বাংলা

এ চেয়ারে সবচেয়ে সম্মানিত অতিথিকে বসানো হয়

CMGPublished: 2022-05-20 11:21:11
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর নমপেনের সুন্দর ও উষ্ণ আবহাওয়া ও নীল আকাশের ছায়ায় উজ্জ্বল রংয়ের চীন ও কম্বোডিয়ার জাতীয় পতাকা রাস্তাঘাটে টাঙ্গানো হয়েছে। হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে কম্বোডিয়া সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে স্বাগত জানান। নমপেনে পৌঁছানোর দিনই প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দেশটির আশি বছর বয়সী রানী নরোদম মনিনীথ শিহানৌককে দেখতে যান।

রাজা শিহানৌক জীবিত থাকার সময় যে চেয়ারে বসতেন, রানী প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে সে চেয়ারে বসান। তিনি বলেন, রাজা শিহানৌক মৃত্যুবরণের পর থেকে এ চেয়ারটিকে আগলে রেখেছে রাজ পরিবার। রাজা শিহানৌকের সবচেয়ে ছোট মেয়ে মুগ্ধ হয়ে বলেছেন,এবার রানী প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে সে চেয়ারে বসিয়ে দিয়েছেন। এভাবে সবচেয়ে সম্মানিত এবং কাছের অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়।

কম্বোডিয়ার রাজ পরিবার-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বলেন, সে চেয়ারে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে বসানোটা কম্বোডিয়ার সংস্কৃতিতে তাত্পর্যপূর্ণ। তাতে প্রতিফলিত হয়েছে, দুপক্ষ পরস্পরকে মনে রাখে এবং এ চেয়ারে বসা অতিথির দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে।

এ গভীর আবেগপূর্ণ ঘটনায় চীন-কম্বোডিয়া আন্তরিক ও সমৃদ্ধ মৈত্রী অনুভব করেছেন জনসাধারণ। রাজকুমারী আলেন স্মরণ করেন, চেয়ারে বসার সময় সি চিন পিং আবেগপূর্ণভাবে চীন-কম্বোডিয়া মৈত্রীর ইতিহাস স্মরণ করেছেন এবং কম্বোডিয়ার রাজ পরিবারের সঙ্গে চীনের গভীর মৈত্রী তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিহানৌক রাজা চীনের জনগণের দ্বারা সম্মানিত বন্ধু। তিনি চীন-কম্বোডিয়া মৈত্রীর প্রতীক। আমরা আশা করি, রানী ও বর্তমান রাজা নরোদম শিহামনি অব্যাহতভাবে চীনকে দ্বিতীয় জন্মস্থল হিসেবে গ্রহণ করবেন এবং চীন দেখতে আসবেন। চীন কম্বোডিয়ার সঙ্গে দুদেশের পূর্বপুরুষদের সৃষ্ট মৈত্রী ধারণ করে যাবে এবং চিরদিন পরস্পরের লৌহের মতো শক্ত বন্ধু হবে।

রানী মাথা নেড়ে হাসি মুখে বলেন, কম্বোডিয়া ও চীনের সম্পর্ক বড় ও ছোট দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার প্রতীক। দুদেশের মৈত্রী কম্বোডিয়ার নানা মহলে সুপরিচিত এবং এটাকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। কম্বোডিয়া চীনের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করবে এবং দুদেশের জনগণের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মৈত্রী সম্প্রসারণ করতে ইচ্ছুক।

এ দিন সন্ধ্যায় রাজা শিহামনি দূর থেকে আসা সম্মানিত প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং'র জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। রাজ পরিবারের সকল সদস্য এবং মন্ত্রীসভার সকল সদস্য তাতে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সময় ‘চীনকে স্মরণ’ শীর্ষক সুর বাজতে ছিল। তখন প্রাণবন্ত হল ক্ষণিকের জন্য শান্ত হয়েছে। ‘আমার..প্রিয় চীন, আমার মন পরিবর্তিত হয়নি। চিরদিন তোমাকে মিস করি…’। সাবেক রাজা শিহানৌকের নিজের হাতে সুর করা এ গান উপস্থিত সকলের মন জয় করেছে।

অতীতের কথা স্মরণ করে দেখা যায়, ১৯৫৮ সালে চীন ও কম্বোডিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাবেক রাজা শিহানৌক চীনের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে গভীর ও ঐতিহ্যবাহী মৈত্রী স্থাপন করেছেন। এ পর্যন্ত দুদেশের শীর্ষ নেতাদের আশাআকাঙ্খায় কম্বোডিয়ার রাজপরিবার চীনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনের মতো দেখাশোনা এবং যাওয়া আসা করেন, যা দুদেশের সম্পর্কে নতুন প্রাণশক্তি যোগায়।

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং নিজের হাতে রানীকে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মৈত্রী পদক দিয়েছেন, যা অন্তরঙ্গ চীন-কম্বোডিয়া মৈত্রীর প্রতীক। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘রাষ্ট্র প্রশাসন’ শীর্ষক বইয়ে গভীর ও সুদূরপ্রসারী চেতনা এবং আবেগপূর্ণ সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে কম্বোডিয়ার জনগণের মন জয় করেছেন।

অনেক স্মরণ সময়ের গতিতে সবার মনে খুব ছাপ ফেলে এবং উষ্ণ করে। যা অন্তরঙ্গ ও ঘনিষ্ঠ পরিবারের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ ছবি তৈরি করেছে।

উষ্ণতা, আনন্দ ও মুগ্ধতার মধ্য দিয়ে বর্ণনা করেছেন রাজকুমারি আল্যান। তিনি স্মরণ করে বলেন, ১৯৮২ সালে প্রথমবারের মতো তিনি চীন সফর করেন। তখন থেকে তিনি তার বাবামার সঙ্গে বেশকয়েকবার চীন সফরে গিয়েছেন। চীন আমাদের ভাইবোনের মতো আপ্যায়ন করেছে। প্রতিবারের চীন সফর বাড়ীতে ফেরার মতো অনুভূতি তৈরি করেছে।

সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা। আজকের অনুষ্ঠান কেমন লাগলো, যদি ভালো লেগে থাকে, এবং আপনার কোনো মতামত থাকে, তাহলে আমাদের চিঠি বা ইমেইল লিখতে ভুলবেন না। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn এবং wangdanhong@cri.com.cn। আপনারা আমাদের ফেসবুকেও কমেন্ট করতে পারেন। আপনাদের মতামত আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবাই ভালো থাকুন এবং সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে আবারও কথা হবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn