। গত বছর পুনর্মিলনের জন্য তিনি বাবামাকে গ্রাম থেকে শহরে নিয়ে এসেছিলেন।

নসানজেতে সিম্বির মতো রাজপথ নির্মাণের মাধ্যমে পারিবারিক জীবন উন্নত করা জনগণ আরো অনেক আছে। তিনবছরে ২০তম ব্যুরো মোট প্রায় ১০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পাশাপাশি প্রায় ৫শ’ প্রযুক্তিকর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এদের মধ্যে ২শ’ স্থানীয় কর্মী ব্যবস্থাপক বনেছেন।

“আমি চীনা সহকর্মীর সাথে কাজ করতে পছন্দ করি। তারা পরিশ্রমী, দয়ালু এবং আমাদেরকে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের জীবন উন্নত করতে উদ্দীপ্ত করেন।” সিম্বির স্মৃতিতে ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারী হবার সময় প্রকল্পের টাইট সিডিউল, কম কর্মী এবং ভারী কাজের পরিস্থিতিতে প্রকল্পের নেতারা নির্মাণ সাইটে লেগে থাকেন, সকল নির্মাণ কর্মী সময় ধরে বিটুমিন দিয়ে রাস্তায় আস্তরণ দিতেন। গভীরভাবে অভিভূত সিম্বিও ওভারটাইম কাজের জন্য আবেদন করে অন্যান্য সহকর্মীর সাথে কাজ করেছেন।

নসানজে-মালকা হাইওয়ে’র এক্সটেনশন রাস্তা পাকাকরণ প্রকল্প সমাপ্তির কাছাকাছি রয়েছে। হাইওয়ে’র প্রতিবেশী—২০তম ব্যুরোর নির্মিত মালকা—বাঙ্গুরা রেলপথের নির্মাণ কাজও শুরু হবে।

নিজের জন্মস্থানের পরিবহন খাতে অবদান রাখতে পেরে সিম্বি খুবই উত্তেজিত। তিনি বলেন, খুব ভাল! আমি শুধু বাসার সামনে রাজপথের নির্মাণ স্বচক্ষে দেখেছি তা নয়, বরং অব্যাহতভাবে নিজের বাসার সামনে রেলপথের নির্মাণে যোগ দিতে পেরেছি।

কলম্বিয়ার “পাতাল রেল স্বপ্ন” পূরণ করছে সিসিসিসি

বর্তমানে কলম্বিয়ার বোগোটা পাতাল রেলের লাইন-১ প্রকল্পের ১:১ মডেল বগি আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির ব্যারানকুইলা বন্দরে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে চীন প্রথমবারের মতো বিদেশে শীর্ষ পর্যায়ের স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভ ফাংশনের সিটি রেলের বগি রপ্তানি করে। এর বাধা সনাক্তকরণ ও ট্র্যাক ব্যর্থতা সনাক্তকরণসহ সর্বশেষ ফাংশন আছে এবং গাড়ির শুরু, পরিচালনা এবং সংগ্রহস্থলে ফিরে যাবার স্বয়ংক্রিয়তা বাস্তবায়ন করে।

বোগোটা পাতাল রেল লাইন-১ প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ২৩.৯৬ কিলোমিটার। চুক্তির পরিমাণ ৫০১.৫ কোটি মার্কিন ডলার। এটা দেশটির রাজধানী বোগোটার প্রথম রেল ট্রানজিট প্রকল্প। পাশাপাশি, দেশটির প্রথম টিপিই ঋণপত্র তহবিল গড়ে উঠা প্রকল্প। ২০১৯ সালে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং সি আন মেট্রো নিয়ে গঠিত যৌথ উদ্যোগ লাইন-১ প্রকল্প নিলাম জিতে প্রকল্পের বিনিয়োগ, তহবিল গড়ে উঠা, ডিজাইন, নির্মাণ, মাল সরবরাহ, পরীক্ষামূলক চালু ও অপারেটিং ও বহাল রাখার দায়িত্ব পালন করে।

২০২২ সালের ২৫ জুন লাইন-১ মডেল বগি প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়। বগিগুলি স্টেইনলেস স্টীল গাড়ির বডি ব্যবহার করে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে চলে। বহু উপাদানের সীমাবদ্ধতার কারণে ৭০ লাখ অধিবাসীর বোগোটা পাতাল রেল নির্মাণ বিলম্বিত হয়। তবে, ২০১৯ সালের অক্টোবরে চায়না হারবার যৌথ উদ্যোগ লাইন-১ প্রকল্প বিডিং জয় করা থেকে এ পর্যন্ত বোগোটা শহরবাসীদের “পাতাল রেল স্বপ্ন” বাস্তবায়িত হবে আশা করা হচ্ছে।

পশ্চাত্পদ অবকাঠামো লাতিন-আমেরিকান দেশগুলোকে বিপাকে ফেলার একটি কারণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লাতিন-আমেরিকা অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জ্বালানিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ জোরদার করা দরকার। কিন্তু অর্থ, প্রযুক্তি ও নির্মাণ দক্ষতার অভাবে তাদের মধ্যে অধিকাংশ নিজেদের অবকাঠামো চাহিদা পূরণ করতে পারে না। কিন্তু চীনের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধান হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত লাতিন-আমেরিকা অঞ্চলে চীনের মোট ১‌৩৮টি অবকাঠামো প্রকল্প চালু হচ্ছে বা নির্মাণকাজ চলছে। প্রকল্পগুলির মোট অর্থের পরিমাণ ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বোগোটা পাতাল রেল লাইন-১ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারিতে শুরু এবং ২০২৮ সালে চালু হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। চায়না হারবার বোগোটা পাতাল রেল লাইন-১ প্রকল্প কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার উ ইয়ু বলেন, প্রকল্প নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবার পর লাইন-১ বোগোটা গণ-পরিবহনের ট্রাঙ্ক লাইন এবং যাত্রীবাহী পরিবহনের প্রধান ধমনীতে পরিণত হবে এবং শহরবাসীর যাতায়াতের জন্য নিম্ন জ্বালানি ক্ষয়ের হার ও কম দূষণের সবুজ ট্রিপ মোড সরবরাহ করবে। পরিমাপ ও গণনা অনুমান অনুযায়ী, ৩০ লাখ মানুষ প্রকল্প থেকে লাভ করবে। সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক পাতাল রেলটি বছরে ১৯০ লাখ গ্যালন গ্যাসোলিন ব্যয় এবং ১.৭ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমাবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn