বাংলা

আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৮৯

cmgPublished: 2022-09-01 19:34:31
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

১. নারীদের নিজস্ব উপার্জনটা খুব জরুরী: লিপিকা গুহঠাকুরতা, সংগীত শিল্পী

২. সাহস করে জীবন গড়লেন ইউননানের ইয়ান সং

৩. মিয়াও জাতির ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তুলছেন যে নারী

৪ চীনা দম্পতির হাত ধরে মার্শাল আর্ট শিখছে শিশুরা

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি ভালো আছেন। আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমরা সবসময় কথা বলি নারীর সাফল্য, সংকট, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে।

নারীদের নিজস্ব উপার্জনটা খুব জরুরী: লিপিকা গুহঠাকুরতা, সংগীত শিল্পী

বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন লিপিকা গুহঠাকুরতা। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ মাকে দেখতে এসেছিলেন ঢাকায়। বাংলাদেশের একজন নারী হিসেবে কিভাবে তিনি অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে নিজেকে সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেন আজ শুনবো সেই গল্প। আমাদের অনুষ্ঠানে তাকে স্বাগত জানাই।

সাক্ষাৎকার

লিপিকার জন্ম বাংলাদেশের বরগুনায়। বাবা নিত্য গোপাল সমাদ্দার একজন সংগীতশিল্পী। মাও ভালো গান গাইতেন। লিপিকার বড়ভাইও একজন সংগীত শিল্পী। সবমিলিয়ে একটি সংগীতপ্রেমী পরিবারে বেড়ে ওঠেন লিপিকা। বাবার কাছেই প্রথম সংগীতে হাতেখড়ি হয়। শৈশবে ঘটনাচক্রে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় কলকাতায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে। যদিও পরিবারের সদস্যরা থেকে যান বাংলাদেশেই। লিপিকা কলকাতায় বেড়ে ওঠেন। গানের প্রতি তার ছিল প্রবল ভালোবাসা।

এই ভালোবাসা থেকেই চর্চা চালিয়ে যান। বিয়ের পর তার পদবী পাল্টে লিপিকা গুহঠাকুরতা নাম হয়। তবে পাল্টায় না গানের প্রতি আকর্ষণ। শ্বশুরবাড়িতেও তিনি সংগীত চর্চা ছাড়েননি অনেক পারিবারিক দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও। একসময় জি বাংলা টিভি চ্যানেলে একটি রান্নার অনুষ্ঠানে সুযোগ পান। তারপর জি বাংলাতেই অডিশন দিয়ে শিল্পী হিসেবে সুযোগ পান গান গাওয়ার। এরপর থেকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তিনি সংগীত পরিবেশন করা শুরু করেন। তিনি সংগীতগুরুদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে গান শেখাও শুরু করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তালিকাভুক্ত ফোকশিল্পীও তিনি। লিপিকা নজরুল সংগীত এবং লোকগানেই বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। কলকাতায় প্রতিযোগিতা অনেক। সেখানে প্রতিষ্ঠা পেতে তাকে প্রচুর চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয়েছে। গান শিখতে হয়েছে পরিশ্রম করে।

লিপিকা সংগীত চর্চার পাশাপাশি চাকরিও করছেন একটি প্রতিষ্ঠানে। তিনি মনে করেন প্রতিটি নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়া প্রয়োজন। তার বাবা, ভাই, স্বামী বা পুত্রের যদি অনেক সম্পদও থাকে তবু নারীদের নিজস্ব উপার্জন প্রয়োজন। সেটা চাকরি হোক বা নিজস্ব ব্যবসা। কারণ নিজস্ব উপার্জন নারীকে দেয় আত্মবিশ্বাস এবং এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।

বাংলাদেশ তার জন্মভূমি। এখানে তার মাকে দেখতে তিনি বারে বারে ফিরে আসেন। জন্মভূমিকে তার মনে হয় যেন আরেক মা। মাকে জড়িয়ে ধরার মতো আনন্দ পান জন্মভূমির কাছে ফিরে এসে। যদিও কাজের সূত্রে তাকে কলকাতায় থাকতে হয় সেখানে তার সংসারও, তবু বাংলাদেশের প্রতি রয়েছে অন্যরকম এক ভালোবাসা।

সাহস করে জীবন গড়লেন ইউননানের ইয়ান সং

দক্ষিণ চীনের ইউননান প্রদেশ। এই প্রদেশটি ক্রমেই বাণিজ্যিকভাবে সফল একটি প্রদেশ হয়ে উঠছে।এই প্রদেশের একজন উদ্যোগী নারী ইয়ান সং। কিভাবে তিনি হয়ে উঠলেন সফল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা, চলুন শুনি সেই গল্প।

ইয়ান সং এর বয়স এখন ৫৫ বছর। তিনি হলেন সেই প্রথম যুগের উদ্যোক্তা যারা ইউননান থেকে থাইল্যান্ডে আপেল সরবরাহের কাজ শুরু করেন। ইউননান প্রদেশ বনজ সম্পদ, ফল, ফুল ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত। ইউননানের চাওথোং শহরের বাসিন্দা ইয়ান সং। তিনি চিন্তা করেন এখানকার বিখ্যাত সুস্বাদু আপেল বিদেশে রপ্তানি করবেন। সেসময় সাম্পান নামের ছোট নৌযানে করে মেকং নদী দিয়ে আপেল নিয়ে যেতে হতো। অবশ্যই কাজটি ছিল বেশ কষ্টের ও ঝুঁকির। মনে করা হতো পুরুষরাই এমন ঝুঁকি নিতে পারেন। কারণ নদীতে কষ্টকর যাত্রা এবং বেশ কয়েকদিন নদীপথেই থাকতে হতো।

ইয়ান জানতে পারেন যে, থাইল্যান্ডে আপেল খুব ভালো হয় না এবং চীন থেকে আপেল সেখানে নিয়ে যেতে পারলে অনেক লাভ হবে। ফিরতি পথে থাইল্যান্ডের ফল এনে কুনমিং শহরে বিক্রি করা যাবে।

ইয়ানের ডিভোর্স হয়েছিল। চার বছর বয়সী শিশুকন্যার দায়িত্বও ছিল তার।

বৃদ্ধবাবামা এবং নিজের শিশুসন্তানের দায়িত্ব বহন করতে ইয়ানকে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। তিনি সাহস করে নিজের বাড়ি বন্ধক দিয়ে ১ লাখ ইউয়ান পুঁজি জোগার করেন। ১৯৯৭ সালে প্রথম আপেলের চালান নিয়ে সাম্পানেই থাইল্যান্ড যান। তিনি মনে করেন, একজন পুরুষ যে কাজ পারে সেটি নারীও পারবে। ঝুঁকিটি তিনি নিয়েছিলেন সাহসের সঙ্গে।

বর্তমানে ইউননানের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় কৃষি পণ্য সরবরাহ করা যায় সহজেই।

এরপর তিনি নিজের কৃষি কোম্পানি স্থাপন করেন। রসুন, মরিচ ও আদা বিদেশে রপ্তানি শুরু করেন। বর্তমানে ইয়ান সং একজন সফল উদ্যোগী নারী। তিনি তার সাহস ও পরিশ্রমের পুরস্কার উপভোগ করছেন। তার কোম্পানিতে এখন আরও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

মিয়াও জাতির ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তুলছেন যে নারী

চীনের ৫৬ জাতির অন্যতম হলো মিয়াও জাতি। এই জাতির রয়েছে সমৃদ্ধ লোকজ ঐতিহ্য। এই লোকজ ঐতিহ্যকে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলেছেন এক নারী। এই নারী কিভাবে প্রতিষ্ঠা করলেন নিজের ফ্যাশন ব্র্যান্ড শুনবো সেই গল্প।

চীনের একটি সংখ্যালঘু জাতি হলো মিয়াও। এই জাতির কারুশিল্পের ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বিশেষ করে তাদের পোশাক ও অলংকার অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ও কারুকার্যময়। মিয়াও জাতির বাটিক নকশার কাপড় বেশ বিখ্যাত। এই খ্যাতিকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন এই জাতির এক নারী চাং চুয়ানচুয়ান। কুইচোও প্রদেশের আনশুন নামে এক ছোট্ট গ্রামীণ শহরে বাস করেন তিনি।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn