আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ১০৪
২৬ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ১৩টি নতুন জাতের গম উদ্ভাবন করেছেন চাং। চীনা প্রবাদ হলো, একটি বীজ দুনিয়া বদলে দিতে পারে।সত্যিই তাই। চাংয়ের উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল গমের জাতগুলো দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে ভূমিকা রেখে চলেছে।
হেইলংচিয়াং প্রদেশের তাছিং শহরে হেইলংচিয়াং বায়ি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে গ্র্যাজুয়েশন করেন চাং। তিনি তখনও ভাবেননিসারা জীবন কৃষি বিষয়ক গবেষণা করে কাটাবেন।
তিনি তার হোমটাউন সিয়াংইয়াংয়ে ফিরে ১৯৯৭ সালে একাডেমিতে যোগ দেন। চাকরিতে বেতন ছিল কম। চাং ভাবছিলেন কিছুদিন পরেঅন্য চাকরিতে চলে যাবেন। কিন্তু কৃষি গবেষণায় তার ভালোলাগা তৈরি হতে থাকে। তিনি যখন ভাবেন দেশের জন্য কাজ করছেন তখন তারউৎসাহ আরও বেড়ে যায়।
গম বোনা হয় অক্টোবরের শেষে। মে এবং জুন মাসে গমের ফসল ওঠে। এই সময়টাতে চাং অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। কারণ তিনি দেখতে চানতার উদ্ভাবিত বীজ থেকে কেমন ফলন হচ্ছে, তার গুণগত মান কেমন।
শুধু উচ্চ ফলনশীলই নয়, সেগুলো যেন প্রতিকূল আবহাওয়া সহ্য করতে পারে সেদিকেও নজর দেন তিনি।
কোভিড ১৯ মহামারির পর বিশ্ব পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আরও জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন চাং।
চাং এবং তার সহকর্মী গবেষকরা গ্রামে কৃষকদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন। তারা যেন সঠিক বীজটি বেছে নিতে পারে, সেগুলোরগুণাগুন বিষয়ে জানতে পারে সেজন্য সরাসরি কথা বলেন তাদের সঙ্গে। চাং তাওরোংকে ভালোবেসে উপাধি দেয়া হয়েছে ‘গমের জননী’ বামাদার অব হুইট।
এই নিবেদিত প্রাণ গবেষক এখনও কাজ করছেন উন্নতজাতের গমবীজ উদ্ভাবনের জন্য।
পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন যারা
বিশ্বের অধিকাংশ সমাজেই গৃহসহিংসতা বা পারিবারিক নির্যাতন একটি বড় সমস্যা। পারিবারিক নির্যাতনে সাধারণত নারী ও শিশরাভিকটিম হয়। এই সমস্যা সমাধানে পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশে গড়ে তোলা হয়েছে পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ সমিতি। সরকার ওসামাজিক শক্তিগুলো একহয়ে এখানে কাজ করছে। বিস্তারিত প্রতিবেদনে।
বিশ্বের বিভিন্ন সমাজে পারিবারিক নির্যাতনের সমস্যা রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত নারী ও শিশুরা ভিকটিম হয়ে থাকে।
চীনের চেচিয়াং প্রদেশের শাওসিং সিটিতে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে সমিতি গড়ে তোলা হয়েছে। এই সমিতি, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা, স্থানীয় নারী সংগঠন এবং পেশাজীবী কর্মীরা সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনাগুলোর সমাধান করছেন।
কিছুদিন আগে স্থানীয় একজন নারী অভিযোগ করেন যে তিনি তার স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পুলিশ এবং সমিতির সদস্যরা এইঅভিযোগের প্রেক্ষিতে কাজ শুরু করেন। তারা এই দম্পতির সঙ্গে কথা বলেন, সাইকোলজিকাল কাউন্সেলিং করেন, এর নেতিবাচকফলাফল তাদের বুঝাতে সক্ষম হন এবং শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে মিটমাট হয়েছে। ব্যক্তিটি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন, ক্ষমা চেয়েছেন। এইদম্পতি এখন ভালোভাবে সংসার করছেন।
শাওসিং সিটির সিনছাং কাউন্টির নারী ফেডারেশনের চেয়ারওম্যান লিইয়ু ছিওয়েই বলেন,
‘এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে ঘটনাটির সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে। ভিকটিম নারী আমাকে জানিয়েছেন যে তিনি এই সমাধানে খুশি হয়েছেন। তিনিডিভোর্স চাননি। চেয়েছিলেন তার স্বামীর ব্যবহারে পরিবর্তন। এখন তার স্বামী অনেক ভালো ব্যবহার করছেন। তিনি সমিতির কাছ থেকেনিজের পরিবারের মানুষদের মতো উষ্ণতা পেয়েছেন। আমার মনে হচ্ছে এ ধরনের কাজ ভালো ফলাফল বয়ে আনছে।’
লিইয়ু চিওয়েই একজন নারী নেত্রী হিসেবে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে ভালোভাবেই কাজ করছেন। এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগের ফলেসমাজে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং অনেক পরিবারেই শান্তি ফিরে এসেছে।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি অফিসও স্থাপন করা হয়েছে। এখানে পারিবারিক নির্যাতনের ভিকটিমদের সার্বিকভাবে ওয়ানস্টপ সেবাদেয়া হয়। আইনজীবী, পুলিশ, সাইকোলজিকাল কাউন্সিলররা সমন্বিতভাবে কাজ করেন।