বাংলা

আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৮০

cmgPublished: 2022-06-30 20:11:49
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

কী আছে এবারের পর্বে

১. সাক্ষাৎকার: বন্যা দুর্গত এলাকায় নারীর অনেক সমস্যা

২. উইগুর নৃত্যশিল্পী গুলমিরা

৩. গান: উইগুর লোকজ সংগীত

৪. আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের বৈশ্বিক সংগঠনের প্রথম নারী সভাপতি

৫. পদ্মাসেতুতে প্রথম নারী বাইকার

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি ভালো আছেন। বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে দেখা দিয়েছে বন্যা। বিশেষ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার কারণে অসহায় অবস্থায় পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। বন্যার ত্রাণ কার্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এগিয়ে এসেছেন অনেক স্বেচ্ছাসেবী। এদের মধ্যে বেশিরভাগই তরুণপ্রজন্মের । আজ আমরা কথা বলবো তরুণ প্রজন্মের এমনি একজন স্বেচ্ছাসেবী নারীর সঙ্গে। মনীষা ওয়াহিদ মেট্রোপলিটান ইউনিভারসিটিতে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন। তিনি সিলেট জেলা ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক। তার সঙ্গে আমরা কথা বলবো বন্যা দুর্গত এলাকার ত্রাণকার্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে। আমাদের অনুষ্ঠানে তাকে স্বাগত জানাই।

সাক্ষাৎকার

বন্যা দুর্গত এলাকায় অনেক সমস্যা

মনীষা ওয়াহিদ জানান বর্তমানে বন্যার পানি কিছু কিছু এলাকা থেকে নেমে গেলেও নতুনভাবে কিছু অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বন্যার পানি যেসব অঞ্চল থেকে নেমে গেছে সেখানেও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা এখনও সম্ভব হয়নি। বন্যায় নারী ও শিশুর অবস্থা হয়ে পড়ে অনেক বেশি নাজুক। মনীষা জানালেন বন্যার মধ্যে গর্ভবতী নারী, শিশু, টিন এজার মেয়েদের অসহায় অবস্থার কথা। বিশেষ সমস্যা হয় টয়লেটের অভাবে। নারীদের পিরিয়ডের সময় বন্যার মধ্যে তারা ভীষণভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন বলেও জানান মনীষা। চা বাগানে নারীদের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক বলে জানালেন তিনি।

মনীষা ওয়াহিদ নিজে হাতে ত্রাণ বিতরণ করেছেন তার দলের সদস্যদের নিয়ে। কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য মনীষা মনে করেন প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ অত্যন্ত অপ্রতুল। ত্রাণকার্যে নারীর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে মনীষা বলেন, নারীরা সরাসরি ত্রাণকার্যে খুব কমই রয়েছেন। কারণ বেশিরভাগ ত্রাণকার্য পরিচালনা করছেন স্থানীয় তরুণদের কিছু সংগঠন বা গ্রুপ। এসব গ্রুপে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ কম। মনীষা যখন নিজে তার কমরেডদের সঙ্গে নিয়ে কোমর পানিতে নেমেছেন তখন অনেকের বিরূপ দৃষ্টি লক্ষ্য করেছেন। অনেকে ভেবেছেন বা বলেছেন যে মেয়ে হয়ে এমন পানিতে নামার দরকার কি? শুকনো জায়গায় বসে থাকলেই তো পারে। কিন্তু মনীষা বলেন, ‘আমার সঙ্গীসাথীদের পানিতে নামিয়ে দিয়ে আমি নিজে তো বসে থাকতে পারি না। সেটা কিভাবে সম্ভব?’

তবে ইতিবাচক সাড়াও তিনি অনেক পেয়েছেন। বিশেষ করে বন্যা দুর্গত নারীরা সহজে তার কাছে নিজেদের অসুবিধার কথা বলতে পারছে। তারা মনীষাকে দেখে অনেক আশ্বস্ত বোধ করছে। সিলেটের চা বাগান এলাকায় দুর্গত নারীদের জন্য কাজ করছেন মনীষা।

চীনের উইগুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। উইগুর জাতির নৃত্যগীতের ঐতিহ্যের খ্যাতি রয়েছে চীনজুড়ে। উইগুর জাতির মেয়ে গুলমিরা ম্যামাত একজন প্রতিভাবান নৃত্যশিল্পী। বিস্তারিত প্রতিবেদনে ।

উইগুর নৃত্যশিল্পী গুলমিরা

নিজের শহর সিনচিয়াংয়ের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যকে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করাই গুলমিরা ম্যামাতের উদ্দেশ্য। উত্তর-পশ্চিম চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কারামায়ে শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গুলমিরার ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। দুই সন্তানের মা গুলমিরা। তাকে প্রতিনিয়ত নিজের ক্যারিয়ার এবং পারিবারিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করতে হয়।

উইগুর জাতির নারী ম্যামাত চীনের মিনজু বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফারও ৩৬ বছর বয়সী এই নারী।

২০০৬ সালে সিনচিয়াং আর্টস ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং সেখানেই কোরিওগ্রাফি শেখানো শুরু করেন। কিন্তু তার দক্ষতাকে আরো নিখুঁত করার চেষ্টা এবং একটি বড় মঞ্চে নাচের স্বপ্ন কখনও থামেনি।

বছর তিনেকের মধ্যে , তিনি উইগুর, উজবেক, চাইনিজ এবং আধুনিক নৃত্যে তার দুর্দান্ত দক্ষতার মাধ্যমে দেশব্যাপী দর্শকদের মুগ্ধ করেন। "সো ইউ থিঙ্ক ইউ ক্যান ড্যান্স" নামে চীনা গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি প্রতিযোগিতার তিনি চ্যাম্পিয়নও হন।

গেল বছর, সিনচিয়াংয়ে ইস্টার্ন হান রাজবংশের সময়কার একটি ব্রোকেড আর্মব্যান্ড থেকে অনুপ্রাণিত নৃত্যনাট্য "ফাইভ স্টার রাইজ ইন দ্য ইস্ট", বেইজিংয়ে মঞ্চস্থ হয়। বেইজিং এবং সিনচিয়াংয়ের নৃত্যশিল্পীদের যৌথ প্রযোজনায় এই নৃত্যনাট্যে প্রধান ভূমিকা ছিল গুলমিরার। গুলমিরার কার্যক্রম চীনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে জীবন্ত করে তুলছে।

গান

উইগুর জাতির লোকজ সংগীত অত্যন্ত শ্রুতমধুর। এখন আমরা শুনবো উইগুর জাতির একটি লোকজ গান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের বৈশ্বিক সংগঠনে প্রথম নারী সভাপতি লিসা

সুপ্রিয় শ্রোতা, বিশ্বে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের বৈশ্বিক সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যসোসিয়েশন ফিকার প্রধান হয়েছেন একজন নারী। বিস্তারিত শুনবো প্রতিবেদনে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের বৈশ্বিক সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ফিকা)। এই সংগঠনে প্রথম নারী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক লিসা স্থালেকার।

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের নিয়নে হওয়া ফিকার কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় লিসাকে নতুন সভাপতি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই পদে আগে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যারি রিচার্ডস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জিমি অ্যাডামস, ইংল্যান্ডের বিক্রম সোলাঙ্কিরা।

নতুন সভাপতি ৪২ বছর বয়সী লিসা অস্ট্রেলিয়া নারী দলের হয়ে ১৮৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ২০১০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মাত্র ১০৬ রান ডিফেন্ড করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ক্রিকেটারের খেতাব বেলিন্ডা ক্লার্ক পুরস্কার জিতেছেন তিনি।এবার নতুন দায়িত্ব পেয়ে লিসা বলেছেন, ‘ফিকার নতুন সভাপতি হয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত ও রোমাঞ্চিত। আমরা নতুন একটি ধাপে প্রবেশ করছি। যেখানে পুরুষ ও নারী ক্রিকেটে আগের চেয়ে অনেক বেশি খেলা থাকছে। এখন অনেক বেশি দেশ ক্রিকেটে নাম লিখিয়েছে।’বিশ্বের ক্রীড়াজগতে নারীর ক্ষমতায়নের আরেকটি অধ্যায় যুক্ত হলো ফিকার সভাপতি পদে লিসার আগমনের ফলে।

পদ্মা সেতুতে প্রথম নারী বাইকার

বাংলাদেশের গৌরব পদ্মা সেতুতে যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেয়ার পর এখানে অনেক উৎসুক মানুষের ভিড় জমেছে। মোটরবাইক চালিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছেন অনেকেই। এদের মধ্যে রয়েছেন নারীরাও। পদ্মা সেতুতে মোটর বাইক চালিয়ে প্রবেশ করেছেন রুবায়াত রুবা নামে প্রথম একজন নারী বাইকার। পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পরপরই রোববার সকালে তিনি মোটর বাইক চালিয়ে এই সেতুতে ওঠেন। ভোর সকালে ঢাকার মিরপুরের শেওড়া পাড়া থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তিনি পদ্মা সেতুতে আসেন।

রুবায়াত রুবার মতো বাংলাদেশের অনেক নারী আজ সাহসের সঙ্গে মোটর বাইক চালাচ্ছেন সারা দেশে যা বছর দশেক আগেও এদেশে অকল্পনীয় ছিল। বাংলাদেশের নারীরা জীবনের সব ক্ষেত্রে এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছেন।

আজ আর কথা নয়, আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবংআমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.

আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও অডিও সম্পাদনা : শান্তা মারিয়া

উইগুর নৃত্যশিল্পী গুলমিরা প্রতিবেদন রওজায়ে জাবিদা ঐশী

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের বৈশ্বিক সংগঠনের প্রথম নারী সভাপতি ও পদ্মাসেতুতে প্রথম নারী বাইকার

, প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn