বাংলা

নতুন যুগে চীন-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্ক...

CMGPublished: 2022-11-18 14:02:17
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর এখানে মিলিত হয়েছে। বহু সভ্যতার সহাবস্থান রয়েছে এখানে। হাজার হাজার দ্বীপের দেশ ইন্দোনেশিয়া। উষ্ণ সামুদ্রিক বাতাস, সৈকত, সূর্যালোকের মধ্য দিয়ে দূর থেকে আসা অতিথিকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটি।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ১৪ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত বালি দ্বীপের জি-২০ শীর্ষসম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। তাতে উচ্চ আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন মহল।

চীন ও ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষনেতাদের আদানপ্রদান দু’দেশের সম্পর্কের সুষ্ঠু পরিচালনা নিশ্চিত করেছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দু’বার ইন্দোনেশিয়া সফর করেন। ২০১৩ সালের সফরের সময়, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করেছেন। গত জুন মাসে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো পঞ্চমবারের মতো চীন সফর করেন। এটি বেইজিং শীত্কালীন অলিম্পিক গেমসের পর চীনে আসা বিদেশি নেতার প্রথম সফর। দু’নেতা চীন-ইন্দোনেশিয়া অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গঠনের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, চীন ও ইন্দোনেশিয়া মোটামুটি একই উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে আছে অভিন্ন স্বার্থ এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা। চীন-ইন্দোনেশিয়া অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গঠন দু’দেশের জনগণের অভিন্ন প্রত্যাশা।

চীন-ইন্দোনেশিয়া শিল্প অঞ্চল

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো বলেছেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ও চীনের মধ্যে সুষ্ঠু সহযোগিতায় দু’দেশের সম্পর্কের কৌশলগত সহযোগিতা প্রতিফলিত হয়েছে, যা এতদঞ্চল ও বিশ্বের জন্য ইতিবাচক শক্তি প্রদান করেছে।

বর্তমানে চীন-ইন্দোনেশিয়া অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটির গঠন দ্রুত এগিয়ে চলছে। দু’দেশ তাদের নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্য বাস্তবায়ন করে অব্যাহতভাবে দু’দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সামুদ্রিক সহযোগিতার কাঠামো গভীর করছে। যৌথভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রতিষ্ঠা জোরদার করেছে।

ইন্দোনেশিয়ায় কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট

চীন ইন্দোনেশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২১ সালে দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারিতে দু’দেশ পরস্পরকে সাহায্য করে আসছে। দু’দেশের নেতাদের মধ্যে বৈঠক ও আদান-প্রদান মহামারি প্রতিরোধ ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য শক্তিশালী চালিকাশক্তি যোগাচ্ছে। চীন সর্বপ্রথম ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে মহামারি প্রতিরোধ ও করোনার ওষুধ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে এবং দেশটিকে সর্বোচ্চ পরিমাণে ভ্যাকসিন প্রদান করেছে।

বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার নানা স্থানে দেখা যাচ্ছে চীনের উপাদান। নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি, দোকানপাটে চীনা ব্র্যান্ডের মোবাইল এবং দৈনন্দিন জীবনে আলিপেই দেশটিতে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

রাজধানী জাকার্তা থেকে বিখ্যাত সিটি বান্দুং পর্যন্ত ১৪২ কিলোমিটার রেলপথ ইন্দোনেশিয়ার প্রথম হাই-স্পীড রেলপথে পরিণত হয়েছে। এটি দেশটির ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের প্রতীকী প্রকল্প। এ রেলপথ চালু হওয়ার পর স্থানীয় অধিবাসীদের জীবনের মান উন্নত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

শুধু জাকার্তা-বান্দুং রেলপথ নয়, চীনের পেইতৌ ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা ইন্দোনেশিয়ার ভূমি জরিপ এবং ম্যাপিং, মৎস্য, স্মার্ট সিটি উন্নয়নসহ নানা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। সবুজ উন্নয়ন, ডিজিটাল রূপান্তর ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণসহ নানা ক্ষেত্রে দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার সাফল্য দেখা দিয়েছে। এসব দু’দেশের উন্নয়নের বাস্তব সেতু বন্ধনে পরিণত হয়েছে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn